তৃতীয় মাসে সুদানের গৃহযুদ্ধ, নিহতের সংখ্যা ২ হাজার ছাড়িয়েছে

তৃতীয় মাসে সুদানের গৃহযুদ্ধ, নিহতের সংখ্যা ২ হাজার ছাড়িয়েছে

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : সুদানের বিধ্বংসী গৃহযুদ্ধ ১৫ জুন, বৃহস্পতিবার তৃতীয় মাসে প্রবেশ করেছে। চলমান এই যুদ্ধে এখন পর্যন্ত ২ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। যুদ্ধে দারফুর অঞ্চলের একজন রাজ্য গভর্নরও নিহত হয়েছেন।

আর্মড কনফ্লিক্ট লোকেশন এন্ড ইভেন্ট ডাটা প্রজেক্ট (এসিএলইডি) ৯ জুন পর্যন্ত যেসব তথ্য সংগ্রহ করেছে তার ভিত্তিতে জানিয়েছে, মৃতের সংখ্যা ইতোমধ্যেই ২ হাজার ছাড়িয়েছে।

ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশনের তথ্য অনুযায়ী, এই লড়াইয়ের ফলে ২২ লাখ মানুষ তাদের বাড়িঘর থেকে বিতাড়িত হয়েছে। এদের মধ্যে ৫ লাখ ২৮ হাজার প্রতিবেশী দেশগুলোতে পালিয়ে গেছে।

রাজধানী খার্তুমে ভয়াবহ লড়াই থেকে পালিয়ে আসা দশ লাখেরও বেশি বেসামরিক নাগরিকের একজন মোহাম্মদ আল হাসান ওথমান। তিনি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, ‘এত দীর্ঘ সময় ধরে এই যুদ্ধ চলবে তা আমরা দুঃস্বপ্নেও ভাবিনি। আমাদের জীবনের সবকিছুই বদলে গেছে। আমরা জানি না আমরা বাড়ি ফিরতে পারবো, নাকি নতুন জীবন শুরু করতে হবে।’

দীর্ঘ অশান্ত পশ্চিম দারফুর রাজ্যের গভর্নর খামিস আবদুল্লাহ আবাকারকে হত্যা করা হয়েছে। তিনি একটি সৌদি টিভি চ্যানেলের সঙ্গে টেলিফোন সাক্ষাতকারে আধাসামরিক বাহিনী আরএসএফ এর সমালোচনা করার কয়েক ঘন্টা পর নিহত হন।

জাতিসংঘ এই হত্যাকান্ডের নিন্দা জানিয়েছে। সংস্থাটি বলেছে, প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণ অনুযায়ী আবাকারকে আরব মিলিশিয়া এবং আরএসএফ হত্যা করেছে। সেনাপ্রধান বুরহানও গভর্নর হত্যার জন্য আরএসএফকে দায়ী করেছেন। তবে আরএসএফ দায় অস্বীকার করে বলেছে, তারা আবাকার হত্যার নিন্দা করেছে।

ইউএন এইডের প্রধান মার্টিন গ্রিফিথস সতর্ক করে বলেছেন, ‘দারফুরের পরিস্থিতি দ্রুত মানবিক বিপর্যয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।’

মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার জানান, শুধুমাত্র পশ্চিম দারফুরের রাজধানী এল জেনিনাতেই ১ হাজার ১০০ জন বেসামরিক লোক নিহত হয়েছে। জাতিসংঘ জানিয়েছে, এই অঞ্চল থেকে ২ লাখ ৭৩ হাজারের বেশি বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

এদিকে সৌদি আরব সুদানের যুদ্ধ বন্ধ করার বিষয়ে আলোচনার জন্য আগামী সপ্তাহে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছে।

উল্লেখ্য, ১৫ এপ্রিল থেকে সুদানের গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। সেনাপ্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল বুরহানের নেতৃত্বে নিয়মিত সেনাবাহিনী, মোহাম্মদ হামদান দাগালোর নেতৃত্বে আধাসামরিক বাহিনী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) এর বিরুদ্ধে লড়াই করছে। দাগালো সেনাপ্রধান বুরহানের সাবেক ডেপুটি ছিলেন। মূলত ক্ষমতাকে কেন্দ্র করেই রক্তক্ষয়ী এই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছেন দুই জেনারেল।

সূত্র: এএফপি

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *