‘আইপিএল জুয়া’ রুখতে আইনি পদক্ষেপ নিন

‘আইপিএল জুয়া’ রুখতে আইনি পদক্ষেপ নিন

‘আইপিএল জুয়া’ রুখতে আইনি পদক্ষেপ নিন

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : অসাধুরা সবসময় তৎপর থাকে। এবার করোনার মতো থাবার পর খেলা শুরু হতে বিলম্ব হলেও দমে যায়নি জুয়াড়িরা। আইপিলকে সামনে রেখে তাদের মিশন সচল। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) ক্রিকেট এ দেশেও বেশ জনপ্রিয়। এখন আইপিএল মৌসুম। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) ক্রিকেট এ দেশেও বেশ জনপ্রিয়। এখন আইপিএল মৌসুম। জনপ্রিয় এই লিগের খেলা নিয়ে জুয়ার দান পড়ছে বেশ। জুয়ায় অংশ নিয়ে নিঃস্ব হতে হয়েছে অনেককে। হবিগঞ্জের এক জুয়েলারি ব্যবসায়ী নিঃস্ব হয়ে এলাকা ছেড়ে শ্বশুরবাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। শেরপুর সদর উপজেলার এক ব্যক্তি জুয়া খেলতে গিয়ে সর্বস্বান্ত হয়েছেন। নিজের ট্রাক বিক্রি করে এখন তিনি অন্যের ট্রাকচালক। এ জুয়ার আসর বসছে সারা দেশে। বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ কিছু ধরপাকড় করলেও জুয়া বন্ধ হচ্ছে না।

ভদ্রলোকের খেলা হিসেবে খ্যাত ক্রিকেটের গায়ে জুয়ার কলঙ্ক লেগেছে বেশ আগেই। ম্যাচ গড়াপেটা বা স্পট ফিক্সিংয়ে জড়িয়ে ক্যারিয়ার বরবাদ হয়েছে অনেক খেলোয়াড়ের। জুয়া শুধু খেলোয়াড় বা কর্মকর্তার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেনি, দর্শকরাও নানাভাবে জড়িয়ে গেছে। টেলিভিশনে খেলা দেখে বাজি ধরছে বাংলাদেশের দর্শকরাও। আইপিএল বেশি জনপ্রিয় হওয়ায় একে নিয়ে জুয়াও হয় অনেক বেশি। জুয়ায় অংশ নিয়ে নিঃস্ব হয়েছে অনেকে এবং এখনো হচ্ছে। শহর থেকে গ্রামের পাড়া-মহল্লা, চায়ের দোকান থেকে অভিজাত এলাকার বিভিন্ন ক্লাব, ফোন বা অনলাইনে প্রকাশ্যে চলে এ জুয়া। বেটিং সাইটের অ্যাপস দিয়েও জুয়া খেলা হচ্ছে।

জুয়ার টাকা নিয়ে বিরোধের জের ধরে হামলা, সংঘর্ষ, এমনকি খুনের ঘটনাও ঘটছে। জুয়া আইনত নিষিদ্ধ। সম্প্রতি দেশের কয়েকটি এলাকায় আইপিএল জুয়া ভয়াবহ আকার ধারণ করায় অভিযানে নেমেছে পুলিশ ও র‌্যাব। কয়েকটি জেলায় বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বেশ কয়েক জায়গায় মাইকিং করে আইপিএল জুয়ার বিষয়ে সতর্ক করেছে পুলিশ। তার পরও বন্ধ হচ্ছে না জুয়া। পুলিশের ভয়ে খেলার ধরন ও কৌশল বদলেছে জুয়াড়িরা। রাজধানীর খিলক্ষেত, তেজগাঁও, নাখালপাড়া, মোহাম্মদপুর, মিরপুর, মালিবাগ, শান্তিনগর, পুরান ঢাকার কোতোয়ালি, বংশাল, লালবাগ, কামরাঙ্গীর চরসহ কয়েকটি এলাকায় সন্ধ্যার পর দোকানে-ক্লাবে আইপিএল জুয়া চলে। সবচেয়ে বেশি টাকার জুয়া হয় মতিঝিল, উত্তরা, গুলিস্তান ও পুরান ঢাকার ক্লাবগুলোতে। পাড়া-মহল্লার ক্লাব-দোকানের আড্ডায়ও চলছে বাজি ধরা। কিছু অনলাইন জুয়ার সাইটেও আইপিএলকেন্দ্রিক জুয়া খেলা চলছে।

২০১৬ সালে ১২টি ওয়েবসাইট শনাক্ত করেছিল ডিএমপি ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। পরে বিটিআরসি সাইটগুলো বন্ধ করে দেয়। র‌্যাব ও পুলিশ সম্প্রতি এ ব্যাপারে তৎপর হয়েছে। কিন্তু জুয়া যেভাবে ছড়িয়ে পড়েছে সেই তুলনায় তাদের তৎপরতা খুবই কম। আমরা আশা করি, সর্বনাশা এই জুয়াখেলা বন্ধ করতে তাদের তৎপরতা আরো বাস্তব পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *