পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : বান্দরবানের থানছি উপজেলার মিয়ানমার সীমান্তবর্তী দুর্গম রেমাক্রী ইউনিয়নের ৭টি পাড়ায় ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। গত সাত দিনে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে আটজনের মৃত্যু হয়েছে। ডায়রিয়া পরিস্থিতি দিন দিন অবনতির দিকে যাচ্ছে। গত ৯ জুন থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত পাড়া প্রধানসহ মারা গেছেন আটজন। এখনো ডায়রিয়া আক্রান্ত রয়েছে অর্ধশতাধিক মানুষ।
মৃতরা হলেন- রেমাক্রী ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মেন থাং পাড়ার কার্বারী মেনথাং ম্রো (৪৯), নারিচা পাড়ার বাসিন্দা লংঞী ম্রো (৪৫), ইয়ং নং পাড়ার বাসিন্দা ক্রাইয়ং ম্রো (৬০), ক্রায়ক ম্রো (১৮), রয়ং ম্রো (৪৮), সিংচং পাড়ার বাসিন্দা প্রেণময় ম্রো (১১), সংওয়ে ম্রো (৫০) ও প্রেণময় ম্রো (৪০)।
জানা গেছে, শুষ্ক মৌসমে পাহাড়ে বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। এতে দূষিত পানি পান করায় রেমাক্রী ইউনিয়নে দুর্গম মেন থাং পাড়া, নারিচা পাড়া, ইয়ং নং পাড়া ও সিং চং পাড়ায় অর্ধশতাধিক মানুষ ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়েছে। দুর্গম এলাকা হওয়ায় ওষুধ ও খাবার স্যালাইনের অভাবে ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে তারা মারা যাচ্ছে।
পরিস্থিতি মোকাবিলায় পর্যাপ্ত ওষুধসহ বেশ কয়েকটি মেডিকেল টিম ডায়রিয়া উপদ্রব এলাকায় কাজ করছে। দুর্গম ও মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় ডায়রিয়া আক্রান্ত ওইসব পাড়ার সংবাদ থানছি সদরে পৌঁছাতে দেরি হওয়ায় ডায়রিয়া পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে।
মিয়ানমার সীমান্তবর্তী রেমাক্রী ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের বেশ কয়েকটি পাড়ায় ১ সপ্তাহ আগে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। এতে ছয় দিনে আটজন মারা গেছে।
এদিকে রেমাক্রী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুশৈথুই মারমা জানান, মিয়ানমার সীমান্তবর্তী দুর্গম এলাকার লোকজন ঝিরি-ঝরনার দূষিত পানি পান করার ফলে ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে পড়ছে। পাড়া প্রধানসহ এ পর্যন্ত আটজন মারা গেছেন।
থানছি উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য মতে, থানচির দুর্গম এলাকায় ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। এ পর্যন্ত আটজনের মৃত্যুর খবর পেয়েছি। দুর্গম এলাকায় পর্যাপ্ত ওষুধ, খাবার স্যালাইন ও মেডিকেল টিম পাঠানো হয়েছে। দুর্গম এলাকায় যাতায়াত ব্যবস্থা না থাকায় তাদের হাসপাতালে এনে চিকিৎসাসেবা দেওয়া যাচ্ছে না। মূলত এই সময়ে পাহাড়ে ঝিরি-ঝরনার পানি দূষিত হওয়ায় ওই পানি পান করে পাড়ার মানুষ ডায়রিয়া আক্রান্ত হচ্ছে।
থানচি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার হাবিবা জান্নাতুল তুলি জানান, বর্ষাকালে ঝিরি-ঝরনার ঘোলা পানি (যেখানে তারা গোসল করছে) পান করছে পাহাড়ের অনেকে। তাই তারা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। বিশেষ করে রেমাক্রীর আন্দারমানিক দুর্গম এলাকা থেকে রোগী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসতে সময় লাগে, তাদের কোনো ধরনের রোগ হলে গুরুত্ব দেয় না। তবে ১০ জনের একটি মেডিকেল টিম পাঠানো হয়েছে। পর্যাপ্ত ওষুধ সরবরাহ করা হয়েছে। আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছি।