২১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে কেনা হচ্ছে বৈদ্যুতিক খুঁটি

২১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে কেনা হচ্ছে বৈদ্যুতিক খুঁটি

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : দুই শত ১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে তিন লাখ ১৫ হাজার ৮৯০টি বৈদ্যুতিক খুঁটি (এসপিসি পোল) কিনছে সরকার। ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের পল্লী এলাকায় বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন ও ক্ষমতা বাড়াতে এই খুঁটিগুলো কেনার উদ্যোগ নিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ। প্রকল্পের আওতায় পাঁচটি সমান লটে (প্রতি লটে ৬৩ হাজার ১৭৮টি) এসব খুঁটি কেনা হবে। দরপত্রের মাধ্যমে ইতোমধ্যে প্রথম লটের খুঁটি কেনার প্রস্তাব চূড়ান্ত করা হয়েছে। বাংলাদেশ মেশিন টুল্স ফ্যাক্টরি লিমিটেড এটি সরবরাহ করবে।
জানা গেছে, দরপত্রের মাধ্যমে সর্বনি¤œ দরদাতা হিসেবে দ্বিতীয় লটের খুঁটিও কেনা হচ্ছে একই প্রতিষ্ঠান থেকে। তবে সর্বনিম্ন দরদাতা হলেও মোট ব্যয় দাঁড়াচ্ছে প্রাক্কলিত ব্যয়ের ১৪ দশমিক ৩১ শতাংশ বেশি। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে এই খুঁটিগুলো কিনছে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (বাপবিবো)।
সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির আগামী বৈঠকে এ-সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হতে পারে। অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সভাপত্বিতে এই বৈঠকটি আগামী বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পের আওতায় ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের ২৫টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ভৌগোলিক এলাকায় বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন, ক্ষমতা বৃদ্ধি, টেকসই ও নির্ভরতা অর্জনসহ ১ কোটি ৭৮ লাখ গ্রাহককে নিরবচ্ছিন্ন ও গুণগত মানসম্পন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে। যাতে এই সব গ্রাহক খুব সহজেই নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পেতে পারে।

সংশ্লিষ্ট এক সূত্র জানায়, বৈদ্যুতিক খুঁটি কেনার জন্য প্রতিটি লটের প্রাক্কলিত দর ধরা হয়েছে ১ কোটি ৬৮ লাখ ৬১ হাজার ৩২০ ডলার। বাংলাদেশী মুদ্রায় ১৮৬ কোটি ৩১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা (প্রতি ডলার ১১০.৫০ টাকা হিসাবে)। এর বিপরীতে দরদাতা কর্তৃক প্রস্তাবিত ও কারিগরি কমিটি কর্তৃক মূল্যায়িত দর হচ্ছে ১ কোটি ৯২ লাখ ৭৩ হাজার ৩৯৪ ডলার। বাংলাদেশী মুদ্রায় ২১২ কোটি ৯৭ লাখ ১০ হাজার টাকা। এটি প্রাক্কলিত দরের চেয়ে ১৪ দশমিক ৩১ শতাংশ বেশি। তবে টাকার সাথে ডলারের দর বৃদ্ধি কারণে এই অর্থ আরো বাড়তে বলে সূত্র জানায়।
সূত্র জানায়, দরপত্রে ক্যাসল কনসোর্টিয়াম কোম্পানি লিমিটেড নামে আরো একটি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছিল। ওই প্রতিষ্ঠানের প্রস্তাবিত দর ছিল ১ কোটি ৯৬ লাখ ৩৯ হাজার ৮০৮ ডলার। বাংলাদেশী মুদ্রায় ২১৭ কোটি ২ লাখ টাকা। এটি ছিল প্রাক্কলিত দরের চেয়ে ১৬ দশমিক ৪৮ শতাংশ বেশি।
বৈদ্যুতিক খুঁটি তৈরির হাই টেনসিল স্টিল ওয়াইর ও হাই স্ট্রেংথ স্টোন বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। বৈশ্বিক পরিস্থিতি ও ডলারের বিনিময় হার পরিবর্তন এবং বৈদ্যুতিক খুঁটি তৈরির অন্যান্য কাঁচামালের দাম বৃদ্ধি ও পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধি ইত্যাদি কারণে বৈদ্যুতিক খুঁটির দাম বেড়েছে। দরপত্র পর্যালোচনায় প্রস্তাবিত দর যৌক্তিক ও গ্রহণযোগ্য বলে মনে করছে কমিটি।

জানা যায়, ইতঃপূর্বে একই প্রতিষ্ঠান থেকে প্রথম লটের ৬৩ হাজার ১৭৮টি খুঁটির দাম ধরা হয়েছে ২১৩ কোটি ১১ লাখ টাকা। এটি এখনো সরবরাহ করা হয়নি। সে হিসাবে দু’টি লটে মোট ব্যয় দাঁড়াচ্ছে ৪২৬ কোটি ৮ লাখ টাকা।