পাথেয় রিপোর্ট : আসন্ন জাতীয় একাদশ নির্বাচন অবাধ, স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য ভাবে অনুষ্ঠিত হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মধ্যে আগামী নির্বাচন নিয়ে দ্বিতীয় দফা সংলাপে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১৪ দলীয় জোটের ১১ সদস্য সংলাপে অংশ নেন। এই প্রতিনিধিদলের অন্যান্য সদস্যগণ হলেন- ওবায়দুল কাদের, আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, মোহাম্মদ নাসিম, রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, অ্যাডভোকেট আনিসুল হক, ডা. দীপু মনি এবং অ্যাডভোকেট শ. ম. রেজাউল করিম।
অপরদিকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের (জেওএফ) আহবায়ক ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে- আ স ম আব্দুর রব, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, মোস্তফা মহসিন মন্টু, অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, মাহমুদুর রহমান মান্না, এস এম আকরাম, আব্দুল মালেক রতন এবং সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ সংলাপে অংশ নেন।
সংলাপ থেকে বের হয়ে এসে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সংবাদিকদের বলেন, নির্বাচন ইস্যুতে উভয় পক্ষের মধ্যে আলোচনা চলবে, তবে জেওএফ-এর সঙ্গে সংলাপ শেষ হয়েছে। তিনি বলেন, অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ ও আন্তরিক পরিবেশে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। কোন আনুষ্ঠানিক সংলাপ ছাড়াই তারা একে-অপরের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রাখতে উভয়পক্ষ সম্মত হয়েছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, গণভবনে তিন ঘন্টাব্যাপী সংলাপে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘অবাধ, স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমরা বিশ্বের সামনে আমাদের অঙ্গীকার তুলে ধরতে চাই।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী তাঁর সমাপনী বক্তব্যে তাদের ভোটে অংশ নেয়ার অনুরোধ জানিয়ে বলেছেন, অবাধ ও স্বচ্ছ নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমরা যা বলেছি তা সত্যে পরিণত করে দেখাবো। তিনি বলেন, জেওএফ আজ বর্তমান সরকারের মেয়াদ ২০১৯ সালের ২৮ জানুয়ারি শেষ হওয়ার পরে পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে ১০ সদস্যের নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সংসদ নির্বাচনের প্রস্তাব নিয়ে এসেছে। তবে ১৪ দলীয় জোট জেওএফ’র এই প্রস্তাব প্রত্যাখান করেছে। কারণ, এটি সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক এবং এই পরিস্থিতিতে কোন অশুভ চক্র গোলযোগ সৃষ্টি ও অনাধিকার প্রবেশের সুযোগ নিতে পারে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী ঐক্যফ্রন্টের ৭ দফার বেশিরভাগ দাবি মেনে নিতে সম্মত হয়েছেন। নির্বাচনে সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত ও নির্বাচন পর্যবেক্ষণে বিদেশী পর্যবেক্ষকের ব্যবস্থা করা হবে। প্রধানমন্ত্রী আইনমন্ত্রীকে বিএনপি’র প্রকৃত রাজনৈতিক মামলাগুলো দেখতে বলেছেন। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে তাদের (ঐক্যফ্রন্ট) অধিকাংশ দাবি মেনে নিতে তাঁর কোন আপত্তি নেই।
উল্লেখ্য, সংলাপে বসার জন্য সকাল ১০টা ২৩ মিনিটে ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য সুলতান মোহাম্মদ মনসুরকে সঙ্গে নিয়ে প্রথমে গণবভনে প্রবেশ করেন ড. কামল হোসেন। এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিতীয় দফা সংলাপে অংশ নিতে বুধবার সকাল পৌনে ১০টায় ড. কামাল হোসেনের বেইলি রোডের বাসা থেকে রওয়ানা করেন তারা। তার কিছু পরই বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ গণভবনে প্রবেশ করেন। এরপর সংলাপের জন্য গণভবনে প্রবেশ করেন জেএসডির সভাপতি আ স ম আব্দুর রব, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণফোরামের কার্যকরী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক রতন ও নাগরিক ঐক্যের উপদেষ্টা এস এম আকরাম প্রমুখ।