সৌন্দর্যে তুলনারহিত আমার নবিজি

সৌন্দর্যে তুলনারহিত আমার নবিজি

  • আদিল মাহমুদ

নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সত্তাগত ভাবে মহামহিয়ান—সর্বোচ্চ মর্যাদাবান। নিখুঁত পরিপূর্ণ এক সত্তা, গুণে মহাত্ম্যা। এ জন্য হয়তো পূর্ণিমা রাতের স্নিগ্ধ উজ্জ্বল চাঁদের মতো তাঁর মুখাবয়ব ঝলমল করতো। তিনি আরবি মধ্যমাকৃতির পুরুষদের থেকে একটু লম্বা এবং অতিরিক্ত লম্বা পুরুষের থেকে খাটো ছিলেন। মাথা ছিল যুৎসই বড়, চুল একটু কোঁকড়ানো—যেনো ঢেউ খেলানো। চুল অনায়সে সিঁথি কেটে গেলে সিঁথি করা থাকতো, অন্যথায় স্বাভাবিক, চেষ্টা করে সিঁথি কাটতেন না কখনো। যখন চুল বড় হতো, তখন যেনো কানের লতি অতিক্রম করতো।

নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম গায়ের রঙ ছিল ঝলঝলে উজ্জ্বল, লাবণ্যময়—যেনো দুধে আলতা, কিংবা ডালিম ফুলের চেয়েও রাঙা। কপাল চকচকে প্রশস্ত। ভ্রু কিঞ্চিৎ ঘুরানো, চিকন ও ঘন। সুষমামণ্ডিত। দুই ভ্রু আলাদা আলাদা—মাঝখানে একটি রগ, যা রাগের সময় স্পষ্ট দেখা যেতো, যেনো ওই রগ তাঁর রাগের মহত্ব বুঝানোর জন্য ভেসে উঠতো। নাক তীক্ষ্ম ও খাড়া, তাতে যেনো নুরের জ্যোতি চকমক করতো। হুট করে তাকালে তাঁর নাক কিছুটা বড় মনে হয়, কিন্তু ভালোভাবে তাকালে মনে হবে মানানসই বড়—যেনো এমন বড়ই পুরুষের নাকের সৌন্দর্য, তুলনারহিত।

নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দাঁড়ি ছিল ঘন ও ভরপুর। মুখ তুলতুলে প্রশস্ত। দাঁত চিকন ঝলমলে রূপার মতো। বুক থেকে নাভি পর্যন্ত পশমের চিকন একটি রেখা, তাছাড়া আর কোনো পশম ছিল না—তবে দুই বাহু, দুই কাঁধ ও বুকের উপরিভাগে কিছু পশম ছিল। গর্দান সুঠাম, চাঁদের মতো উজ্জ্বল। শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ মাংসল, সুদৃঢ় ও সমঞ্জস পূর্ণ। পেট ও বুক সমান। দুই কাঁধের মাঝখানে কিছুটা দূরত্ব থাকায় বুক ছিল যুৎসই প্রশস্ত। তাঁর অনাবৃত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলো সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ—যেনো রূপাচূর্ণের মতো চকচকে সবসময়।

নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দুই হাতের বাহু ও তালু ছিল প্রশস্ত। হাত-পায়ের আঙুলগুলো মাংসল ও লম্বাটে। পায়ের তালুর মাঝখান কিছুটা গভীর, পায়ের পাতা মসৃণ। এ জন্য পানি ঢালার সঙ্গে সঙ্গে তা অনায়াসে গড়িয়ে পড়তো। যখন হাঁটতেন, তখন পা উঠিয়ে উঠিয়ে সামনের দিকে ঝুঁকে স্বাচ্ছন্দে হাঁটতেন। যখন একটু দ্রুত হাঁটতেন, তখন মনে হতো—যেনো কোনো উঁচু জায়গা থেকে নিচে নামছেন। তিনি সবসময় নিচের দিকে তাকিয়ে হাঁটতেন, তাঁর দৃষ্টি আকাশের থেকে জমিনের দিকে বেশি থাকতো। তবে কারো দিকে তাকালে পুরো ঘাড় ঘুরিয়ে স্বাভাবিক দৃষ্টিতে তাকাতেন। তিনি সাহাবিদের সামনে রেখে নিজে পিছনে হাঁটতেন। কারো সাথে দেখা হলে তিনিই আগে সালাম দিতেন—যেনো কেউ তাঁর আগে সালাম দিতে জানে না।

  • শামায়েলে তিরমিজি এর হাদিস অবলম্বনে লিখিত

 

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *