পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম: সোমবার কাতার ঘোষণা করেছে, গাজায় ইসরাইল এবং হামাসের মধ্যকার যুদ্ধবিরতি আরও দু’দিন বাড়ানো হয়েছে।
পরিকল্পিত চার দিনের যুদ্ধবিরতি মেয়াদ সোমবার শেষ হওয়ার কথা ছিল। আশা করা হচ্ছে ইসরাইল আরও ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেবে এবং হামাস আরও জিম্মি মুক্ত করবে।
এর আগে হামাস ইঙ্গিত দেয়, তারা চুক্তির মেয়াদ বাড়াবে। অন্যদিকে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু রবিবার পুনর্ব্যক্ত করেছেন, ইসরাইল চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধিকে স্বাগত জানাবে যদি হামাস প্রতিদিন আরও ১০ জন করে জিম্মিকে মুক্তি দেয়।
ছয় সপ্তাহের যুদ্ধের পর কার্যকর হওয়া প্রাথমিক চুক্তির অধীনে হামাস ৫০ জন জিম্মিকে মুক্তি দেবে, ইসরাইল ১৫০ জন ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেবে এবং সাময়িক যুদ্ধবিরতি থাকবে।
রবিবার গভীর রাতে জাতিসংঘ জানিয়েছে, মোট ৩৯ জন ইসরাইলি, ১১৭ জন ফিলিস্তিনি এবং ১৯ জন বিদেশী নাগরিককে মুক্তি দেয়া হয়েছে।
চার দিনের যুদ্ধবিরতি সুরক্ষিত করার জন্য কাজ করার পরে তা বর্ধিত করার পক্ষে যারা সমর্থন করেছে তাদের মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, মিশর এবং কাতার।
হোয়াইট হাউস এক বিবৃতিতে বলেছে, বাইডেন এবং নেতানিয়াহু রবিবার একটি ফোন কলে জিম্মিদের মুক্তির বিষয়ে কথা বলেছেন। এতে আরও বলা হয়, তারা যুদ্ধে বিরতি এবং গাজা ভূখণ্ডে অতিরিক্ত মানবিক সহায়তা বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র ১৯৯৭ সালে হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করে। ইসরাইল, মিশর, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জাপানও হামাসকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করে।
অস্থায়ী এই যুদ্ধবিরতি হলো বিদ্যমান সংঘাতে প্রথম বিরতি। ৭ অক্টোবর হামাস ইসরাইলে আকস্মিক হামলা চালালে এই সংঘাত শুরু হয়। ওই হামলায় ইসরাইলে ১২০০ জন নিহত হয় এবং হামাস প্রায় ২৪০ জনকে জিম্মি করে। প্রতিক্রিয়ায় ইসরাইল হামাসকে নির্মূল করার শপথ নেয় এবং গাজায় বিমান হামলা ও স্থল আক্রমণে বোমাবর্ষণ করে। ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা বলেছেন, এতে ১৪ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে, যাদের প্রায় ৪০ শতাংশ শিশু।
বার্সেলোনায় ইইউ পররাষ্ট্র নীতির প্রধান জোসেপ বোরেল চারদিনের যুদ্ধবিরতিকে একটি “গুরুত্বপূর্ণ প্রথম পদক্ষেপ” বলে অভিহিত করেছেন। কিন্তু তিনি বলেছেন, “গাজার ভয়াবহ পরিস্থিতি দূর করতে এবং বর্তমান সংকট থেকে বেরিয়ে আসার জন্য আরও অনেক কিছুর প্রয়োজন।”
যুদ্ধবিরতির ফলে গাজায় অতি প্রয়োজনীয় মানবিক সহায়তার সরবরাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। জাতিসংঘ বলেছে, আনুমানিক ১৭ লাখ মানুষ অর্থাৎ সেখানকার জনসংখ্যার প্রায় তিন-চতুর্থাংশ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
রবিবার গভীর রাতে জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সমন্বয়ের কার্যালয় জানায়, গাজায় রান্নার গ্যাস পৌঁছেছে কিন্তু মানুষের প্রয়োজনের তুলনায় এর পরিমাণ এখনো অনেক কম।