বিবিআইএন চুক্তিতে যোগ দিতে ভুটানকে বাংলাদেশের আহ্বান

বিবিআইএন চুক্তিতে যোগ দিতে ভুটানকে বাংলাদেশের আহ্বান

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম: প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে আঞ্চলিক যোগাযোগ বাড়ানোর মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্য সহজে বিবিআইএন (বাংলাদেশ–ভুটান– ভারত–নেপাল) মোটরযান চুক্তি কাঠামোতে ফের যোগ দিতে ভুটানকে অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ। এ আহ্বানকে ভুটান ইতিবাচকভাবে নিয়েছে। বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে নবম বাণিজ্য সচিব পর্যায়ের বৈঠকে বাংলাদেশ এ আহ্বান জানায়। গত বুধ ও বৃহস্পতিবার ভুটানের থিম্পুতে এ বৈঠক হয়।

শুক্রবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানায়। বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব তপন কান্তি ঘোষ এবং ভুটান প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন দেশটির শিল্প বাণিজ্য ও কর্মসংস্থান সচিব তাশি ওয়াংমো। এতে দুই দেশের রাষ্ট্রদূতরাও অংশ নেন।

২০১৮ সালে বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত ও নেপালের মধ্যে অবাধ গাড়ি চলাচলের যে উদ্যোগ নেওয়া হয়, তা বিবিআইএন নামে পরিচিত। চার দেশের মধ্যে বিবিআইএন মোটর ভেহিক্যালস অ্যাগ্রিমেন্ট (এমভিএ) বা মোটরযান চলাচল চুক্তি হয়। কিন্তু ভুটান চুক্তি বাস্তবায়ন করতে রাজি হয়নি।

বৈঠকে পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়। এর মধ্যে বিশেষ করে বাণিজ্য বাড়াতে শুল্ক ও অশুল্ক বাঁধা দর করা এবং রপ্তানি সুবিধা বাড়ানো, বিনিয়োগ, ট্রানজিট ও যোগাযোগ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সহযোগিতা, পর্যটন, কাস্টমস ও স্থল বন্দরের বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ নিরসনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয়ে উভয় দেশ সম্মত হয়। ১০ম বাণিজ্য সচিব পর্যায়ের বৈঠক পারস্পরিক সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশে অনুষ্ঠানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়।

বৈঠকে অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ) সম্পাদনের ফলে দুই দেশের বাণিজ্যের পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধিতে সন্তুষ্টি প্রকাশ করা হয় এবং উভয় পক্ষ বিদ্যমান বাংলাদেশ ভুটান অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তির আওতায় অতিরিক্ত পণ্য অন্তর্ভুক্ত করার ব্যাপারে সম্মত হয়। বাংলাদেশ ও ভুটান ট্রাফিক ইন ট্রানজিট চুক্তি এবং এর প্রটোকল বাস্তবায়নের জন্য পরীক্ষামূলক রপ্তানি ও আমদানি পরিচালনার জন্য একমত হয়। দুই দেশের কাস্টমস সম্পর্কিত তথ্য ও প্রতিবেদন আদান-প্রদান এবং শুল্ক কর্মকর্তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে পারস্পরিক অভিজ্ঞতা বিনিময় ও সহযোগিতা বাড়াতে উভয় পক্ষই স্বল্পতম সময়ের মধ্যে কাস্টমস মিউচুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্স এগ্রিমেন্ট (সিএমএএ) সই করতে সম্মত হয়েছে।

ভুটান প্রতিনিধি দলের প্রধান মিসেস তাশি ওয়াংমো উল্লেখ করেন, ভুটান বরাবরই নিবিড়ভাবে বাংলাদেশের শিল্প-বাণিজ্যের সমৃদ্ধি এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও অগ্রগতি অনুসরণ করে। করোনা মহামারী, ধীর বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি এবং অন্যান্য ভূ-রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও বাংলাদেশে স্থিতিশীল এবং টেকসই উন্নয়ন দৃশ্যমান গতিতে বাড়ছে।

বাণিজ্য সচিব পর্যায়ের বৈঠকের পাশাপাশি তপন কান্তি ঘোষ ভুটানের শিল্প বাণিজ্য ও কর্মসংস্থানমন্ত্রী নামগেল দর্জি এবং পররাষ্ট্র ও বৈদেশিক বাণিজ্য সংক্রান্ত মন্ত্রী ডি এন ধুঙ্গেলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ভুটানের বিবিআইএন মোটরযান চুক্তিতে পূর্ণ সদস্য হিসেবে পুনঃঅন্তর্ভুক্তির বিষয়টি বিবেচনাধীন এবং এ-সংক্রান্ত কার্যক্রম চলমান।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জেষ্ঠ সচিব ভুটানের ফুয়েন্টশোলিং-এ বিভিন্ন আমদানি-রপ্তানিকারক, ব্যবসায়ী ও বাণিজ্য সংস্থার সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *