অনন্য উচ্চতায় প্রধানমন্ত্রী

অনন্য উচ্চতায় প্রধানমন্ত্রী

অনন্য উচ্চতায় প্রধানমন্ত্রী

পাথেয় টোয়েন্টিপোর ডটকম : বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার পথে বিদেশিদের সহযোগিতার কথা প্রায় সবারই জানা। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশও বিশ্বকে সহযোগিতা করছে। যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বাজারের ওপর বাংলাদেশের পোশাকশিল্প নির্ভরশীল, সেই ইইউর একটি উদ্যোগে এ সপ্তাহেই ৫০ হাজার মার্কিন ডলার দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ। করোনাভাইরাস মহামারির সময় বাংলাদেশ কেবল নিজের কথাই নয়, প্রতিবেশী দেশগুলোর কথাও চিন্তা করেছে। সার্ক দেশগুলোর জন্য ১৫ লাখ মার্কিন ডলার অনুদান ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ। ফিলিস্তিনের মতো রাষ্ট্রের জন্য গত কয়েক বছর ধরেই ইসলামী সহযোগিতা সংস্থাকে (ওআইসি) অর্থ সহায়তা দিচ্ছে বাংলাদেশ।

শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক, উপ-আঞ্চলিক, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশ যেন অন্য এক দেশ। জাপানের মতো দেশকেও জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্য হতে বাংলাদেশের সমর্থন নিতে হয়েছে। আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ফোরামগুলোতে বাংলাদেশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। স্বল্পোন্নত দেশ, জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর নেতৃত্বের আসনে আছে বাংলাদেশ। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ দেখিয়েছে, তার বন্ধুর অভাব নেই। সবাই এখন বাংলাদেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে চায়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কিভাবে একই সঙ্গে ভারত ও চীন—দুই দেশের সঙ্গে অত্যন্ত সুসম্পর্ক রাখছেন তা নিয়ে বিস্মিত পশ্চিমা অনেক কূটনীতিকও। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, শেখ হাসিনার সরকারের পররাষ্ট্রনীতিই বাংলাদেশকে এ অবস্থানে নিয়ে এসেছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ কারো শত্রু নয়। সবার বন্ধু। আবার একই সঙ্গে বাংলাদেশ কারো লেজুড়বৃত্তিও করে না। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ তার সিদ্ধান্তগুলো নেয় নিজের স্বার্থের কথা বিবেচনা করে। চীন ও ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বাংলাদেশ কখনো যুক্ত হয় না। অন্যের ভৌগোলিক সীমারেখাকে বাংলাদেশ সম্মান করে। জাতিসংঘ সনদে যে নীতিগুলোর কথা বলা আছে তা বাংলাদেশ অনুসরণ করে।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, শেখ হাসিনার সরকারের কূটনীতিতে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক আমূল বদলে গেছে। অতীতে বিভিন্ন সময় ভারতের সঙ্গে যে অনাস্থা ও অবিশ্বাসের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল সেটি ২০০৯ সালে শেখ হাসিনার সরকার পুরোপুরি দূর করেছে। বাংলাদেশ তার ভূখণ্ড ভারতের বিরুদ্ধে ব্যবহার হতে দেয় না। বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক এখন সহযোগিতা ও কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলার।

শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ ভারতের সঙ্গে গঙ্গার পানিবণ্টন চুক্তি, ছিটমহল বিনিময়, স্থলসীমান্ত ও সমুদ্রসীমা সমস্যার সমাধান করেছে। এ ছাড়া আরো কিছু ইস্যু নিষ্পত্তির লক্ষ্যে কাজ করছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, শুধু ভারত নয়, প্রতিবেশী মিয়ানমারের সঙ্গেও সমস্যাগুলো বাংলাদেশ আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করেছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিবেশী রাষ্ট্র নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপের উন্নয়নের জন্য কাজ করেছে।

মন্ত্রী বলেন, ‘যেখানে সুযোগ আছে আমরা সাহায্য করি। যেমন নেপাল ও ভুটানের জন্য আমরা ভারতকে অনুরোধ করে অনুমোদন করিয়েছি। ইসলামিক দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক খুব ভালো। একইভাবে বড় রাষ্ট্রগুলো যেমন আমেরিকা, ইইউ তাদের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক বাংলাদেশের।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে শেখ হাসিনার বিশ্বে গ্রহণযোগ্যতা আছে। এটি বাংলাদেশকে কূটনীতিতে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে গেছে। সবাই জানেন যে তিনি তাঁর মা-বাবাসহ প্রায় পুরো পরিবারকে হারিয়েছেন। তাঁকে হত্যা করতে অসংখ্যবার হামলা হয়েছে। তিনি এখন কাজ করছেন দেশের ও দেশের জনগণের জন্য।

মন্ত্রী বলেন, ‘কূটনীতিতে আমরা এখন যথেষ্ট শক্ত অবস্থানে আছি। আমরা কারো লেজুড় নই। আমাদের ওপর বিভিন্ন লোক বিভিন্নভাবে চাপ দিতে পারে। কিন্তু আমরা দেশের স্বার্থে যা ভালো তা-ই করব।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের যেখানেই নির্বাচন হয় সেখানেই বাংলাদেশ জয়ী হয়। সবাই মনে করে, বাংলাদেশকে বিশ্বাস করা যায়। অনেকের নীতি ভালো হতে পারে। কিন্তু নীতির নেপথ্যের ব্যক্তিটি কেমন তাঁর ওপর অনেক কিছু নির্ভর করে। এ ক্ষেত্রে শেখ হাসিনা অনন্য। তিনি যা বলেন তা করে দেখান। তিনি ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে তাদের প্রাণে বাঁচিয়ে দিয়েছেন। এতে করে তিনি বিশ্ব নেতাদেরও মানসম্মান বাঁচিয়েছেন।

দীর্ঘদিন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে এসে বর্তমানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন বলেন, শেখ হাসিনার অর্জন ও জাতিসংঘের অর্জন এক হয়ে গেছে। জাতিসংঘ খুব খুশি। কারণ শেখ হাসিনার কারণেই জাতিসংঘের অনেক কর্মসূচি যেমন মাতৃমৃত্যু, শিশুমৃত্যু, দারিদ্র্য কমানো এগুলো সফল হয়েছে। অন্য অনেক দেশ করার চেষ্টা করে। কিন্তু শেখ হাসিনা যা বলেন তা করে দেখান।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এই মহামারির মধ্যেও বাংলাদেশে ভূমির ক্ষেত্রে ডিজিটাল ব্যবস্থাপনার স্বীকৃতি এসেছে জাতিসংঘ থেকে। আমরা জমির পরচা পর্যন্ত ইলেকট্রনিক্যালি দিচ্ছি। জাতিসংঘের এই স্বীকৃতির আগেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা আফ্রিকায় গিয়ে বলেছিলেন, তোমরা বাংলাদেশের দিকে তাকাও। দেখ ডিজিটালি বাংলাদেশ কত এগিয়ে যাচ্ছে! এটি সফল হয়েছে শেখ হাসিনার কারণেই। তিনিই ২০০৮ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *