পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : বিশ্বের অন্যান্য উন্নয়নশীল ও উন্নত দেশগুলোর মতো বাংলাদেশকে সমৃদ্ধ করতে হলে ভ্যাটের কোনো বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (আন্তর্জাতিক কর) আব্দুল মজিদ।
তিনি বলেন, স্বাধীনতা অর্জনের পর তথাকথিত তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে বাংলাদেশ আজ জনশক্তি, নিজস্ব সম্পদ ও অভ্যন্তরীণ রাজস্বের ওপর নির্ভর করে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে শামিল হতে যাচ্ছে। ২০২৬ সালে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণসহ রূপকল্প-২০৪১ বাস্তবায়নের দিকে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ। অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং অবকাঠামোগত যোগাযোগ উন্নয়নের কাঙ্ক্ষিত সূচক অর্জনসহ খাদ্যে স্বনির্ভরতা অর্জনে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। এই অর্জনের নেপথ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাত হচ্ছে রাজস্ব আদায়।
শনিবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরে রংপুরে কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট কার্যালয়ের সভাকক্ষে ভ্যাট দিবস ও ভ্যাট সপ্তাহ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আব্দুল মজিদ বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে প্রতি টাকা রাজস্ব আদায়ে সবচেয়ে কম খরচ। দেশের উন্নয়নে রাজস্ব আহরণ গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ অতিমারি সত্ত্বেও দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখার প্রয়াসে প্রধানমন্ত্রীর যুগোপযোগী এবং বাস্তবমুখী দিক নির্দেশনায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ২০২১-২২ অর্থবছরে রাজস্ব আহরণে প্রায় ১৬.০৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনের মাধ্যমে একটি অনন্য দক্ষতার নজির স্থাপন করেছে।
তিনি আরও বলেন, স্বাধীনতার পর ১৯৭২-৭৩ অর্থবছরে মাত্র ১৬৬.৩০ কোটি টাকার রাজস্ব আহরণ দিয়ে আমাদের প্রিয় স্বদেশ যাত্রা শুরু করেছিল। আজ ৫০ বছর পরে সদ্য সমাপ্ত ২০২১-২২ অর্থবছরে কোভিড-১৯ এর মত বৈশ্বিক অতিমারি এবং অর্থনৈতিক পরিস্থিতি সত্ত্বেও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ৩ লাখ ১ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা রাজস্ব আহরণ করেছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন পূরণের অভিপ্রায়ে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ এবং দেশের ব্যবসা বাণিজ্য।
অনুষ্ঠানে কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট রংপুরের কমিশনার সুরেশ চন্দ্র বিশ্বাসের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন কর অঞ্চল রংপুরের কর কমিশনার আবুল কালাম, স্থানীয় সরকার বিভাগের পরিচালক (রংপুর বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়) ফজলুল কবীর, রংপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট মোস্তফা সোহবার টিটু। স্বাগত বক্তব্য দেন কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট রংপুরের অতিরিক্ত কমিশনার অরুণ কুমার বিশ্বাস। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম।
আলোচনা পর্ব শেষে ২০২০-২১ অর্থবছরে কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট রংপুরের আওতাধীন আট জেলায় উৎপাদন, সেবা ও ব্যবসা-এ তিন ক্যাটাগরিতে সর্বোচ্চ মূসকদাতা হিসেবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃত নির্বাচিত ১৮ জন ব্যবসায়ী ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়।
এবার উৎপাদন ক্যাটাগরিতে রংপুর জেলার মধ্যে মেসার্স মায়া বিড়ি ফ্যাক্টরি, ব্যবসায় আরিফিন মটরস ও সেবায় গ্র্যান্ড প্যালেস হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টস লিমিডেট সর্বোচ্চ মূসকদাতা প্রতিষ্ঠান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে।
এছাড়াও কুড়িগ্রাম জেলার মধ্যে সানলাইট ট্রেডিং অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেড, অন্তর বাজাজ, ঝন্টু মিষ্টি ভান্ডার, গাইবান্ধার ইউনাইটেড ফুটকেয়ার (বাংলাদেশ) প্রাইভেট লিমিটেড, মেসার্স ইরা বাজাজ, এস.কে.এস.ইন, ঠাকুরগাঁও জেলা থেকে গ্রিন ফিল্ড টি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, মেসার্স কে.এম মটরস, মেসার্স করতোয়া কুরিয়ার পার্সেল অ্যান্ড সার্ভিস, দিনাজপুর থেকে মেসার্স সুমাইয়া মটরস, নীলফামারীর সানিটা সিরামিক প্রাইভেট লিমিটেড, মেসার্স শাকিল মটরস, পঞ্চগড় জেলা থেকে পঞ্চগড় মটরস, লালমনিরহাটের মেসার্স স্বাধীন বিড়ি অ্যান্ড সফল বিড়ি ফ্যাক্টরি ও এআর মটরস মূসক দিয়েছে।