হজের দুর্নীতি তদন্তে মন্ত্রণালয়ের নথি চেয়েছে দুদক

হজের দুর্নীতি তদন্তে মন্ত্রণালয়ের নথি চেয়েছে দুদক

নিজস্ব প্রতিবেদক ● দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চলতি মৌসুমে হজের অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতি তদন্তে মাঠে নেমেছে। সেই লক্ষ্যে সম্প্রতি দুদকের এক সহকারী পরিচালককে প্রধান করে ৩ সদস্যের অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কাছে চলতি মৌসুমে হজের অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতিসংক্রান্ত বিষয়ে জানতে চেয়েছে দুদকের অনুসন্ধান কমিটি। সচিবালয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয়ে ভারপ্রাপ্ত সচিবের সঙ্গে দেখা করে তারা ওসব বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের নথিপত্র চেয়েছেন।

দুদক এবং ধর্ম মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর হজের অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতির বিষয়ে মোট ২২৮টি হজ এজেন্সির বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা পড়ে। টাকা নিয়েও হাজিদের মানসম্মত ট্রলিব্যাগ না দেয়া, ভিসা থাকার পরও হজে পাঠাতে টালবাহানা, সৌদি আরবে তাসরিয়াবিহীন (চুক্তিহীন) বাড়িতে রাখা ও নি¤œমানের খাবার দেয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগ ওঠে ওসব এজেন্সির বিরুদ্ধে। অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ খতিয়ে দেখতে ধর্ম মন্ত্রণালয় গত নভেম্বরে ৩টি তদন্ত কমিটি করে। প্রথম কমিটির প্রধান করা হয় ধর্ম মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিবকে (হজ)। অপর কমিটিও মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (উন্নয়ন) নেতৃত্বে গঠিত হয়। দুটি কমিটিই ৭৫টি করে এজেন্সির অভিযোগ তদন্ত করবে। আর আরেকজন যুগ্ম-সচিব (সংস্থা) নেতৃত্বে গঠিত তৃতীয় কমিটির সদস্যরা ৭৮টি এজেন্সির অভিযোগ খতিয়ে দেখবে। ইতিমধ্যে কমিটিগুলো সংশ্লিষ্ট এজেন্সির শুনানি শুরু করেছে।

সূত্র জানায়, অভিযোগ রয়েছেÑ মন্ত্রণালয়ের কর্তাব্যক্তিরা নিজেদের সুবিধামতো ও এজেন্সি মালিকদের স্বার্থ অক্ষুণœ রেখে প্রতি বছর হজ নীতিমালার ধারা সংযোজন ও বিয়োজন করেন। ফলে অনিয়ম ও দুর্নীতি রোধে তা খুব বেশি তা কাজে লাগে না। ফলে অনিয়মে জড়িতরা অপরাধ করেও সহজেই পার পেয়ে যায়। মূলত ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উদাসীনতার কারণেই হজ ব্যবস্থাপনায় অনিয়ম ও প্রতারণা বহাল রয়েছে। নানা নামে একই ব্যক্তির একাধিক হজ লাইসেন্স রয়েছে। একটি বাতিল হলে অন্যটির মাধ্যমে চলে হজ-বাণিজ্য। এ ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ের কোনো মনিটরিং ব্যবস্থা নেই। কারো বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেলেই শুধু মন্ত্রণালয় তদন্ত করে। আর দোষ প্রমাণ হলে নামকাওয়াস্তে শাস্তি দেয়। তারপরও ক্ষেত্র বিশেষে ওই শাস্তির পরিমাণও কমে যায় ‘রিভিউ’র নামে মন্ত্রণালয়ের কিছু অসাধু কর্মকর্তার ‘লেনদেন’র মাধ্যমে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে অভিযোগ থেকে অব্যাহতিও দেয়া হয়। ওসব কারণে এবার বিষয়গুলো নিয়ে দুদক অনুসন্ধান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এ প্রসঙ্গে ধর্ম মন্ত্রণালয়ে ভারপ্রাপ্ত সচিব আনিছুর রহমান জানান, চলতি মৌসুমে হজের অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে যেসব খবর প্রকাশিত হয়েছে সেসব বিষয়ের তথ্য-উপাত্ত চেয়েছে দুদক। আগামী ২৮ ডিসেম্বরের মধ্যে এ সংক্রান্ত নথিপত্র সরবরাহ করা হবে। তাছাড়া চলতি বছর ধর্ম মন্ত্রণালয়সংক্রান্ত যেসব অনিয়ম ও দুর্নীতির খবর প্রকাশিত হয়েছে, সেসব বিষয় নিয়েও অনুসন্ধান করবে তারা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *