পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : স্কুল-কলেজ খুলে দিয়ে বাচ্চাদের মৃত্যুর ঝুঁকিতে ফেলে দিতে পারি না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, এখানে স্কুল খোলার কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু আমেরিকাসহ বিভিন্ন স্থানে স্কুল খুলে তারা আবার বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ‘মুজিববর্ষ’ উপলক্ষে জাতীয় সংসদের বিশেষ অধিবেশন ও সংসদের দশম অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের দেশেও স্কুল খোলার প্রস্তুতি নেয়া হয়েছিল। কিন্তু করোনার সেকেন্ড ওয়েভ শুরু হওয়ায় ঝুঁকি বেড়ে গেছে। এ অবস্থায় স্কুল খুলে বাচ্চাদের ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিতে পারি না। করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি থেকে রক্ষার জন্য প্রধানমন্ত্রী সবাইকে মাস্ক পরার আহ্বান জানান।
এসময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন। এর আগে বিরোধীদলের উপনেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার যৌক্তিকতা নেই মন্তব্য করে তা খুলে দেয়ার প্রস্তাব করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় বাচ্চাদের খুব কষ্ট হচ্ছে এতে কোনো সন্দেহ নাই। কিন্তু তারপরেও তাদের তো মৃত্যুর ঝুঁকিতে ঠেলে দিতে পারি না। করোনাভাইরাস এটা একটা সংক্রামক ব্যধি। এখনো এটার চিকিৎসা বের হয়নি, তারপরও আমরা চিকিৎসা দিচ্ছি মানুষ ভাল হচ্ছে। সেখানে এই ঝুঁকিটা আমরা ছেলে মেয়েদের জন্য কেন নেব?
তিনি বলেন, আমেরিকায় কিন্তু স্কুল খুলে দিয়েছিল একটা পর্যায়ে তারা বন্ধ করতে বাধ্য হয়। ইউরোপে এরকম ঘটনা ঘটে, ইংল্যান্ডেও ঘটে। তার কারণ সেখানে ব্যাপক হারে বেড়ে যায়। আমরাও একটা প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। যখনই করোনার প্রকোপটা কমে গেল আমি শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আমরা আলোচনা করেছিলাম। কিন্তু তারপর দেখলাম আবার ইউরোপে করোনার প্রকোপ দেখা দিল। এই যে ছেলে পেলেগুলো স্কুলে যাবে বাচ্চারা।
তিনি বলেন, শিক্ষকরা বা বাচ্চাদের অভিভাবক সবাইকে যেতে হবে। এটা একটা সংক্রামক ব্যাধি, এখনও এটার চিকিৎসা বের হয়নি। তারপরও আমরা চিকিৎসা দিচ্ছি মানুষ ভাল হচ্ছে। সেখানে এই ঝুঁকিটা আমরা ছেলেমেয়েদের জন্য কেন নেব? হ্যাঁ এটা ঠিক স্কুল না যেতে পেরে বাচ্চাদেরও কষ্ট হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকাল তো সবাই সুখী পরিবার বানাতে যেয়ে হয়তো একটা বাচ্চা দুইটা ঘরে এককভাবে থাকে। আগে তো একান্নবর্তী পরিবার ছিল সবাই একসাথে থেকে হেসে খেলে চলত। এখন তো সেই সুযোগটা কম। যার জন্য বাচ্চাদের খুবই কষ্ট হয় এতে কোনো সন্দেহ নাই। তারপরও তাদের তো মৃত্যুর ঝুঁকিতে ঠেলে দিতে পারি না। সেটাও আমাদের মাথায় রাখতে হবে। কিন্তু আমাদের সেই চেষ্টাটা আছে।
তিনি বলেন, অটো প্রমশনের ব্যাপারে বলব। আমাদের আগে তো এই সেমিস্টার ব্যবস্থা ছিল না, আমি প্রথমবার সরকারে এসে সেমিস্টার সিস্টেম চালু করি। কাজেই সেখানে সারা বছর তারা যে পরীক্ষা দিয়েছে তারই ভিত্তিতে একটা রেজাল্ট দেয়া এটা কিন্তু ইংল্যান্ডেও দিয়েছে। এটা পৃথিবীর অনেক দেশেই দিয়েছে। এতে খুব বেশি একটা ক্ষতি হয় তা না। তারা তারপর তো স্কুল করবে, পড়বে, পরীক্ষা দেবে। যারা টিকে থাকবে থাকবে, না হলে আবার পরীক্ষা দেবে। সেই সুযোগটা তাদের আছে। কাজেই অটো প্রমোশনে খুব ক্ষতি হয়ে গেল এটা কিন্তু ঠিক না। ওই একদিন বসে লিখে পাস করলেই সেই পাস, পাস, আর সারা বছর যে পরীক্ষা দিয়ে যে রেজাল্ট সেই রেজাল্ট, রেজাল্ট না এটা তো হতে পারে না; বরং সেইভাবে যদি সারা বছরের রেজাল্ট এক সঙ্গে করে প্রমোশন দিয়ে দেওয়া যায় তাহলে সেটা তো আরো তাদের মেধার পরিচয়টা পাওয়া যায়। আরো ভালো রেজাল্ট পাওয়া যায় তাতে।