গত ২৯ ডিসেম্বর’২৩ ভারতের মুজাফফর নগর সিরাজুল উলুম মাদরাসা মসজিদে জুম’আর বয়ানে ‘ইমান ও আমল’ সংক্রান্ত এক সারগর্ভ বয়ান করেন ভারতের প্রখ্যাত মুফতি, দারুল উলুম দেওবন্দের মুহাদ্দিস মুফতি সালমান মানসুরপুরী হাফিজাহুল্লাহ। বয়ানের সারসংসক্ষেপ পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম -এর পাঠকের জন্য তুলে ধরা হলো-
আল্লাহ তাআলার কাছে সবসময় এজন্য শুকরিয়া করা যে, তিনি আমাদের ইমানের দৌলত দান করেছেন। রাসূল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম একবার হযরত ওমর রা. কে বললেন, ‘যাও মানুষের মাঝে বলো যে, ইমান ছাড়া কেউ মু’মিন নয় আর মুমি’ন ছাড়া কেউ জান্নাতে প্রবেশ করবে না।’ তাই বলা যায় ইমান নিঃসন্দেহে মানুষের জীবনের সবচে’ বড় দৌলত। আর ইমানের বড় একটা শাখা হলো, আখেরাতের উপর পূর্ণ বিশ্বাস রাখা। যেখানে আমাদের এই দুনিয়ার জিন্দেগীর পর পুনরায় জীবিত করা হবে। দুনিয়ার জিন্দেগীর ভালো-মন্দের হিসাব-নিকাশ করা হবে।
রাসূল (সা.) বলেছেন ৭০ শ্রেণীর লোক আছে যাদের যারা বিনা হিসেবে জান্নাতে যাবে। সাহাবা কেরাম জিজেস করেন, এসব লোক কারা? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘তারা হলো সেই সমস্ত লোক যারা আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থাশীল এবং পূর্ণ বিশ্বাস রাখে’।
যে আখেরাতের ক্ষতি করে দুনিয়ায় চলছে তার মত দুঃখী আর কেউ নেই। আর যে আখেরাতের ক্ষতি করেনি সে তো বড়ই ভাগ্যবান।
প্রত্যেকটা মুসলমানের উচিত আখেরাতের প্রতি যত্নশীল হওয়া। দুনিয়া সর্বদা থাকার জায়গা নয়। সবার এটা বোঝা উচিত— যে আখেরাতের ক্ষতি করে দুনিয়ায় চলছে তার মত দুঃখী আর কেউ নেই। আর যে আখেরাতের ক্ষতি করেনি সে তো বড়ই ভাগ্যবান। আল্লাহ আমাদের দুনিয়ায় পাঠিয়েছেন তার ইবাদাত করার জন্য। পাঠিয়েছেন তার শোকরগুজার হওয়ার জন্য। কাজেই আমাদের ‘বন্দেগীময়’ এক জীবন গঠন করতে হবে। বন্দেগী হলো জীবনের প্রতিটা কদমে শরীয়তের মানহাজ অনুযায়ী চলাকে প্রাধান্য দেয়া।
আমাদের উচিৎ, প্রতিদিন নিজের আমলের ব্যাপারে কমপক্ষে পাঁচ মিনিট- চিন্তা-ভাবনা করা। সকল কাজে আল্লাহর শোকর করা। আর নিজের ভুলে আল্লাহর কাছে মাফ চাওয়া। মু’মিন যখন এসব ফিকিরের সাথে চলবে আল্লাহ তা’য়ালা তাকে কল্যাণের দিকে প্রভাবিত করে খারাপ থেকে হেফাজত করবেন। আর গাফলতি থাকলে আমার জন্য, আমার জেন্দেগীর জন্য ক্ষতি ছাড়া কিছুই বাকী থাকবে না। মানুষের ভুল হবে। ভুল পথে পা যাবে। তবে সেখান থেকে ফিরে নিজেকে নিজের পরিবর্তন করতে হবে। এর নামই মানুষ। আর যদি ভুলের মাঝেই থেকে যায়। তাহলে সে নিজেরই ক্ষতি করলো। তাই দুআ করি আল্লাহ তায়ালা আমাদের আখেরাতের পথকে সহজ করুন।
উর্দু থেকে ভাষান্তর: তামিম আব্দুল্লাহ
সম্পাদনা: আব্দুস সালাম ইবন হাশিম