লন্ডনে মুসলিমদের সহায়তায় দুই লাখ ৬০ হাজার ডলার তহবিল ঘোষণা

লন্ডনে মুসলিমদের সহায়তায় দুই লাখ ৬০ হাজার ডলার তহবিল ঘোষণা

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম: কানাডার লন্ডন শহরের মুসলিমদের সহায়তায় দুই লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার তহবিলের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। কানাডার ফেডারেল সরকার ও রেস রিলেশনস ফাউন্ডেশন (সিআরআরএফ) যৌথভাবে এই সহায়তা দেবে।

গত শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) কানাডার ডাইভারসিটি, ইনক্লুশন ও পার্সনস উইথ ডিজঅ্যাবিলিটিজ মন্ত্রী কমল খেরা এ কথা জানান। ‘আওয়ার লন্ডন ফ্যামিলি’কে সহায়তার অংশ হিসেবে ফেডারেল সরকার লন্ডনের মুসলিম রিসোর্স সেন্টার ফর সোশ্যাল সাপোর্ট অ্যান্ড ইন্টিগ্রেশনকে (এমআরসিএসএস) দুই লাখ মার্কিন ডলার তহবিল দেবে।

তহবিলের বাকি ৬০ হাজার মার্কিন ডলার রেস রিলেশনস ফাউন্ডেশনের (সিআরআরএফ) পক্ষ থেকে দেওয়া হবে।

তহবিলের ঘোষণাটি এমন সময় দেওয়া হয়, যখন কানাডিয়ান চরমপন্থী নাথানিয়েল ভেল্টম্যানের বিচার চলছে। নাথানিয়েল ২০২১ সালের জুনে একটি মুসলিম পরিবারের চার সদস্যকে ট্রাকচাপায় হত্যা করেছিলেন। এতে তালাত আফজাল (৭৪), তার ছেলে সালমান আফজাল (৪৬), স্ত্রী মাদিহা সালমান (৪৪) ও মেয়ে ইউমনাহ আফজাল (১৫) সবাই নিহত হন। তখন শুধুমাত্র ১১ বছর বয়সী একটি ছেলে রক্ষা পেয়েছিল।

কমল খেরা বলেন, ‘এ ধরনের দুঃখজনক ঘটনায় আমরা প্রায়ই সমবেদনা, পারস্পরিক সমর্থন ও ভালোবাসার শক্তি অনুভব করি। আফজাল পরিবারের হত্যাকাণ্ডের পর থেকে মুসলিম কমিউনিটি অনেক কঠিন সপ্তাহ, মাস ও বছর অতিবাহিত করেছে। ভেল্টম্যানের বিচার হয়তো আবার ক্ষত খুলতে পারে কিংবা ভয় ও উদ্বেগের অনুভূতি বাড়িয়ে তুলতে পারে।’

সিআরআরএফের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ হাশিম বলেন, ‘প্রথমবারের মতো কোনো গণহত্যার ঘটনার পর সরকারের একটি অংশ এ ধরনের সহায়তা দিয়েছে। এখন নিশ্চিত করতে চাই, আমরা মানুষকে সহায়তা করছি। এতে কতজন লোক উপকৃত হয়েছে তা বুঝতে একটি পরিমাপ কাঠামো তৈরি করেছি। তা ছাড়া কতজন মানুষের সমর্থন পাচ্ছেন, কী ধরনের জনসংখ্যা, ছোট বাচ্চারা সমর্থন পাচ্ছে? তাদের কী ধরনের সমর্থন প্রয়োজন? এসব প্রশ্নের উত্তরের মাধ্যমে আমরা সহায়তার ক্ষেত্রে কোথায় কমতি হচ্ছে তা খুঁজে বের করব।’

মুসলিম রিসোর্স সেন্টারের নির্বাহী পরিচালক ড. মুহাম্মদ বাওবায়েদ বলেন, ‘এই অর্থ সব ধরনের ভালো কাজে ব্যয় হবে।

বিশেষত ভুক্তভোগীদের ধারাবাহিক কাউন্সেলিং, কমিউনিটি আউটরিচ ও গ্রুপ থেরাপি প্রোগ্রামগুলোতে তা ব্যয় হবে। ভবিষ্যতে অন্যান্য জনগোষ্ঠীও মুসলিম রিসোর্স সেন্টার যে সাপোর্ট মডেল তৈরি করেছে তা ব্যবহার করতে পারবে। এটি শুধু ইসলামোফোবিয়া বিষয়ে নয়, বরং যেকোনো ঘৃণামূলক অপরাধ নিয়েও আমরা কাজ করব।’

ইসলামোফোবিয়া প্রতিরোধ বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি আমিরা আল-গাওয়াবি বলেন, ‘আফজাল পরিবারের নিহত হওয়ার এক বছর পর আমি লন্ডনে এসেছি। অনেক তরুণ কিশোররা ইয়ুথ কোয়ালিশন কমব্যাটিং ইসলামোফোবিয়া (ওয়াইসিসিআই) গঠন করলেও প্রথম বার্ষিকীর ইভেন্ট ঘিরে তাদের মধ্যে অনেক ভয় কাজ করছিল। পরবর্তীতে ভিকটিম সহায়তা পরিষেবার অনুদানও ফুরিয়ে যায়। ফলে যাদের কাউন্সেলিং প্রয়োজন ছিল তাদের তেমন কিছু করার ছিল না। তাদের মধ্যে দুঃখ, বিষণ্ণতা, ভয় স্থান করে নেয়। তাই তহবিলের ঘোষণার মাধ্যমে বোঝা যায়, এ ধরনের ঘটনা মোকাবেলায় সবার সমর্থন প্রয়োজন।’

সূত্র : লন্ডন নিউজ টুডে

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *