পাথেয় ডেস্ক : ইসলাম সর্বদাই সৌহার্দ্য সম্প্রীতির আহবান করে। ইসলাম ধর্মের মৌল’ই হলো অসাম্প্রদায়িকতা । সাম্প্রদায়িকতা ও তুচ্ছতার কোন স্থান নেই এখানে। তাই ভারতের অসহিষ্ণু পরিবেশেও সম্প্রীতির অনন্য উদহারণ দেখালেন এক মুসলিম তরুণীএ যেন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য নজির। হাজারো বাধা পায়ে পিষে হিন্দু মহাকাব্যের অনুবাদ করেছেন মাহি তালাত সিদ্দিকি নামে এ মুসলিম তরুণী।
ভারতের কানপুরের বাসিন্দা মাহির ঘরে থরে থরে বই সাজানো। কোনোটা ভারতীয় পুরাণ, কোনটা আবার দর্শন সাহিত্য।
হিন্দি সাহিত্যের মেধাবী এই ছাত্রীর তীব্র অনুবাদের নেশা। সেই নেশাকে কাজে লাগিয়েই মাতৃভাষা উর্দুতে ‘রামায়ণ’ অনুবাদ করে ফেলছেন মাহি। এ কাজের জন্য এরই মধ্যে মাহিকে চিনে ফেলেছে সারা ভারতের মানুষ।
এ কাজে সামাজিক বাধা কেমন ছিল? এই প্রশ্নের জাবাবে মাহি বলেন, শুরুর সময় তীব্র বাধা ছিল। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাধা কমেছে। এছাড়াও সব প্রতিকূলতা জয় করতে নিজের পরিবারকে পাশে পেয়েছেন তিনি। আর কাজ শেষ হওয়ার পর স্থানীয় প্রশাসন ও সমালোচকদের কাছ থেকেও মিলেছে স্বীকৃতি।
আনন্দবাজারের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, বছর দুয়েক আগে, কানপুরের বাসিন্দা বদরিনারায়ণ তিওয়ারি হিন্দিতে অনুবাদ হওয়া রামায়ণের একটি কপি মাহিকে উপহার দিয়েছিলেন। সেটি পড়েই তিনি উর্দুতে রামায়ণ অনুবাদের সিদ্ধান্ত নেন।
কিন্তু হঠাৎ রামায়ণ অনুবাদের সিদ্ধান্ত কেন নিলেন? এই প্রশ্নে মাহি জানান, হিন্দু মহাকাব্য হলেও এর মধ্যে ভারতীয় পরিবারতন্ত্র, সামাজিক গঠন ও ভ্রাতৃত্বকে যে মর্যাদায় বসানো হয়েছে, এই অস্থির সময়ে তা জাতি-ধর্ম নির্বিচারে সবার জানা উচিত। তাই এই কাজে হাত দিয়েছিলেন ইসলাম ধর্মাবলম্বী এই তরুণী।
এই কাজে মাহিকে সাহায্য করেছেন তার মা মেহেল্লা এজাজ সিদ্দিকি। তিনি হালিম মুসলিম ডিগ্রি কলেজের উর্দু বিভাগের প্রধান। এই অনুবাদ করতে মাহির সময় লেগেছে প্রায় দেড় বছর।