এ মাসেও চালু হচ্ছে না রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র

এ মাসেও চালু হচ্ছে না রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : সঞ্চালন লাইনের কাজ শেষ করেনি ভারতীয় ঠিকাদার
২০২৪ সালের ডিসেম্বরে পাবনার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালুর কথা থাকলেও গ্রিড (সঞ্চালন) লাইন প্রস্তুত না হওয়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে না। প্রথম দফায় পেছানোর পর ২০২৩ সালে বলা হয়েছিল চলতি ডিসেম্বরে প্রথম ইউনিটে উৎপাদন শুরু করা সম্ভব হবে। কিন্তু ৫ আগস্ট-পরবর্তী রাজনৈতিক অস্থিরতায় কয়েক মাস সঞ্চালন লাইনের নির্মাণকাজ বন্ধ থাকায় উৎপাদনে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। সব প্রস্তুতি শেষ করে পরীক্ষামূলক উৎপাদনে যেতে আরও ছয় মাস সময় লাগবে বলে শীর্ষ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

প্রকল্প সূত্র জানায়, বছরখানেক আগেই চুল্লিসহ মূল অবকাঠামোর নির্মাণ শেষ হয়েছে। বিগত বছরের অক্টোবরে পাঁচ দফায় রাশিয়া থেকে জ্বালানির (ইউরেনিয়াম) প্রথম চালানও রূপপুরে পৌঁছেছে। কিন্তু গ্রিডলাইন প্রস্তুত না হওয়ায় বিদ্যুতের উৎপাদন শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না।

নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী, আগামী বছরের মার্চে প্রথম ইউনিটের গ্রিড লাইনের নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা। তবে উৎপাদনে যেতে আরও কয়েক মাস অপেক্ষা করতে হবে। রূপপুর এনপিপির প্রকল্প পরিচালক ড. জাহেদুল হাছান জানান, গ্রিডলাইন রেডি হওয়ার পর উত্পাদনে যাওয়ার আগে প্রয়োজনীয় বেশ কিছু পরীক্ষানিরীক্ষা চালাতে হয়। প্রাথমিক বিভিন্ন পরীক্ষা শেষ করে জ্বালানি লোড করতে দুই মাসের মতো সময় প্রয়োজন হবে। এরপর পরীক্ষামূলক উৎপাদনে যেতে আরও এক মাস সময় লাগবে। আগামী বছরের মার্চের মধ্যে গ্রিড রেডি হলে থার্ড কোয়ার্টারে অর্থাৎ আগস্টে হয়তো টেস্ট ট্রায়ালে যাওয়া সম্ভব হবে। প্রথম ইউনিট চালুর এক বছর পর অর্থাৎ ২০২৬ সালের শেষ দিকে দ্বিতীয় ইউনিটের চুল্লি চালু করা সম্ভব হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

জানা গেছে, বাংলাদেশের পাওয়ার গ্রিড কোম্পানির অধীনে সঞ্চালন লাইন তৈরি করছে ভারতের তিনটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কেইসি ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড, ট্রান্সরেল লাইটিং লিমিটেড এবং লারসেন অ্যান্ড টুব্রো লিমিটেড। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের মধ্যেই সঞ্চালন লাইনের নির্মাণকাজ শেষ করার কথা ছিল।

পিজিসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আবদুর রশিদ খান বলেন, ‘প্রথম ছয় মাসে কাজের অগ্রগতি সন্তোষজনক ছিল। কিন্তু পরে গত জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময়ে আন্দোলনের কারণে সারা দেশে অস্থিরতা তৈরি হয়। সেজন্য সঞ্চালন লাইনের নির্মাণকাজে ধীরগতি দেখা দেয়। আর ৫ আগস্টের পর কাজ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। টানা তিন মাস কোনো কাজ না হওয়ায় আমরা অনেক পিছিয়ে গেছি, যার ফলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে গ্রিড লাইন পুরোপুরি রেডি করা সম্ভব হয়নি। আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে প্রথম ইউনিটের সঞ্চালন লাইনের কাজ পুরোপুরি শেষ করার টার্গেট রয়েছে। আমরা এখন পুরোদমে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। আশা করি ঐ সময়ের মধ্যেই লাইন রেডি হয়ে যাবে।’

প্রসঙ্গত, ১ লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকারও বেশি বাজেটের রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রে তৃতীয় প্রজন্মের ভিভিইআর ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম দুটি ইউনিট রয়েছে।

Related Articles