যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, চীন গত এক বছরে তার পারমাণবিক অস্ত্রের মজুদ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাড়িয়েছে। দেশটির দখলে এখন প্রায় ৫০০টি ব্যবহারযোগ্য পারমাণবিক যুদ্ধাস্ত্র রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনের পক্ষ থেকে প্রকাশিত বার্ষিক প্রতিবেদনে চীনের এই পরমাণু সক্ষমতার কথা তুলে ধরা হয়েছে।
২০৩০ সালের মধ্যেই যুদ্ধাস্ত্রের সংখ্যা বাড়িয়ে এক হাজার ছাড়ানোর আশা করছে চীন।
চীনের যুদ্ধাস্ত্র বৃদ্ধি অনুমান ছাড়িয়ে গেছে বলা হলেও তা রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধাস্ত্রের সংখ্যার তুলনায় কম বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের তথ্য মতে, রাশিয়ার কাছে প্রায় পাঁচ হাজার ৮৮৯টি পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের রয়েছে পাঁচ হাজার ২৪৪টি। মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের ২০২১ সালের অনুমান অনুযায়ী, চীনের কাছে প্রায় ৪০০টি পারমাণবিক যুদ্ধাস্ত্রের মজুদ ছিল।
চীনের যুদ্ধাস্ত্রের পরিমাণ বৃদ্ধির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বৃহস্পতিবার এক জ্যেষ্ঠ মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা বোঝাতে চাইছি না যে চীনের কাছে বিপুলসংখ্যক যুদ্ধাস্ত্র রয়েছে। আমরা বলতে চাচ্ছি, চীন আগের অনুমানগুলো ছাড়িয়ে যাওয়ার পথে রয়েছে।’
এদিকে চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং এরই মধ্যে ২০৪৯ সালের মধ্যে একটি ‘বিশ্বমানের সামরিক বাহিনী’ গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন। ২০১২ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে তিনি দেশের সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকীকরণের চেষ্টা করছেন।
মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, ২০২২ সালে বেইজিং সম্ভবত তিনটি নতুন ক্ষেপণাস্ত্র ক্ষেত্রের নির্মাণকাজ শেষ করেছে। সেখানে অন্তত ৩০০টি নতুন আন্তর্মহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) মজুদের ব্যবস্থা রয়েছে। আইসিবিএম ক্ষেপণাস্ত্র সাড়ে পাঁচ হাজার কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুকে আঘাত হানতে সক্ষম।
পেন্টাগনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চীনের সামরিক বাহিনীর রকেট বাহিনীও দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করতে চাইছে। হেনরি বয়েড ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের জ্যেষ্ঠ ফেলো হেনরি বয়েড বলেন, চীনের পারমাণবিক যুদ্ধাস্ত্র বৃদ্ধির হার খুব ব্যতিক্রমধর্মী মনে হচ্ছে না।
তবে দেশটি এ ধরনের এক হাজার অস্ত্রের অধিকারী হওয়ার লক্ষ্যে ‘অনুমানের চেয়ে কিছুটা বেশি দ্রুতই এগোচ্ছে।’
সূত্র : বিবিসি