‘এনো আহি আল্লারে খুশি করার লাগি’: তাড়াইল ইজতিমা সম্পর্কে আশি বছর বয়সী নেওয়াজন মিয়া

‘এনো আহি আল্লারে খুশি করার লাগি’: তাড়াইল ইজতিমা সম্পর্কে আশি বছর বয়সী নেওয়াজন মিয়া

  • ইবনু হাশিম

তাড়াইল ইজতিমা আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়নি এখনো, অথচ বেলঙ্কা, ইছাপশর, দামিহা, জাওয়ারসহ আশপাশের এলাকার বয়স্কগোছের লোকগুলো আগে আগেই ময়দানে চলে এসেছে। মাগরীবের পর চাদর গায়ে জড়িয়ে দিয়ে গুণগুণ করে সূরা ওয়াকি’আ পড়ছি আর মাঠজুড়ে পায়চারি করছি। স্টেজের সামনের দিক এখনই মুসল্লিতে পূর্ণ হয়ে গিয়েছে।

মাঠের দক্ষিণ কোণে দেখা মিললো শীতে যবুথবু হয়ে বসে থাকা আশি বছরের এক মুরব্বি। পরনে সাদা লুঙ্গি, হলুদাভ চাদর ও কালো কানটুপি। কাছে গিয়ে সালাম দিতেই শুভ্র শশ্রুমণ্ডিত মুখে মৃদু হাসির রেখা মেলে সালামের জবাব দিলেন। কথায় কথায় জিজ্ঞেস করলাম নানান বিষয়। একদিন আগেই কেনো চলে এসেছেন? উত্তরে বললেন-

‘বাড়িত বইসা তাহনের চাইতে এনো বেশী ভালো লাগে, এনো আল্লাবিল্লা করতে পারতেছি, ওয়াজ শুনতেছি, বাড়িত তাকলে তো ঘুমাইতাম।’

তার নাম নেওয়াজ মিয়া, বয়শ আশির চাইতে কিছু কম বা বেশি। জানালেন, আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ দামাত বারাকাতুহুম এর ডাকে এই গাঁয়ে যে বছর থেকে এই ইসলাহী ইজতিমা শুরু হয়েছে কোনো বারই তিনি নাগা দেননি। ‘এখানে এই ঠাণ্ডার মধ্যে কষ্ট করে বসে থেকে কী লাভ?’ প্রশ্নের উত্তরে তার সোজাসাপটা উত্তর,

‘এনো আহি আল্লারে খুশি করার লাগি।’

চাচা নেওয়াজ মিয়ার সাথে কথা বলে বেশ ভালো লাগলো। তার মতো আরও অশীতিপর অনেকেই এখানে আছেন। আছেন তরুণ যুবারাও। আগামিকাল ইজতিমা শুরু হবে। লকে লোকারণ্য হয়ে উঠবে ময়দান। উদ্দেশ্য, তিনটা দিন একান্তে একটু আল্লাহ বিল্লাহ করা। কৃষিকাজ, জমিজেরাতে সারা বছরের ব্যাস্ততারমাঝে মাঘের এই শীতে আল্লাহকে ডাকার এই ফুরসতটুকু কেউই হেলায় হারাতে চান না।

লেখক, সহযোগী সম্পাদক, পাথেয় টোয়েন্টইফোর ডটকম

 

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *