অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম

অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম:  দেশের বিভিন্ন জেলায় অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে পেঁয়াজের দাম। কোথাও কোথাও একদিনের ব্যবধানে কেজিতে দাম বেড়েছে ৪০-৫০ টাকা। হঠাৎ পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন সাধারণ ক্রেতারা।

জয়পুরহাট: সবজির দামে কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও জয়পুরহাটের হাট-বাজারগুলোতে হঠাৎ করেই পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন ক্রেতারা। খুচরা বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১২০ টাকা কেজি। ক্রেতা আলম হোসেন জানান, সবজির দাম কিছুটা কমলেও আদা, রসুন ও পেঁয়াজের বাজারে আগুন লেগেছে।

ঈশ্বরদী (পাবনা): ঈশ্বরদীসহ আশপাশের হাট-বাজারে এক সপ্তাহ আগে পেঁয়াজ খুচরা বাজারে ৬০-৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। গত ৮ ফেব্রুয়ারি দাম বেড়ে ৯০ টাকা, ৯ ফেব্রুয়ারি ১০০ টাকা এবং শনি ও রবিবার দেশি মুড়িকাটা পেঁয়াজ ১৪০-১৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হতে দেখা গেছে। অর্থাৎ ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে দাম বেড়েছে কেজিতে ৪০-৫০ টাকা। তবে ভারতীয় লাল রঙের জাত ‘সুখসাগর’ পেঁয়াজের কেজি ১০০ টাকা। আড়তের পাইকারি বাজারে শনিবার ১২০-১৩০ টাকা কেজিতে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে। খুচরা দোকানি ইসমাইল সরকার বলেন, পেঁয়াজ বিক্রি করছি ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি দরে। পাঁচ-সাত দিনের ব্যবধানে প্রায় ডাবল দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুবীর কুমার দাশ বলেন, কৃষক পর্যায় থেকে পেঁয়াজ বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে। এ কারণে বাজারে পেঁয়াজের দাম বাড়তি। আশা করা যায় সপ্তাখানেকের মধ্যে চারা পেঁয়াজ ওঠা শুরু হবে। বাজারে নতুন পেঁয়াজ আসলে দাম কমে আসবে।ব্যবসায়ীরা যাতে পেঁয়াজ মজুত করে মূল্য বৃদ্ধি করতে না পারে সে বিষয়ে উপজেলা প্রশাসন ও ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে।

বাগমারা (রাজশাহী): বাগমারার হাট-বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ কম থাকায় দাম চড়া। উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, এলাকার কৃষকের ঘরে ঘরে শত শত মেট্রিক টন পেঁয়াজ মজুত আছে। চাষিরা বেশি দামের আশায় অল্প অল্প করে বাজারে ছাড়ছে। অপরদিকে ব্যবসায়ীরাও আরও বেশি দাম পাওয়ার আশায় পেঁয়াজগুলো তাদের নিজস্ব গুদামে মজুত রাখা শুরু করেছে । ফলে পর্যাপ্ত উৎপাদন হলেও পেঁয়াজের দাম কমছে না। বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ১১০ থেকে ১২০ টাকা। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আব্দুল রাজ্জাক বলেন, এ উপজেলায় চাহিদার চেয়ে অতিরিক্ত পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে। এখনো মাঠ থেকে পেঁয়াজ উত্তোলন চলমান রয়েছে। এ পেঁয়াজ চাষিরা আস্তে আস্তে ছাড়ছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার উজ্জ্বল হোসেন জানান, চাল ও পেঁয়াজ সহ কিছু নিত্যপণ্যের বাজার অস্থিতিশীল। বিষয়টি মনিটরিং ও জেলা প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে।

ফুলবাড়ী (দিনাজপুর): ফুলবাড়ীতে বাজারে সরবরাহ কম হওয়ার অজুহাতে তিন দিনের ব্যবধানে পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ৩০ টাকা বেড়ে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শুক্রবার সকাল ১০টার আগ পর্যন্ত ফুলবাড়ীর পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম ছিল প্রতি কেজি ৮৫ থেকে ৯০ টাকা। আর খুচরা বাজারে ৯৩ থেকে ৯৫ টাকা। কিন্তু সাড়ে ১০টার পর হঠাৎ করে পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে ১০৫ থেকে ১১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি শুরু করা হয়। এ সময় খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে কোনো পাইকারি ব্যবসায়ী পেঁয়াজ বিক্রি না করে তারা নিজেরাই খুচরা বিক্রি করেছেন। এরপর থেকে পেঁয়াজের দাম বেড়েই চলেছে।

পেঁয়াজের আরেক পাইকারি ব্যবসায়ী দীপক কুমার বলেন, আগাম পেঁয়াজ শেষের দিকে এবং সরবরাহ কম থাকায় পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসলে পেঁয়াজের দাম কমে আসবে। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মাদ আবু জাফর আরিফ চৌধুরী বলেন, পেঁয়াজের বাজারের অস্থিরতা কাটাতে নিয়মিতভাবে বাজার মনিটরিংসহ ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *