মাহতাব উদ্দীন নোমান : রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মুজিযা সমূহের মধ্যে অন্যতম হলো, তাঁর স্বশরীরে আল্লাহ তাআলার সাক্ষাত লাভ করা। এটা শুধুমাত্র আখেরী নবীর বিশেষ বৈশিষ্ট্য ছিল। অন্য কোন নবী-রাসূলকে আল্লাহ এই বৈশিষ্ট্য দান করেননি।
হিজরতের ১ বছর আগে কোন এক রাতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্বশরীরে জিবরীল আলাইহিস সালাম এর সাথে মক্কা থেকে বাইতুল মাকদিসে সফর করেন। সেখানে সব নবী-রাসূলগণকে নিয়ে নামায আদায় করেন। তিনি তখন সেখানে সবার ইমাম হয়েছিলেন। এর দ্বারা বাস্তবিক ভাবে ‘সাইয়িদুল আম্বিয়া’ বা নবীগণের সর্দার সাব্যস্ত হন। তারপর প্রথম আসমান, অতঃপর দ্বিতীয় আসমান এভাবে সপ্তম আসমান অতিক্রম করে সিদরাতুল মুনতাহায় পৌঁছে যান। প্রতি আসমানে বিভিন্ন নবীগনের সাথে দেখা হয়। অতঃপর আল্লাহর সাথে সরাসরি সাক্ষাত করেন এবং উম্মতের জন্য নামাজের মত অত্যন্ত গুরুত্ব পূর্ণ ইবাদত হাদিয়া নিয়ে আসেন। পাশাপাশি জান্নাত জাহান্নাম প্রদক্ষিণ করে আবার মক্কায় ফিরে আসেন। দীর্ঘ এই সফর এক রাতের মধ্যেই শেষ হয়।
এই স্বশরীরে ইসরা ও মেরাজের বর্ণনা আল্লাহ তাআলা সুরা বনী ইসরায়েলে (আয়াত নং ১) ও সুরা নাজমে (আয়াত নং ১৩-১৮) উল্লেখ করেছেন। সহীহ হাদীসেও এর বিস্তারিত বর্ণনা রয়েছে। (বুখারী, হাদিস নং- ৩২০৭ , মুসলিম হাদিস নং -১৬৪)। সুতরাং এর উপর বিশ্বাস রাখা ফরয ও ঈমানের অংশ।
এ রাতে বিশেষ কোন নামাজ বা আমল প্রমাণিত নেই
মেরাজের রাত নিঃসন্দেহে একটি বরকত পূর্ণ রাত। তবে এর নির্ধারিত কোন তারিখ বা মাস রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বা সাহাবায়ে কেরাম (রা.) থেকে বর্ণিত পাওয়া যায় না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বা সাহাবায়ে কেরাম (রা.) এই রাতকে উদ্দেশ্য করে বিশেষ কোন নামাজ বা অন্য কোনো আমল করেছেন বলে প্রমাণিত নেই। সুতরাং এই রাতকে উদ্দেশ্য করে বিশেষ কোন আমল করা দ্বীনের মধ্যে অতিরিক্ত বিষয়কে সাব্যস্ত করা। আর তা বিদআত ও প্রত্যাখ্যাত বিষয়। আমাদের সবাইকে এ থেকে বিরত থাকতে হবে।
আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে জান্নাতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে রেখে তাঁর দিদার নসীব করুন, আমীন।
লেখকঃ খতীব ও শিক্ষক