পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত পূরণে রাজস্ব আয় বাড়াতে কঠোর হচ্ছে সরকার। সম্পদ লুকিয়ে রেখে কর ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ কমিয়ে আনতে নতুন “আয়কর আইনে” বিধান রাখা হচ্ছে।
নতুন আয়কর আইনে করদাতার ৬ বছর আগের যেকোনো সময়ের সম্পদ উদ্ঘাটন হলে, তার ওপর আয়কর ধার্য করা হবে। এর ফলে সম্পদ লুকিয়ে কর ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ কমে আসবে বলে মনে করা হচ্ছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সূত্রের বরাতে ইংরেজি ভাষার সংবাদমাধ্যম বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড এক প্রতিবেদনে জানায়, প্রস্তাবিত নতুন আয়কর আইনে এমন বিধান রাখা হয়েছে। বুধবার (৭ জুন) আইনটি সংসদে উত্থাপন করা হতে পারে। সংসদে উঠলে আইনটি পাশ হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। আগামী জুলাইয়ে এটি কার্যকর হতে পারে।
কর বিশেষজ্ঞ স্নেহাশীষ বড়ুয়া সংবাদমাধ্যমটিকে বলেন, “নতুন আয়কর আইনে এ ধরনের বিধান যুক্ত হলে সম্পদ লুকিয়ে রেখে কর ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ কমে যাবে। এতে করদাতাদের মধ্যে করের বিধান মেনে চলা নিশ্চিত হবে।”
নতুন আয়কর আইনকে করদাতাবান্ধব করার চিন্তা রয়েছে সরকারের। এছাড়া এটি ব্যবসা ও বিনিয়োগবান্ধবও হবে। নতুন এই আইনটিকে সহজবোধ্য করার জন্য বাংলায় প্রণয়নের কথা বলেছিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বাজেট বক্তৃতায় এ বিষয়ে কথা বলেন তিনি।
নতুন আয়কর আইনের বিষয়ে এনবিআরের আয়কর বিভাগের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা টিবিএসকে বলেন, “নতুন আয়কর আইনটিকে সহজভাবে উপস্থাপনের চেষ্টা করা হয়েছে। এতে কিছু বিষয় যুক্ত করা হয়েছে, তা ব্যবসা ও বিনিয়োগবান্ধব হওয়ার পাশাপাশি করদাতাবান্ধবও হবে। নতুন আইনে আইনি বিধানকে আরও সুনির্দিষ্ট করা হয়েছে। কিছুক্ষেত্রে করদাতাদের জন্য সহজ করা হয়েছে।”
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশকে দেওয়া ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণের শর্ত হিসেবে আগামী অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ে আইএমএফ কিছু শর্ত দিয়েছে। শর্তের মধ্যে রয়েছে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের স্বাভাবিক প্রবণতার বাইরে জিডিপির অতিরিক্ত ০.৫% রাজস্ব আদায় করতে হবে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেওয়া করছাড়ও যৌক্তিক করতে হবে।
আইএমএফ মনে করে, এই হারে কর আদায় বাড়লে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে কর-জিডিপি অনুপাত ৯.৫% এ উন্নীত হবে।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে এনবিআরকে ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য দেওয়া হয়েছে।