স্বস্তি ফিরছে নিত্যপণ্যের বাজারে

স্বস্তি ফিরছে নিত্যপণ্যের বাজারে

নিজস্ব প্রতিবেদক : রোজাকে কেন্দ্র করে নিত্যপণ্যের দাম কিছুটা বাড়লেও রোজার মাঝামাঝি এসে দাম কমতে শুরু করেছে। জনসাধারণের হাতের নাগালে আসতে শুরু করেছে পেঁয়াজ, রসুন, ছোলার দাম। তবে এই সপ্তাহে পেঁয়াজের দাম না কমলেও রসুন ও ছোলার দাম কেজিপ্রতি কমেছে ১০ টাকা করে। এ ছাড়া রোজার আগে উত্তাপ ছড়ানো বেগুন, কাঁচামরিচ, শসা, গাজরসহ সবজির দাম কিছুটা কমেছে। এ ছাড়া চাল, মাছ, মাংস, ডালসহ বেশিরভাগ নিত্যপণ্যের দামই ছিল স্থিতিশীল। কারওয়ান বাজার, মাহখালীসহ কাঁচাবাজারসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। ক্রেতারা বলেছেন, বাজার স্থিতিশীল থাকলে সাধারণ ক্রেতাদের মধ্যে স্বস্তি বিরাজ করে। কেন না আয় সীমিত। হঠাৎ করেই কোনো নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় নিদারুণ কষ্ট ভোগ করতে হয়। তাই বাজারের দিকে সরকারের সংশ্লিষ্টদের বিশেষ নজর থাকা উচিত।

বৃহস্পতিবার ঢাকার বাজারে দেশি পেঁয়াজ মানভেদে প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, যা গত দুই সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছিল ৫০ থেকে ৫৫ টাকায়। অন্যদিকে, আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ২৫ থেকে ৩০ টাকা, যা গত দুই সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকায়। রসুন (দেশি) মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ৮০-৯০ টাকা কেজি। আর বিদেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে ৯৫-১০০ টাকায়। যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ১০০-১২০ টাকা কেজি।

কারওয়ান বাজারে পেঁয়াজ বিক্রেতা মো. রানা মিয়া বলেন, ধীরে ধীরে কমে আসছে পেঁয়াজের দাম। দেশি পেঁয়াজ যেমন পাওয়া যাচ্ছে, তেমনি আমদানিও হচ্ছে প্রচুর। বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক থাকায় দামটা কমে এসেছে। তিনি বলেন, পাইকারি বাজারে দাম কম তাই খুচরাতেও কম দামে বিক্রি করছি।

একই বাজারে নিত্যপণ্য কিনতে আসা আশা বেগম জানান, বাজারের অবস্থা ভালো। অন্য শুক্রবারের মতো হঠাৎ করেই কোনো জিনিসের দাম বেড়ে যায়নি। বরং কমেছে। তাই একটু স্বস্তিতে আছি। তবে বাজার মনিটরিং অব্যাহত রাখতে হবে। যাতে পেঁয়াজসহ রমজাননির্ভর পণ্যের দাম বাড়তে না পারে।

এ ছাড়া সপ্তাহ ব্যবধানে ছোলার দাম কমেছে কেজি প্রতি ১০ টাকা। বৃহস্পতিবার ছোলা বিক্রি হয় ৬৫-৮০ টাকা কেজি, চিনি ৬০-৬২, মুড়ি ৭০-১২০, রসুন মানভেদে ১০০-১২০, খেসারির ডাল ৬০ ও মসুর ১০০-১৪০ টাকা কেজি দরে।

এদিকে, রোজার শুরুতে ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া শসা ও গাজর এখন বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকায়। দাম কমার তালিকায় রয়েছে বেগুন, চিচিংগা, করলা, পটোল, ঢেঁড়স, বরবটিসহ সব ধরনের সবজি। গত সপ্তাহে ৬০-৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া চিচিংগার দাম কমে গতকাল বিক্রি হয়েছে ৪০-৪৫ টাকা। প্রতি কেজি বেগুন বিক্রি হয়েছে ৫০ টাকা, যা গত দুই সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছে ৯০-১০০ টাকা। ৮০ টাকায় বিক্রি হওয়া পেঁপে বাজারভেদে প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০-৬০ টাকা। এ ছাড়া পটোল, বরবটি, ঢেঁড়সে কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০-৫০ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৫০-৬০ টাকা। গত সপ্তাহে ৬০-৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া করলার দাম কমে বিক্রি হয়েছে ৪০-৫০ টাকায়।
মাছের বাজারেও স্বস্তি বিরাজ করছে। গত সপ্তাহের দামে স্থিতিশীল রয়েছে মাছে। গতকাল বাজারে রুই ও কাতলা বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ২৩০-৩০০ টাকা, চিংড়ি মাছ বিক্রি হয়েছে বড় আকারে প্রতি কেজি এক হাজার টাকা, মাঝারি আকারের ৭০০ টাকা এবং ছোট আকারের ৫০০ টাকা কেজি দরে। তেলাপিয়া প্রতি কেজি ১২০-১৪০ টাকা, কই মাছ ১৪০-১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। সিলভার কার্প ১০০-১২০ টাকা, পাবদা ৪০০-৪৫০ টাকা, পাঙ্গাস ১১০-১৩০, নলা ১২০-১৩০ টাকা এবং সরপুঁটি বিক্রি হয়েছে ১৩০-১৪০ টাকা।

অন্যদিকে, রাজধানীর বাজারে গরুর মাংস বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৪৫০ টাকা, খাসির মাংস বিক্রি হয়েছে ৭২০ টাকা। ব্রয়লার মুরগি কেজি প্রতি ১০ টাকা কমে বৃহস্পতিবার বিক্রি হয়েছে ১৫০ টাকা কেজি। গত সপ্তাহের দামে লাল কক মুরগি বিক্রি ১৭০-১৮০ টাকা কেজি দরে।

 

_Patheo/106/sb

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *