ধর্ষকদের রুখতে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা জরুরি

ধর্ষকদের রুখতে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা জরুরি

সামাজিক অবক্ষয়

ধর্ষকদের রুখতে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা জরুরি

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : ধর্ষণ যেনো সামাজিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় মরিয়া হয়ে উঠেছে। অসামাজিক সংস্কৃতি পায়ে পা রেখে আক্রমণ করছে। এ থেকে এই জাতিকে বাঁচানোর জন্য আইনের যথাসাধ্য সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থাই পারে ধর্ষণে¥াখ অবক্ষয়কে রুখতে। পরিতাপের বিষয় হলো, ভালোবাসার নামে, কাজের দেয়ার নামে, পড়ানোর নামে ডেকে নির্মমতার সঙ্গে ধর্ষণের মতো ঘটনার জন্ম দেয়া হচ্ছে। দেশের সম্মানকে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেয়া হচ্ছে। সিলেট নগরীর দাঁড়িয়াপাড়ায় ১৪ বছরের এক কিশোরী ধর্ষণের শিকার হয়েছে। রাগিব হোসেন নিজু (১৮) নামের এক তরুণের বিরুদ্ধে ওই কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। কিশোরীকে গতক শুক্রবার সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি করা হয়।

প্রযুক্তির অপব্যবহারে দেশে ধর্ষণ বেড়েই চলেছে। পারিবারিক বন্ধন কমে যাওয়া, সন্তানদের প্রতি বাবা-মায়ের দায়িত্ববোধের অভাব এবং খারাপ সঙ্গ ধর্ষণের মতো সামাজিক অপরাধ বাড়িয়ে দিয়েছে। এ ব্যাপারে সমাজ ও পরিবারের দায়িত্ববোধ আরও বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রযুক্তির অপব্যবহার রোধে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে সতর্ক অবস্থান তৈরির জন্য বলেছেন নারী নেত্রী ও সমাজবিজ্ঞানীরা। বর্তমানে সমাজে যে ভয়াবহ অবস্থা তৈরি হয়েছে তা অব্যাহত থাকলে আগামী দিনে সংকট আরও বাড়তে পারে। সমাজ থেকে ধর্ষণ ও সামাজিক অপরাধগুলো প্রতিরোধের দায় শুধু পরিবারের নয়। এজন্য সরকারের দায়িত্বশীল মহলকেও কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে। সমাজে ব্যক্তিকেন্দ্রিকতা বেড়ে যাওয়ার কারণেই ধর্ষণের মতো অপরাধগুলো ঘটে চলেছে। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের তথ্যে জানা যায়, গেল সেপ্টেম্ব^রে ৩৪০ জন নারী ও কন্যাশিশু ধর্ষণ ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে। অন্যদিকে যারা ভার্চুয়াল জগতে পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত তাদেরও মাথায় থাকে না যে তারা কোন জগতে আছে। আমাদের বুঝতে হবে যৌনতা সম্মানজনক একটি বিষয়। মানুষের মধ্যে যৌনতা থাকা খুব স্বাভাবিক। কিন্তু কুরুচিপূর্ণ কিছু মানুষ যৌনতাকে এখন বিকৃত পর্যায়ে নিয়ে গেছে।

করোনার কারণে এখন সমাজ কিছুটা ভারসাম্যহীন। আর এর প্রভাব সমাজেও পড়ছে। আবার কিশোর ও তরুণদের বিনোদনের সুযোগ করোনাকালে অনেকটা সংকুচিত হয়ে এসেছে। গ্রামাঞ্চলে সামাজিকীকরণ ব্যবস্থা এখনো ততটা কঠোর নয়। প্রযুক্তির এ যুগে অভিভাবকদের পক্ষে উঠতি ছেলেমেয়ের ওপর নজরদারি করাও বেশ কঠিন। আবার দেশে ধর্ষণ মামলাগুলোয় অপরাধীদের শাস্তি দেওয়ার প্রক্রিয়া ধীরগতিতে হয়।

অপরাধ করে পার পাওয়া যায়- এ ধরনের বিশ্বাস থেকে অপরাধীরা অপরাধকর্মে লিপ্ত হয়। এটা শুধু পেশাদার অপরাধীদের ক্ষেত্রে নয়, যে কোনো সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হতে পারে। তাই ধর্ষণসহ নারীর প্রতি সব ধরনের সহিংস অপরাধের রাশ টেনে ধরার জন্য প্রথম কর্তব্য এসবের বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগে গতি সঞ্চার ও সচেতনতা সৃষ্টি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *