সুরভিত করেই এলো ঋতুরাজ বসন্ত

সুরভিত করেই এলো ঋতুরাজ বসন্ত

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : ফুলে ফুলে চারদিক আলোকিত, সুরভিত করেই এলো ঋতুরাজ বসন্ত। গাছে গাছে নতুন পাতা। শিমুল-পলাশের ডালে যেন লেগেছে আগুন। ইট কাচ ইস্পাতের নগরীতে পর্যন্ত কানে মধু ঢালছে কোকিলের কুহু তান। এই বসন্তের মাতাল সমীরণ মনে দেয় দোলা। প্রিয়জনের সান্নিধ্য পেতে ব্যাকুল হয় প্রাণ।

ক্যালেন্ডারের হিসাবে আজ মঙ্গলবারই বসন্তের প্রথম দিন, পহেলা ফাল্গুন। পশ্চিমা রীতির ভ্যালেনটাইনস ডে বা ভালোবাসা দিবসও আজ। প্রতিবছর ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্বজুড়ে পালিত হয় এ দিনটি। বাংলার বর্ণিল বসন্ত আর ভিনদেশি আত্মত্যাগী সাধু ভ্যালেনটাইনের প্রেমের রং মেখে প্রীতি আর ভালোবাসা বিনিময়ে মাতবে সবাই।

শীতের হিম, কুয়াশা আর শুষ্কতা প্রকৃতিকে করে তোলে ম্রিয়মাণ। অনেক ধরনের গাছের পাতা ঝরে পড়ে, হারিয়ে যায় শ্যামলিমা। মাঘের শেষে ফাল্গুন আবার বিবর্ণ প্রকৃতিতে প্রাণ ফিরিয়ে আনে। রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন, ‘নবীন বসন্ত আইল নবীন জীবন ফুটাতে।’ রাজধানীসহ নগরগুলো ক্রমশ হারিয়ে ফেলছে প্রাকৃতিক সবুজ, কালের প্রবাহে পল্লীবাংলার সবুজেও থাবা দিচ্ছে জনবসতির চাপ। তবু এককালের ষড়ঋতুর এ দেশের মানুষ বসন্তে এখনো কম-বেশি উদ্বেল হয়। নবজীবনের প্রতীক বসন্তের প্রভাব মানুষের মনে পড়েই।

হৃদয়ে বসন্তের উষ্ণতা নিয়ে আজ বাইরে পা দেবেন অনেকেই। প্রিয়জনকে নিয়ে ভালোবাসার দিগন্ত ছুঁতে চাইবেন তাঁরা। একটি দিন প্রিয় মানুষের সঙ্গে একান্তে নিজেদের মতো করে কাটাবেন। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম দিনটিকে বেছে নেবে মনের মানুষের কাছে প্রণয়ের কথা নিবেদনের জন্য। গোলাপের গুচ্ছ নিয়ে একসঙ্গে বাইরে ঘুরে বেড়ানো, কোথাও খেতে যাওয়ার মধ্য দিয়ে দিনটি কাটবে অনেকের। কারো প্রেমের প্রথম কুঁড়িটিও হয়তো লাজুক চোখ মেলে তাকাবে পয়লা বসন্তের আলোয়।

রাজধানীতে বরাবরের মতোই আজ বসন্ত উদযাপনের কেন্দ্রবিন্দু হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ প্রাঙ্গণ। বাসন্তী রং আর নাচে-গানে জমে উঠবে বসন্ত উৎসব। জাতীয় বসন্ত উৎসব উদযাপন পরিষদের উদ্যোগে সকাল ৭টায় শুরু হবে এ আয়োজন। বিকেল ৩টায় শুরু হবে উৎসবের দ্বিতীয় পর্ব। আয়োজনের শুরুতে থাকবে বেঙ্গল পরম্পরা সংগীত বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উচ্চাঙ্গসংগীত পরিবেশনা। প্রাণ-প্রকৃতি নিয়ে গান, কবিতা ও নৃত্যের সঙ্গে থাকবে সাঁওতাল, মারমা ও গারো সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী নাচ। গান, কবিতা ও নাচের এ আয়োজনটি চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত।

ফাগুনের উৎসবের এই রং চারুকলা থেকে ছড়িয়ে পড়বে পুরো বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায়। সেখান থেকে পুরো নগরে। অনেকেরই পোশাকে থাকবে বসন্তের আবহ। সংখ্যায় কম হলেও গতকালও দেখা গেছে তার কিছু নমুনা। হলদে শাড়ি আর ফুলের মুকুটে সাজা অনেক নারীরই দেখা মিলেছে পথে। দুই বছর পর স্বাভাবিক পরিবেশে শুরু হওয়া অমর একুশে বইমেলায়ও আজ একবার ঢুঁ মারবেন বহু মানুষ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *