ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বিএনপি কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি : সেতুমন্ত্রী

ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বিএনপি কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি : সেতুমন্ত্রী

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : বিএনপি আসলে মানুষের জন্য রাজনীতি করে না, জনগণের প্রতি তাদের কোনো দায়বদ্ধতা নেই বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, রাজধানীর বঙ্গবাজারে স্মরণকালের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের দুর্ঘটনায় সরকারি সংস্থাগুলোর সদস্যরা ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের মালামাল রক্ষায় প্রাণপণ চেষ্টা করেন। অথচ এ রকম ভয়াবহ একটি দুর্ঘটনায় সেখানে গিয়ে উদ্ধার তৎপরতায় সাহায্য করা বা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের মালামাল রক্ষায় এগিয়ে আসা, এ ধরনের কোনো উদ্যোগ বিএনপি গ্রহণ করেনি। বিএনপি মানুষের জন্য রাজনীতি করে না; জনগণের প্রতি তাদের কোনো দায়বদ্ধতা নেই।

আজ বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন। গণমাধ্যমে প্রচারিত ও প্রকাশিত বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাতেই এই বিবৃতি প্রদান করা হয়।

বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গভীর দুঃখ প্রকাশ এবং ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এ ধরনের মর্মান্তিক দুর্ঘটনা অত্যন্ত বেদনাদায়ক। অগ্নিকাণ্ড ঘটার পর থেকে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিষয়টি সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ, তদারকি ও নির্দেশনা প্রদান করেছেন। তারই নির্দেশে ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন এবং অগ্নিকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে সরকারি সংস্থাগুলোকে সহযোগিতা করেছেন।

তিনি বলেন, আগুনের লেলিহান শিখা চারটি মার্কেটের পাঁচ হাজার দোকান ভস্মীভূত করার পাশাপাশি পুড়িয়ে ছাই করেছে ব্যবসায়ীদের স্বপ্ন ও ব্যবসায়ী-কর্মচারীদের জীবিকার অবলম্বন। ভয়াবহ এই আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের ৪৮টি ইউনিটের পাশাপাশি সশস্ত্র বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিটসহ সরকারের ছয়টি সংস্থা সরাসরি অংশগ্রহণ করে এবং তাদের সর্বোচ্চ সক্ষমতা দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি মানুষের দুঃখ-দুর্দশা লাঘব না করে শুধু ঘরে বসে থেকে বিবৃতি প্রদান করে। ফলে এ রকম ভয়াবহ দুর্ঘটনা নিয়েও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য তাদের চিরাচরিত অপরাজনীতির বহিঃপ্রকাশ।

‘বিএনপি তামাশার নির্বাচনে বিশ্বাস করে না’- মির্জা ফখরুল ইসলামের এমন বক্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, অগণতান্ত্রিক রাজনৈতিক শক্তির প্রতিভূ বিএনপি এ দেশে বারবার তামাশার নির্বাচন আয়োজন করেছে। সামরিক শাসন জারি রেখে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সামরিক স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমান ১৯৭৭ সালে হ্যাঁ/না ভোট, সেনা প্রধানের দায়িত্বে থেকে ১৯৭৮ সালে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন এবং ১৯৭৯ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান করেছিল। তারই পদাঙ্ক অনুসরণ করে খালেদা জিয়া রাষ্ট্রক্ষমতা কুক্ষিগত করার জন্য ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ভোটারবিহীন প্রহসনের নির্বাচন করেছিল।

ওবায়দুল কাদের বলেন, অনুরূপভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা কুক্ষিগত করার জন্য ২০০৭ সালে বিএনপি যে নির্বাচনের আয়োজন করে গণ-আন্দোলনের মুখে তা বন্ধ করতে বাধ্য হয়। গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে এ দেশে সরকার পরিবর্তন হবে। বাংলাদেশে জনগণের ভোটের মাধ্যমেই ক্ষমতার পরিবর্তন হবে।

তিনি বলেন, দেশে অগণতান্ত্রিক রাজনীতির প্রবর্তক বিএনপির ওপর জনগণ আর আস্থা রাখতে চায় না। মির্জা ফখরুল ইসলামের দাবি- খালেদা জিয়াকে নাকি সরকার গৃহবন্দি করে রেখেছে এবং তারেক জিয়াকে নির্বাসনে পাঠিয়েছে। খালেদা জিয়াকে গৃহবন্দি ও তারেক রহমানকে নির্বাসনে আওয়ামী লীগ সরকার পাঠায়নি। বিএনপি যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য চিৎকার করে, ওয়ান-ইলেভেনে সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারই তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। সেই মামলায় তারা দুজন আদালত কর্তৃক দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। আদালতের রায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে খালেদা জিয়া সাজা ভোগ করছেন। অন্যদিকে দুর্নীতির দায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি তারেক রহমান রাজনীতি করবে না বলে মুচলেকা দিয়ে বিদেশে পালিয়েছিল।

তিনি বলেন, সব সংকট মোকাবেলা করে সফল রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা সুদক্ষ নেতৃত্বের মাধ্যমে রাষ্ট্র পরিচালনা করছেন বলেই বিএনপির গাত্রদাহ হচ্ছে। আমরা আবারও বঙ্গবাজারের এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী ও কর্মজীবী মানুষের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। একই সঙ্গে বলতে চাই, শেখ হাসিনার নির্দেশনা মোতাবেক আওয়ামী লীগ সর্বদা তাদের পাশে আছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *