নড়াইল প্রতিনিধি : ছায়া-শীতল পথ, বন, জলরাশি, পাখির কলতানÑ জায়গাটিতে পা দেওয়া মাত্র মন ভালো হয়ে যাবে যে-কারও। জায়গাটির নাম পানিপাড়া। ছোট্ট একটি গ্রাম। নড়াইলের কালিয়া উপজেলায় অবস্থিত। নড়াইল-গোপালগঞ্জ সীমান্তে নাব্যতা হারানো মধুমতী নদীর তীরে অবস্থিত পানিপাড়া গ্রামে এক অপরূপ সৌন্দর্য এসে ধরা দেয়।
স্থানীয় লোকজন জানান, নিরিবিলি পরিবেশ আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কারণে গ্রামটিতে দেশি-বিদেশি পর্যটকেরা আসছেন। যে-কেউ গ্রামটি দেখে মুগ্ধ হয়ে যান। সারা বছরই দেশ-বিদেশের নানা জাতের পাখির বিচরণ আর কলতানে এলাকার মানুষের ঘুম ভাঙে।
গোপালগঞ্জের মানিকদহ গ্রামের গৌতম দাস তার পরিবার নিয়ে বেড়াতে এসেছিলেন পানিপাড়া গ্রামে। তিনি বলেন, পুরো গ্রামটি এত সবুজ যে মন ভালো হয়ে যায়। চারপাশ খুবই সুন্দর। বিশেষ করে এখানের পাখি দেখতে সবচেয়ে ভালো লেগেছে। এটা যেন পাখির অভয়াশ্রম। দেশ-বিদেশের নানা পাখি উড়ে বেড়ায়। দেখতে বেশ লাগে।
একই জেলার কাশিয়ানী উপজেলার ভাটিয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা রেশমা খাতুনও সপরিবারে এসেছেন পানিপাড়া গ্রামের সৌন্দর্য উপভোগ করতে। উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে তিনি বলেন, এর আগেও অনেক জায়গায় গিয়েছি। তবে এমন শান্ত পরিবেশ খুব কমই দেখেছি।
পানিপাড়া গ্রামে পৌঁছাতে হলে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া অথবা মাওয়ায় পদ্মা নদী পার হয়ে ভাঙা-ভাটিয়াপাড়া হয়ে দিঘলিয়া বাসস্ট্যান্ডে নামতে হবে। সেখান থেকে অটোরিকশায় করে মধুমতী নদীর পাড়ে যেতে হবে। অথবা গোপালগঞ্জ পুলিশ লাইন মোড়ে নেমে সিএনজিচালিত অটোরিকশা অথবা ব্যক্তিগত গাড়িতে করে শহরের মধ্য দিয়ে মধুমতী নদীর চাপাইল সেতু পার হয়ে সরাসরি পানিপাড়া গ্রামে পৌঁছানো যায়।
ঢাকা থেকে সেখানে যেতে হলে গুলিস্তান থেকে টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেস, ইমাদ, দোলা, ফাল্গুনী, সেবা, গ্রিনসহ নানা ধরনের পরিবহন পাওয়া যায়। ওই পরিবহনগুলো মাওয়া-ভাটিয়াপাড়া হয়ে খুলনাসহ দক্ষিণ বঙ্গের নানা জেলায় যায়। রাজশাহী, বগুড়া, রংপুর, পাবনা, দিনাজপুরসহ অন্যান্য জেলার বাসিন্দাদের জন্যও পানিপাড়া গ্রামে পৌঁছানোর পথ সহজ। সরাসরি যশোর মনিহারের সামনের রাস্তা দিয়ে নড়াইল-কালনা ফেরি পার হয়ে দিঘলিয়া বাসস্ট্যান্ডে নামতে হবে।
পর্যটকদের জন্য পানিপাড়া গ্রামে থাকারও ব্যবস্থা রয়েছে। সেখানের অরুণিমা রিসোর্ট গলফ ক্লাবের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক ইরফান আহম্মেদ বলেন, ১৮ একর জমির ওপর সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক পরিবেশে গড়ে তোলা হয়েছে তাদের রিসোর্ট গলফ ক্লাব। ক্লাবে অনেকগুলো মানসম্মত শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এবং সাধারণ আবাসিক ভবন রয়েছে। রুচিসম্মত খাবারের ব্যবস্থা রয়েছে। তিনি বলেন, পানিপাড়া গ্রামে একবার এলে যে-কারও বারবার আসতে মন চাইবে।