সোয়েব মাহমুদ— এর তিনটি কবিতা
প্রেমে অপ্রেমে
তোমার জ্বলের উৎস কোথায় বল
বাঁধবো সেথায় অনল প্রেমের বেড়ী।
লোনাজলে টাল মাটাল ঐ চোখ
বিনা দূতেই বক্ষে হানে ছুড়ি।
কোথা তোমার কন্যা বসত বাড়ি
কোন মহাজন তোমার সু পিতা
হেসো নাক কন্যা আঁচল টানি
দাওগো জবাব মন দারাজিয়া
কাজল কালো মৃগ টানা চোখ
সমুন্নত উচ্চ নাসিকা
হাসির ভাড়ে গালে পরে টোল
টোল কে বলে? দেবীর রাজ টিকা
নির্লজ্জ নোনা জল
দু’ফোঁটা নির্লজ্জ নোনা জল অজান্তে গড়িয়ে পড়েছে থির
ব্যর্থ হয়েছি তারে বাঁধা প্রদানে ষোল আনাই।
এ বিসর্জন কোনও অর্থ বহনে আজও কী সক্ষম!
একটি অপ্রিয় প্রশ্ন চিহ্ন উঁকি মারে হৃদয়ের চিলে কোঠায় বারবার
অথচ!
কোনো জবাব নিয়ে আজও দরজায় কড়াঘাত করেনি ডাক পিয়ন।
তবুও নিরাশ হতে অপ্রস্তুত আমার জলশুন্য শুষ্ক হৃদয়
এখানে মিষ্টি পানির বৃষ্টি হয়েছিল সেই প্রেমের ভরা মৌসুমে।
আজকাল কেবলই লোনা জলের ভারী বিসর্জন হয়।
বৃষ্টির ছাটে পলেস্তার পড়া দেয়ালের মতই-
হৃদয়ের চারপাশে প্রাচীন চামড়ার খসখেস ভাব।
চৈত্র্যের প্রখর রোদের তীব্র দহনের উল্লাস ধ্বনিতে মুখরিত চারপাশ
তবুও হতভাগা মনের স্বপ্ন দেখানোয় অবসাদ মেলেনি বিলক্ষণ
রোজই মায়াবী স্বপ্নের পসরা মেলে আগের মত
আমিও বিরোধিতার পরাকাষ্ঠা প্রদর্শন করি না প্রচণ্ডতায়
কিইবা এসে যাই যার কোনো আশা নেই মরীচিকায় যদি তার কিছু সুখ মেলে
তবে সেও কিছু সুখের পরশ পেয়ে যাক
যার সবই হয়েছে অগ্নির সংস্পর্শে খাক।
পালা বদল
আরো একটি সূর্যের নিশ্চুপ নিভে যাওয়া
আরো একটি দিনের বেসুরো কর্তন
হাজারো স্বপ্নের কিছু চালিকাশক্তি ক্রমে ক্রমে
ক্ষয়ে যাওয়া।
নতুন একটি রাতের আবির্ভাব
হাজার তারার নিয়ন আলোর ঝলমলে আকাশ
ঝিঁঝিঁ পোকার নিস্তব্ধকর বিরামহীন আওয়াজ
একটি নতুন ভোরের পূর্বাভাস
তবুও অামাকে ক্লান্ত হতে হয়।
মৃত একটি দিনের পূর্ণাঙ্গ দাফন শেষে
আরো একটি দিবসের শেষকৃত্যের আয়োজন
বিয়োগের খাতায় বিয়োগ হলো আরো একটি দিন।
সামান্য কিছু আয়ু যৎসামান্য অথবা সিংহভাগ
বিসর্জনের এ এক অদ্ভুতুরে কানুন
মানো বা নামানো বিচ্ছেদ অনিবার্য
কেবলই সময়ের সামান্য হেরফের
কিংবা ন্যূনতম ব্যাবধান।