অভিযানের প্রস্তুতি রাফায়, গাজাবাসী কোথায় যাবে জানে না

অভিযানের প্রস্তুতি রাফায়, গাজাবাসী কোথায় যাবে জানে না

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম: ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু হামাসের বিরুদ্ধে আরো বড় ধরনের আক্রমণ চালাবে। তাই তিনি দক্ষিণ গাজার রাফাহ শহর থেকে বেসামরিক নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য সেনাবাহিনীকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযান থেকে বাঁচতে গাজার প্রায় ১.৫ মিলিয়ন ফিলিস্তিনি রাফায় আশ্রয় নিয়েছে। ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনআরডাব্লিউএ-এর প্রধান ফিলিপ লাজারিনি জেরুজালেমে সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘রাফাহর পর কোথায় যেতে হবে তা গাজাবাসী জানে না।

এদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে সতর্ক করে বলেছে, রাফাহ আক্রমণ করলে বিপর্যয় ঘটবে। আবার ইইউ এবং জাতিসংঘ উভয়ই এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ত্রাণ সংস্থাগুলো বলছে, শহর থেকে সবাইকে সরিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু নেতানিয়াহুর অফিস শুক্রবার একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে।

সেখানে সামরিক ও নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের তিনি বলেছেন, গাজা থেকে জনসংখ্যা সরিয়ে নেওয়া এবং হামাসকে ধ্বংস করার জন্য একটি সম্মিলিত পরিকল্পনা মন্ত্রিসভায় জমা দিতে।

বিবৃতিতে আরো যোগ করা হয়েছে, ‘হামাসকে নির্মূল না করে এবং রাফায় অবস্থিত চারটি হামাস ব্যাটালিয়ন রেখে যুদ্ধের লক্ষ্য অর্জন করা অসম্ভব। বিপরীতভাবে রাফায় তীব্র অভিযান চালানোর জন্য বেসামরিকদের যুদ্ধের এলাকাগুলো থেকে সরিয়ে নেওয়া প্রয়োজন।’ নেতানিয়াহু এর আগে ইসরায়েলি সেনাদের রাফায় অভিযান চালানোর জন্য প্রস্তুত হওয়ার নির্দেশ দেন এবং বলেন, হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের সম্পূর্ণ বিজয় মাত্র কয়েক মাস দূরে।

হামাসের সর্বশেষ প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতির শর্ত প্রত্যাখ্যান করে তিনি এ মন্তব্য করেন।

সংবাদমাধ্যম বিবিসি এর আগে জানতে পেরেছিল, উভয় পক্ষের মধ্যে আলোচনা এখন আটকে আছে। রাফাহ শহরের অধিকাংশ মানুষ গাজার অন্যান্য অংশে যুদ্ধের কারণে বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং তাঁবুতে বসবাস করছে।

এদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ কূটনীতিক জোসেপ বোরেল সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্টে লিখেছেন, ‘রাফাহতে ইসরায়েলি সামরিক হামলার প্রতিবেদন উদ্বেগজনক। এমনটা ঘটলে বিপর্যয়কর অবস্থার সৃষ্টি হবে, কারণ ইতিমধ্যেই ভয়াবহ মানবিক পরিস্থিতি বিরাজ করছে এবং এ হামলায় অসংখ্য বেসামরিক মানুষের ক্ষতি হবে।

চলতি সপ্তাহের শুরুতে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও মানবিক বিপর্যয় সম্পর্কে সতর্ক করেছিলেন। তাঁর মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক বলেছিলেন, ‘রাফায় বেসামরিক নাগরিকদের ভাগ্য নিয়ে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন… আমি মনে করি, মানুষদের রক্ষা করা দরকার, আমরা কোনো জোরপূর্বক গণবাস্তুচ্যুতি দেখতে চাই না।’ গার্দা আল-কোর্দ নামে দুই সন্তানের মা যুদ্ধের সময় ছয়বার বাস্তুচ্যুত হয়েছিলেন। তিনি বলেন, তিনি আশা করছেন, এটা হওয়ার আগে যুদ্ধবিরতির চুক্তি হবে।

গতকাল শুক্রবার গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় রাফায় আটজনসহ অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। ইসরায়েল তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি।

সূত্র : বিবিসি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *