পাথেয় রিপোর্ট : যারা গুজব ছড়াচ্ছে এবং ছড়ানোর চেষ্টা করছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, গুজব ছড়াবেন না, তথ্য যাচাই না করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোনো কিছু আপলোড করা যাবে না। কেননা গুজব সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে পারে।
রাজধানীর কারওয়ানবাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে র্যাব নির্মিত ‘গুজববিরোধী জনসচেতনতামূলক বিজ্ঞাপনের (টিভিসি)’ উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, তথ্য আমাদের অধিকার। তথ্য যাচাই না করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার বা আপলোড করা যাবে না। ইতিমধ্যে র্যাব সাইবার ক্রাইম সেল গঠন করেছে। এর মাধ্যমে আমরা সাইবার অপরাধীদের ওপর নজর রাখছি। তাদের চিহ্নিত করছি। তাদের বিরুদ্ধে আমরা কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছি।
গুজব বা মিথ্যা তথ্য একটি দিয়াশলাইয়ের মতো উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দিয়াশলাই কাঠি যেমন মুহূর্তেই জ্বলে উঠে ও বিশাল অগ্নিকাণ্ড ছড়াতে পারে, তেমনি কোনো গুজব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে পারে। কিছুদিন আগে স্কুলের ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা রাস্তায় নেমে এসেছিল। যদিও তারা সঠিক কারণেই রাস্তায় নেমেছিল। কিন্তু গুজব রটিয়ে সেটা ভিন্ন খাতে নেয়ার অপচেষ্টা আমরা দেখেছি।
অপরাধ দমনে র্যাবের ভূমিকার প্রশংসা করে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, আমরা দেখেছি জলদস্যু, বনদস্যু, জঙ্গি নির্মূলে র্যাবের ভূমিকা ছিল প্রশংসনীয়। র্যাব জনগণের আস্থা অর্জন করেছে। গুজব প্রতিরোধেও র্যাব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা প্রকাশ করছি।
ডিজিটালাইজেশনের পথে বাংলাদেশ এগিয়ে গেছে উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, শহর থেকে প্রত্যন্ত গ্রামের সবাই এখন ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন। এর সুফলের সঙ্গে কুফল বা অপব্যবহারও করা হচ্ছে। অবাধ তথ্য প্রবাহের যুগে বিশ্বে অভূতপূর্ব তথ্যবিপ্লব সাধিত হয়েছে। এটি যেমন সমাজে তথ্যের গতিশীলতা তরান্বিত করেছে, তেমনি মিথ্যা তথ্য স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হতে পারে।
অনুষ্ঠানে পুলিশের মহাপরিদর্শক ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, এখন সবার হাতে স্মার্টফোন। সোশ্যাল মিডিয়া এমন হয়ে গেছে, যে লেখাপড়া জানে না সেও এটা ব্যবহার করছে। গুজব ছড়িয়ে রামুতে ভয়াবহ ঘটনা ঘটানো হয়েছে, ছাত্র আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা হয়েছে। সচেষ্ট না হলে সামাজিক মাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা বিনষ্ট করে দিতে পারে।
র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ বলেন, ডিজিটাল বিপ্লবের আড়ালে একশ্রেণীর বিকারগ্রস্ত, অসুস্থ মানুষ ইন্টারনেটে অপপ্রচার করছে। বিশেষ করে আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে বিশৃঙ্খলার জন্য একশ্রেণীর মানুষ ওঠে-পড়ে লেগেছে। তারা মিথ্যা অপপ্রচার করে দেশবাসীকে বিভ্রান্ত করতে চাইছে। আমরা বিশ্বাস করি, দেশবাসী এসব অপপ্রচারে বিভ্রান্ত হবে না।
অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দিন এবং র্যাবের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।