হাইদরাবাদকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন চেন্নাই

হাইদরাবাদকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন চেন্নাই

স্পোর্টর্স ডেস্ক : ‘ফিরে যখন এসেছি, চ্যাম্পিয়ন হয়েই উৎসব করব’, এমন একটি সংকল্প হয়তো শুরু থেকেই করে রেখেছিল ধোনির চেন্নাই। না হলে কি আর ফাইনালটা একেবারেই পানসে করে ফেলে তারা! শেন ওয়াটসনের ১১৭ রানের অপরাজিত ইনিংসে ১৭৯ রানের লক্ষ্য পার হয়ে গেল একেবারে অনায়াসে। ম্যাচ জিতে নিল ১১ বল আর ৮ উইকেট বাকি থাকতে। তৃতীয়বারের মতো আইপিএল চ্যাম্পিয়ন হলো চেন্নাই। সাতবারের মতো ফাইনালে ওঠা দলটি জানিয়ে দিল, আইপিএলের রং আসলে হলুদ!

ম্যাচ গড়াপেটার অভিযোগে দুই বছর নির্বাসিত ছিল চেন্নাই। তাদের প্রত্যাবর্তনটা হলো একেবারে শিরোপা উৎসব দিয়ে। লো স্কোরিং ম্যাচ জেতাতেও যে দলের বোলারদের সুনাম ছড়িয়ে পড়েছিল; তাদের বোলাররাই বড় স্কোরটাকেও সামলাতে পারল না। অথচ মেডেন দিয়ে শুরু করেছিল হায়দরাবাদের বোলাররা। প্রথম তিন ওভারে রান দিয়েছিল মাত্র ১০। এর মধ্যে ১০ বলেও রানের খাতা না খোলা ওয়াটসনই তুললেন ঝড়।

৬ ওভার শেষেও ম্যাচের পাল্লাটা ৮০ শতাংশ হেলেছিল সানরাইজার্সের দিকে। চেন্নাইয়ের ১ উইকেটে ৩৫ রানের স্কোরটা ধোনিকে ড্রেসিংরুমে অস্থির পায়চারি করাচ্ছিল। কিন্তু ম্যাচের রং বদলে দিয়েছেন ওয়াটসন। সঙ্গে ছিলেন সুরেশ রায়না। দুজনে ১১৭ রানের জুটি গড়েছেন মাত্র ৫৭ বলে। ৩২ রান করে রায়না ফিরে গেলেও তলোয়ারের মতো ছুটেছে অস্ট্রেলীয় অলরাউন্ডারের ব্যাটসম্যানের ব্যাট। তুলে নিয়েছেন আইপিএল নিজের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। এ এমন এক ইনিংস, আফসোসটুকু করারও সুযোগ পেল না হায়দরাবাদ।

সাকিব অবশ্য আফসোস করতে পারেন। বল হাতে ১ ওভারে ১৫ রান দেওয়ার পর আক্রমণে ফেরার আর সুযোগই তো পেলেন না। ব্যাটে অবশ্য তাঁর কাজটুকু করে দিয়েছিলেন।

মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে টসে হেরে ব্যাট করতে শুরুটা ভালো হয়নি হায়দরাবাদের। দ্বিতীয় ওভারেই দলীয় ১৩ ও ব্যক্তিগত মাত্র ৫ রানে ফিরে যান শ্রীবৎস গোস্বামী। তবে ওয়ান ডাউনে নেমে ওপেনার শিখর ধাওয়ানের সঙ্গে বড় জুটি গড়ে শুরুর ধাক্কাটা সামলে নেন অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। ৮.৩ ওভারে ধাওয়ান ২৫ বলে ২৬ রান করে রবীন্দ্র জাদেজার বলে বোল্ড হয়ে ফিরলে ৫৯ রানের জুটি ভাঙে তাদের।

এরপরই উইকেটে আসেন সাকিব। চার মেরে রানের খাতা খোলেন। এর মধ্যে ৩৬ বলে ৫ চার ও ২ ছক্কায় ৪৭ রান করে কেন উইলিয়ামসন ফিরে যান কর্ণ শর্মার বলে স্ট্যাম্পিং হয়ে। এরপর ডোয়াইন ব্রাভোর শিকার সাকিব। ১৫ বলে ১ ছক্কায় ২৩ রান করেছেন বাংলাদেশি অলরাউন্ডার।

শেষ দিকে ১৭৮ রানের পুঁজি গড়ার পথে মূল দায়িত্বটা পালন করেছেন ইউসুফ পাঠান। ২৫ বলে ৪ বাউন্ডারি ও ২ ছক্কায় ৪৫ রানে অপরাজিত থাকেন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। আর ১১ বলে ৩ ছক্কায় হার না মানা ২১ করেন কার্লোস ব্রাফেট। তবু এই রানটাও কিছুই হলো না! দ্বিতীয় শিরোপা জেতা হলো না হায়দরবাদের। প্রথমবারের মতো আইপিএল ফাইনাল হারলেন এর আগে কলকাতার হয়ে দুবার শিরোপা জেতা সাকিব।

পারবেন কী করে! ওয়াটসন যে নিজের সেরা ইনিংসগুলো খেলার জন্য ফাইনালের মঞ্চটাকেই বেছে নিলেন। ওপেনার হিসেবে নেমে চতুর্থ ওভার লেগেছে রানের খাতা খুলতে। ষষ্ঠ ওভারেও নামের পাশে ১৬ বলে ৮ রান! ওয়াটসনই কি ডোবাবেন নাকি! এমনটাই যখন আলোচনা, দুই বলে চার-ছক্কা হাঁকিয়ে ঝড়ের আভাস দিলেন। সেই ঝড় আর থামল না। ১৬ বলে যার স্ট্রাইক রেট ছিল ৫০, সেই তিনি পরের ১৭ বলে তুললে ৪৩ রান! পরের ২৪ বলে তুললেন ৬৬! ৫৭ বলে ১১৭ করে অপরাজিত রইলেন। এক সময় ওয়ানডেতে এক ইনিংসে সর্বোচ্চ ছক্কার বিশ্ব রেকর্ডের মালিক। আজ অবশ্য ছক্কা হাঁকিয়েছেন ৮টি, চারটি চার। আইপিএলের ফাইনাল হয়ে থাকল ওয়াটসনের ফাইনাল।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *