পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : এক নৌকার পদ প্রার্থী দশ নেতা। ঘটনা হাজীগঞ্জ পৌরসভার নির্বাচন কেন্দ্র করে। আগামী ৩০ জানুয়ারি হাজীগঞ্জ পৌরসভার নির্বাচন। ওই নির্বাচনকে ঘিরে মেয়র পদে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ১৪ প্রার্থীর বিপরীতে বিএনপির ৩ প্রার্থী দলীয় মনোনয়ন পেতে আগ্রহী। ইতোমধ্যে ওইসব নেতা কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতাদের মন জয়ের চেষ্টা চালাচ্ছেন। যদিও এখনো কোনো প্রার্থীই দলীয় সিগনাল পাননি বলে জানা গেছে।
গত ১৪ ডিসেম্বর তৃতীয় ধাপের পৌর নির্বাচনের যে তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে, সে অনুযায়ী হাজীগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনের মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ৩১ ডিসেম্বর। যাচাই-বাছাই ৩ জানুয়ারি। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১০ জানুয়ারি এবং ভোটগ্রহণ ৩০ জানুয়ারি।
স্থানীয় আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২-৩ দিনের মধ্যেই হয়ত জানা যাবে কে হচ্ছেন হাজীগঞ্জ পৌরসভায় নৌকার মাঝি। তবে নতুন মুখ নাকি পুরোনোই থাকছে, তা নিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মাঝে চলছে চুলচেড়া বিশ্লেষণ। যদিও স্ব-স্ব প্রার্থীর পক্ষে তাদের শুভাকাঙ্খিরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুকে) নানাভাবে ছবি পোস্ট করে সরগমর রেখেছেন নির্বাচনী মাঠ। পাশাপাশি পৌষের প্রচন্ড শীতের রাতেও চায়ের দোকানে চলছে জমজমাট আড্ডা। প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকদের মাঝে চলে বাগযুদ্ধ। প্রতীক প্রাপ্তির পূর্ব পর্যন্ত এমন বাগবিতন্ডা চলতেই থাকবে বলে জানান কর্মী-সমর্থকরা। তবে কর্মী-সমর্থকদের একটাই কথা, দলীয় প্রতীক যে পাবে তার পক্ষেই কাজ করবে সবাই।
হাজীগঞ্জ পৌরসভা মূলত আওয়ামী লীগ অধ্যুষিত এলাকা। এখানে বরাবরের মতো আওয়ামী লীগের ভোটই বেশি। পৌরসভার এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার ৪৫ হাজার ৩৪৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২২ হাজার ৯৫৫ জন এবং নারী ২২ হাজার ৩৯৩ জন।
জানা গেছে, গত ৫ ডিসেম্বর হাজীগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের বর্ধিতসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই সভায় মেয়র পদে নৌকা প্রতীকের মনোনয়নপ্রত্যাশী ১৪ জনের নাম শোনা যায়। তারা হলেন- বর্তমান মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আসম মাহবুব-উল আলম লিপন, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আহম্মদ খসরু, সাবেক উপজেলা ও পৌর চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুর রশিদ মজুমদার, জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ও পৌর আওয়ামী লীগের সদস্য রোটা আহসান হাবিব অরুন, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম ফারুক মুরাদ, জেলা আওয়ামী লীগ ও পৌর আওয়ামী লীগের সদস্য খালেদুর রব মিঠু, পৌর আওয়ামী লীগের সদস্য ও পৌর যুবলীগের আহ্বায়ক হায়দার পারভেজ সুজন, পৌর মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফেরদৌসি আক্তার, সজিব ওয়াজেদ জয় পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি আলী আশ্রাফ, জেলা মহিলা যুবলীগের সদস্য শিউলী আক্তার, পৌর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি জাকির হোসেন মোহন, অধ্যাপক মো. সেলিম ও হাজি আবদুল মান্নান।
তবে দলীয়ভাবে একক প্রার্থী এখনো চূড়ান্ত হয়নি জানিয়ে চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল আমাদের সময়কে বলেন, দলীয় প্রার্থী হতে যারা আগ্রহ প্রকাশ করেছেন, তারা সবাই মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করছেন। সবশেষে কেন্দ্রীয় কমিটি সভা করে চূড়ান্ত একক প্রার্থী ঘোষণা করবে।
অন্যদিকে বিএনপি থেকে এখনো একক প্রার্থী হিসেবে আবদুল মান্নান খান বাচ্চুর নামই শোনা যাচ্ছে। তবে জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক, প্রবীণ রাজনীতিবিদ হাজি ইমাম হোসেন ও উপজেলা বিএনপি নেতা হেলাল উদ্দিন মজুমদারও বিএনপি থেকে ধানের শীষের মনোনয়ন প্রত্যাশী বলে জানা গেছে।
উপজেলা বিএনপির একাধিক নেতাকর্মী জানান, নির্বাচনের প্রতি স্থানীয় নেতাকর্মীদের তেমন আগ্রহ নেই। এ কারণেই আরও একাধিক যোগ্য নেতা থাকলেও লোক দেখানোর নির্বাচনে প্রার্থী হতে চাচ্ছে না। এর পরও দলীয় সিদ্ধান্তের কারণে কেউ কেউ রাজি হয়েছেন।
প্রার্থিতা চূড়ান্ত প্রসঙ্গে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক আমাদের সময়কে বলেন, দলীয়ভাবে আমরা এখনো প্রার্থী চূড়ান্ত করিনি। তবে স্থানীয় নেতাকর্মীর মতামতের ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় সহসাই দলীয় একক প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে।
/এএ