পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম: ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’র ক্ষতের রেশ কাটতে না কাটতেই বঙ্গোপসাগরে আরেকটি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির শঙ্কা তৈরি হয়েছে। এরই মধ্যে আন্দামান সাগরের কাছে সৃষ্টি হওয়া লঘুচাপ সেই আভাস দিচ্ছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে তা ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হলে এর নাম হবে ‘মিচাউং’।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, এরই মধ্যে সৃষ্টি হওয়া লঘুচাপটি আরও ঘনীভূত হতে পারে। তবে ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর-আইএমডি এরই মধ্যে লঘুচাপটি দ্রুত শক্তিশালী হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার আশঙ্কার কথা জানিয়েছে। তবে এটি কবে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে, আর কবে তা কোন দেশের উপকূলে আঘাত হানবে, তা এখনো কোনো সংস্থাই নিশ্চিত করেনি। আন্দামান এলাকায় সৃষ্টি হওয়া ঝড় সাধারণত বাংলাদেশ, ভারত ও মিয়ানমার উপকূলে আঘাত হানে।
আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, বর্তমানে লঘুচাপটি বাংলাদেশ উপকূল থেকে প্রায় দেড় হাজার কিলোমিটার দূরে, আন্দামান সাগরের কাছে রয়েছে। সাধারণত ওই এলাকায় কোনো ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হলে তা বাংলাদেশ উপকূলের কাছাকাছি আসতে পাঁচ থেকে সাত দিন সময় দরকার হয়। দীর্ঘ সময় নিয়ে আসা ঝড়গুলোর শক্তিও বেশি থাকে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন বলেন, বঙ্গোপসাগরের লঘুচাপটি শক্তি অর্জন করছে। এটি নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার পর তা নিশ্চিত করে আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে জানানো হবে।
বঙ্গোপসাগরে চলতি বছরের মধ্যে এ পর্যন্ত মোট তিনটি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়েছে। যার সব কটি কমবেশি বাংলাদেশ উপকূলে প্রভাব ফেলেছে। গত ৯ মে ঘূর্ণিঝড় মোখা, ২১ অক্টোবর ঘূর্ণিঝড় হামুন এবং সর্বশেষ ১৭ নভেম্বর ঘূর্ণিঝড় মিধিলির সৃষ্টি হয়। আরেকটি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হলে তা হবে এ বছরের জন্য চতুর্থ ঘূর্ণিঝড়। বাংলাদেশে এক বছরে চারটি ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার ঘটনা নেই।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের প্রাথমিক হিসাবে, ঘূর্ণিঝড় মিধিলি দেশের ১৩টি জেলায় সবচেয়ে বেশি প্রভাব রেখে গেছে। এর মধ্যে খুলনা, পটুয়াখালী, বরগুনা ও শরীয়তপুরে সম্পদের ক্ষতি হয়েছে সবচেয়ে বেশি। প্রাথমিক হিসাবে এই দুর্যোগে দুর্গত মানুষের সংখ্যা ৯৪ হাজার ৫৭৭। এ ছাড়া ৩ হাজার ৬৭০টি বাড়িঘর আংশিক বা সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঝড়ে মোট তিনজন মারা গেছেন, আর একজন নিখোঁজ রয়েছেন। তবে বেসরকারি হিসাবে মিধিলিতে প্রাণ গেছে সাতজনের।
এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে আজকে শুক্রবারের জন্য দেওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। আপাতত বৃষ্টির আশঙ্কা নেই। রাত ও দিনের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে। অর্থাৎ দিনে রোদ ও রাতে হালকা হিমেল হাওয়া বইতে পারে। আজ বৃহস্পতিবার দেশের সবচেয়ে কম তাপমাত্রা ছিল নওগাঁ ও দিনাজপুরে ১৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।