চালের দাম বেড়ে যাওয়াকে ‘অস্বাভাবিক’ বললেন প্রধানমন্ত্রী

চালের দাম বেড়ে যাওয়াকে ‘অস্বাভাবিক’ বললেন প্রধানমন্ত্রী

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম: নির্বাচনের পর চালের দাম বেড়ে যাওয়াকে ‘অস্বাভাবিক’ পরিস্থিতি হিসেবে বর্ণনা করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারের কঠোর অবস্থানের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুরভিসন্ধিমূলকভাবে কোনও জিনিস মজুত করলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়ে জেলে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।

গতকাল সোমবার (২২ জানুয়ারি) গণভবনে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির জরুরি সভার সূচনা বক্তব্যে এসব কথা বলেন শেখ হাসিনা।

মানুষ নির্বাচনে অংশ নিয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন অযথা একটা ধূম্রজাল সৃষ্টির চেষ্টা করা হচ্ছে। সবচেয়ে অবাক লাগে, কথা নাই বার্তা নাই হঠাৎ চালের দাম বেড়ে গেলো, জিনিসের দাম বেড়ে গেলো। আমরা জানি, করোনাভাইরাসের অতিমারির কারণে, এরপরে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ, নিষেধাজ্ঞা-পাল্টা নিষেধাজ্ঞার ফলে বিশ্বব্যাপী মূল্যস্ফীতি বেড়ে গেছে। শুধু বাংলাদেশ না, উন্নত দেশগুলোও ধাক্কা সামাল দিতে পারছে না।

নির্বাচন শেষ হওয়ার পর নানা চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে এই কৌশল নেওয়া হচ্ছে– দাবি করে শেখ হাসিনা বলেন, নির্বাচন শেষ হওয়ার পর আরও কিছু চেষ্টা করা হয়েছে। গার্মেন্টের মজুরি বাড়ানো হলো, তার পরেও রাত ১২টা বাজে গার্মেন্ট শ্রমিকদের আন্দোলন। এটা করে ব্যর্থ হয়েছে, ব্যর্থ হয়ে এখন অন্যভাবে নামতে চাচ্ছে। সেভাবে করতে দেবো না।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে দেবো না। মানুষ আনন্দিত, খুশি। এ পর্যন্ত যে উন্নয়নটা করেছি এর সুফলটা যেন জনগণ পায়, এই চেষ্টাটাই করছি।

শেখ হাসিনা বলেন, যেসব জিনিস আমাদের বাইরে থেকে কিনতে হয়, যেমন- গম, চিনি ভোজ্য তেল, গ্যাস, এগুলো আমাদের কিনতে হয়। কারণ, আমাদের যা আছে তা চাহিদার চেয়ে অনেক কম। যেসব জিনিস আনতে হয় এগুলোর উচ্চ মূল্য, পরিবহন ব্যয় বেড়েছে, সেই কারণে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে।

উৎপাদন বাড়াতে বারবার আহ্বান জানানোর কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যার কারণে আমরা শুরুতেই বলেছি আমাদের নিজস্ব উৎপাদন বাড়াতে। এবারও আমাদের ফসল ভালো হয়েছে, চালের উৎপাদন বেড়েছে। তারপরও হঠাৎ দাম বাড়াটা এই রকম ভরা মৌসুমে, এটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতি। এটার পেছনে কারা আছে এটা একান্তভাবে বের করা দরকার। শুধু দরকার না, এদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে হবে এবং এটা আমরা আগামীতে করবো। যেখানে যেকোনও দুরভিসন্ধিমূলক কোনও জিনিস যদি মজুত করে রাখে, একটা হচ্ছে স্বাভাবিকভাবে, যেটা বাজারে দেওয়ার জন্য মজুত করতে হয়। কিন্তু অস্বাভাবিকভাবে মজুত করে রাখা বা দুরভিসন্ধিমূলকভাবে মজুত করে রাখা।

তিনি বলেন, এরকম যাকেই পাওয়া যাবে মোবাইল কোর্ট বসিয়ে সঙ্গে সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো। দরকার হলে জেলে ঢুকিয়ে দিতে হবে। আগামীতে আমরা সেই ব্যবস্থাটাই নেবো।

এখন থেকে প্রথমে ওই জায়গাতেই আঘাত করতে হবে। ডিম, সেটাও মজুত করে রাখা হয়। এর আগে পেঁয়াজ, একটার পর একটা পচা পেঁয়াজের বস্তা ফেলে দেওয়া হলো। এটা কোন ধরনের কথা। মানুষের খাবার নিয়ে খেলা, এর তো কোনও অর্থ হয় না, আর এই ভরা মৌসুমে চালের দাম বাড়ারও কথা না। এ সময় তো আরও কমে জিনিসের দাম।

সরকারপ্রধান বলেন, তরিতরকারি, ফলমূল আমাদের সরবরাহের তো কোনও অভাব নাই। যেকোনও কৃষিপণ্যের দাম বাড়লে ভোক্তাদের কষ্ট হয়। কৃষক যদি দামটা পায় তারা খুশি হয়। কৃষক ন্যায্য দামটা পাচ্ছে। কিন্তু যে দামটা পরিবহন সব মিলিয়ে হওয়া উচিত তার থেকে অতিরিক্ত বেশি। সেই জন্য দুরভিসন্ধি নিয়ে যদি কেউ মজুত রাখে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা আমরা নেবো। মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *