সৌদি আরবে শেখ সাফার আল হাওয়ালি  গ্রেফতার

সৌদি আরবে শেখ সাফার আল হাওয়ালি গ্রেফতার

পাথেয় ডেস্ক : অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকার কথা উল্লেখ করে তার সমালোচনা করায় দেশটির একজন প্রভাবশালী ধর্মীয় নেতাকে বৃহস্পতিবার গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি তিন হাজার পৃষ্ঠার একটি বইতে বিভিন্ন প্রসঙ্গে সৌদি রাজপরিবারের সমালোচনা করেছেন। মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডিল ইস্ট মনিটর জানিয়েছে, শেখ সাফার আল হাওয়ালি নামের ওই প্রভাবশালী ধর্মীয় নেতার সঙ্গে গ্রেফতার করা হয়েছে তার তিন ছেলে ও ভাইকে।  তিনি কয়েক দশক আগে থেকেই মার্কিন সেনা উপস্থিতির বিষয়ে সৌদি রাজপরিবারের সমালোচনায় আন্দোলনরত গোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পৃক্ত।

সৌদি আরবের স্থানীয় সংবাদপত্রের বরাতে মিডিল ইস্ট মনিটর জানিয়েছে, আল হাওয়ালির ধর্মীয় বিষয়ে ডক্টরেট ডিগ্রি আছে। ১৯৮০ ও ১৯৯০ এর দশকে সংগঠিত ‘সাহওয়া আন্দোলনের’ তিনি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। আল হাওয়ালি মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের উপস্থিতির ঘোরতর বিরোধীদের একজন।  সৌদি আরবের সরকার নব্বই দশকের মাঝামাঝিতে তাকে কারাদণ্ড দিয়েছিল। সে সময় আল হাওয়ালি ও তার অনুসারীরা সৌদি আরবে মার্কিন সেনা উপস্থিতির বিরুদ্ধে আন্দোলনে জড়িত ছিলেন। সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, সাহওয়া আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা মুসলিম ব্রাদারহুডের ঘনিষ্ঠ।
টুইটারে ‘মোয়াতকালি আল রে’ নামের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে জানানো হয়েছে, ৬৮ বছর বয়সী শেখ আল হাওয়ালির লিখিত ‘মুসলমান ও পশ্চিমা সভ্যতা’ নামের একটি বই কিছুদিন আগে প্রকাশিত হয়েছে। বইতে তিনি সৌদি আরবের রাজপরিবারের সমালোচনা করেছেন। তার সমালোচনার শিকার হয়েছেন আবুধাবির যুবরাজ মোহাম্মদ বিন জায়েদও। অভিযুক্ত আল হাওয়ালি তার তিন হাজার পৃষ্ঠার বইতে লিখেছেন, সৌদি রাজপরিবার ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রকল্পে অর্থ খরচ করছে। ইসরায়েলের সঙ্গে সৌদি আরবের যুবাজ মুহাম্মদ বিন সালমানের ঘনিষ্ঠতাকে তিনি ‘বিশ্বাসঘাতকতা’ আখ্যা দিয়েছেন। তিনি ‘আবুধাবির যুবরাজ মুহাম্মদ বিন জায়েদের যে ভূমিকা’ সেখান থেকে মোহাম্মদ বিন সালমানকে সরে আসার পরামর্শ দিয়েছেন। কাতারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়াতেও তিনি সৌদি আরবের সমালোচনা করেছেন। মিসরের সিসি সরকারের সঙ্গে সৌদি আরবের বোঝাপড়াকেও ভালো চোখে দেখেননি তিনি।

টুইটার অ্যাকাউন্টে প্রকাশিত তথ্যের বরাতে মিডিল ইস্ট মনিটর জানিয়েছ, পুলিশ তাকে গ্রেফতারের সময় অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে গিয়েছিল। ২০০৫ সালে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের শিকার হওয়ার পর থেকে তিনি অসুস্থ। সেখান থেকে তার ছেলেদেরও গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ অভিযুক্তদের মোবাইলফোন জব্দ করে। তার ভাই শেইখ সাদাল্লাহকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। সাদাল্লাহকে গ্রেফতারে যাওয়া সরকারি বাহিনীর সদস্যদের মুখ ঢাকা ছিল।  গ্রেফতারকৃত তার তিন ছেলেকে জেদ্দাহতে পাঠানো হয়েছে। আর তাকে পাঠানো হয়েছে রিয়াদে। তার ভাইকে কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে কিছু জানা যায়নি।
গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে সৌদি আরব সাহওয়া আন্দোলনে জড়িতদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে। এই অভিযানে গ্রেফতার করা হয়েছে আন্দোলনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের অনেককে। এদের মধ্যে রয়েছেন সালমান আল আউদা ও আয়েদ আল কারনি।

 

 

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *