পোশাকশ্রমিকের ন্যূনতম মজুরিতে পরিবর্তন নেই, গ্রেড একটি কমেছে

পোশাকশ্রমিকের ন্যূনতম মজুরিতে পরিবর্তন নেই, গ্রেড একটি কমেছে

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম: ন্যূনতম মজুরি ১২ হাজার ৫০০ টাকা রেখেই পোশাকশিল্পের শ্রমিকদের জন্য নতুন মজুরিকাঠামো চূড়ান্ত করেছে নিম্নতম মজুরি বোর্ড। নতুন মজুরিকাঠামোতে গ্রেডসংখ্যা ৫টি থেকে কমিয়ে ৪টি করা হয়েছে। তা ছাড়া ১ ও ২ নম্বর গ্রেডের মোট মজুরি প্রস্তাবিত কাঠামো থেকে যথাক্রমে ১২৩ ও ২৮৫ টাকা বাড়ানো হয়েছে।

সচিবালয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আজ রোববার বিকেলে অনুষ্ঠিত ন্যূনতম মজুরি বোর্ডের সভায় খসড়া মজুরিকাঠামো চূড়ান্ত করা হয়েছে। সভায় মজুরি বোর্ডের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী মোল্লা সভাপতিত্ব করেন। সভায় মালিকপক্ষের প্রতিনিধি সিদ্দিকুর রহমান ও শ্রমিকপক্ষের প্রতিনিধি সিরাজুল ইসলাম এবং নিম্নতম মজুরি বোর্ডে মালিকপক্ষের স্থায়ী প্রতিনিধি মকসুদ বেলাল সিদ্দিকী, শ্রমিকপক্ষের স্থায়ী প্রতিনিধি সুলতান আহম্মদ এবং নিরপেক্ষ প্রতিনিধি কামাল উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।

সভা শেষে লিয়াকত আলী মোল্লা বলেন, খসড়া মজুরিকাঠামোর ওপর মালিকপক্ষ থেকে আলাদা আলাদা ১৭৩টি এবং ২৫টি শ্রমিক সংগঠন থেকে আপত্তি ও সুপারিশ দেওয়া হয়। সেগুলো পর্যালোচনা করে খসড়ায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। গ্রেড পাঁচটি থেকে কমিয়ে চারটি করা হয়েছে। মূলত খসড়া মজুরি কাঠামোর ৪ নম্বর গ্রেডটিকে ৩ নম্বর গ্রেডের সঙ্গে সমন্বয় করা হয়েছে। তবে ন্যূনতম মজুরি ১২ হাজার ৫০০ টাকাই রয়েছে।

পোশাকশ্রমিকদের মজুরি নির্ধারণের জন্য গত এপ্রিলে সরকার নিম্নতম মজুরি বোর্ড গঠন করে। গত ২২ অক্টোবর বোর্ডের চতুর্থ সভায় শ্রমিকপক্ষের প্রতিনিধি ২০ হাজার ৩৯৩ টাকা ন্যূনতম মজুরির প্রস্তাব দেন। এর বিপরীতে মালিকপক্ষ প্রায় অর্ধেক বা ১০ হাজার ৪০০ টাকার মজুরি প্রস্তাব দেয়। মালিকপক্ষের এই মজুরি প্রস্তাবে ক্ষুব্ধ হয়ে শ্রমিকেরা পরদিন আন্দোলনে নামেন। মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে প্রথমে গাজীপুরে আন্দোলন শুরু হলেও পরে তা আশুলিয়া-সাভারেও ছড়ায়। এই আন্দোলনে গাজীপুরে চার শ্রমিকও মারা যান।

শ্রমিক আন্দোলনের মুখে ১ নভেম্বর মজুরি বোর্ডের সভায় মালিকপক্ষের প্রতিনিধি সিদ্দিকুর রহমান নতুন করে প্রস্তাব প্রদানের প্রতিশ্রুতি দেন। পরে ৭ নভেম্বর মালিকপক্ষ যে প্রস্তাব দেয়, সেটিই চূড়ান্ত হয়। এর চার দিন পর খসড়া মজুরিকাঠামোর প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করা হয়। যদিও শ্রমিক সংগঠনগুলো সেই খসড়ার ওপর আপত্তি জানিয়ে ২৩ হাজার থেকে ২৫ হাজার টাকা মজুরি দাবি করে।

বর্তমানে পোশাকশ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ৮ হাজার টাকা। সেখান থেকে ৫৬ শতাংশ বেড়ে ন্যূনতম বা ৪ নম্বর গ্রেডের মোট মজুরি হবে ১২ হাজার ৫০০ টাকা। ৩ নম্বর গ্রেডের মজুরি হবে ১৩ হাজার ৫৫০ টাকা। এ ছাড়া ২ নম্বর গ্রেডের মজুরি ১৪ হাজার ২৭৩ এবং ১ নম্বর গ্রেডের মজুরি হবে ১৫ হাজার ৩৫ টাকা।

মালিকপক্ষের প্রতিনিধি সিদ্দিকুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, শ্রমিকদের দ্রুত পদোন্নতি দেওয়ার জন্যই একটি গ্রেড কমানো হয়েছে।

জানা যায়, এই চূড়ান্ত মজুরিকাঠামো শ্রম মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে নিম্নতম মজুরি বোর্ড। এরপর সেটি যাচাই-বাছাই করে প্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশ করবে মন্ত্রণালয়। আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে নতুন মজুরিকাঠামো কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে।

সূত্র: প্রথম আলো

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *