এ যেন ফের রানা প্লাজায় ধস!

এ যেন ফের রানা প্লাজায় ধস!

পাথেয় রিপোর্ট : বাঁচার আকুতি ছিল প্রাণে। বাঁচতে পারেনি। কিন্তু জগতকে জানান দিয়ে গেছে শ্রমিকদের ওপর মালিকদের নিষ্ঠুর বর্বরতা। হয়তো তারা শুধু পরিচিতই ছিল। আর তাতেই বিশ্ব ইতিহাস। দু’প্রান্তের দু’মানুষ অথচ ওভাবে ঝাপটে ধরে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ার দৃশ্য বিশ্ববাসী আর কখনই দেখেনি।

রানা প্লাজা। এক নির্মম ধ্বংসযজ্ঞের কথা বলে। ছয় বছর আগে এখানেই সহস্রাধিক পোশাক শ্রমিক নিহত হয়। যে ঘটনা গোটা দুনিয়ার বিবেকবান মানুষকে তীব্রভাবে নাড়া দিয়েছিল। নাড়া দিয়েছিল রাষ্ট্র, সমাজ, পুঁজি ব্যবস্থাপনাকেও। সময়ের পরিক্রমায় সে ঘটনা প্রায় ইতিহাস। ধ্বংসস্থানে চিহ্ন পর্যন্ত নেই। সবুজ ঘাসে ভরে গেছে সমস্ত জমিন। অথচ সেই জমিনেই ফের মৃত্যুর কান্না। মৃত্যুপুরীর সেই জায়গায় ছবিতে ছবিতে ভেসে উঠল নিহতদের বেঁচে থাকার আকুতি। যেন রানা প্লাজায় ফের ধস! ফের কান্না। কাঁদল ছবির মানুষেরা। কাঁদল নিহতের স্বজনেরাও।

শুক্রবার রানা প্লাজা ধসের ছয় বছর উপলক্ষে ভিন্ন এক আয়োজন অনুষ্ঠিত হলো। বিকেলে বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির উদ্যোগে সাভারের রানা প্লাজার ধ্বংসস্তূপে ‘রানা প্লাজা ধস : অতীত ও বর্তমানের বোঝাপড়া’ শীর্ষক আলোকচিত্র প্রদর্শনীর ও প্রতিবাদ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সভাপ্রধান ও আলোকচিত্রী তাসলিমা আখতার রানা প্লাজা ধসের সময়ে তোলা ৭টি ছবি বড় বিলবোর্ডের মতো করে ছাপিয়ে প্রদর্শন করা হয়। রানা প্লাজার যেসব জায়গায় ছবি তোলা হয়েছিল ঠিক সেসব জায়গাতেই ছবিগুলো স্থাপন করা হয়। এর মধ্যে তাসলিমা আখতার সারা দুনিয়ায় পরিচিত এবং রানা প্লাজার শ্রমিক হত্যার আইকনিক ছবিটিও স্থান পায়। ওই ছবিতে দুজন নারী-পুরুষ শ্রমিক জীবনের শেষ মুহূর্তে পরস্পরের জড়িয়ে ধরে বাঁচার চেষ্টা করছিলেন। এই ছবিটি সারা দুনিয়ায় রানা প্লাজাসহ শ্রমিকদের জীবনের দুর্বিসহ চিত্র যেমন সামনে এনেছে। একইসঙ্গে সামনে এনেছে শ্রমিকদের মানুষ হিসাবে স্বপ্ন এবং বেঁচে থাকার আকুতি। প্রদর্শনীতে গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির গত ৬ বছরের কর্মসূচির কিছু ছবিও স্থান পায়।

প্রদর্শনী উদ্বোধন করে বক্তব্য রাখেন নিহত ফজলে রাব্বীর মা রাহেলা খাতুন। আরও বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সভাপ্রধান তাসলিমা আখতার, সাধারণ সম্পাদক জুলহাস নাইন বাবু, সাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুল শামা, সাভারের সংগঠক শাহ আলম। আহত শ্রমিক রূপালী, নিহত শান্তনার বোন সেলিনা এবং রানা প্লাজার নিহত পরিবারের অন্যান্য সদস্য ও আহত শ্রমিকরা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *