পাথেয় রিপোর্ট : হঠাৎ করেই যেন দাপুটে শীত। শীতের দাপটে রীতিমতো জবুথবু মানুষ। সারাদিন ঝিরঝির বৃষ্টি। আকাশে পুরোদস্তোর মেঘ। সাধারণত বাংলাদেশে নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকেই শীত পড়তে শুরু করে। ডিসেম্বরে তা পূর্ণতা পায়। জানুয়ারির শেষে শীতের তীব্রতা কমে। এবার প্রকৃতিতে নিয়ম মেনেই একটু একটু করে শীত আসছে। পৌষের শুরুতেই শীতের অনুভূতি পাচ্ছে মানুষ।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘ফেথাই’-এর প্রভাবে আজ বুধবারও সারাদেশে বৃষ্টিপাত এবং কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। বৃষ্টিপাত এবং কুয়াশা বৃদ্ধির সঙ্গে রাতের তাপমাত্রাও কিছুটা কমবে। ফলে শীতের প্রকোপ বাড়বে। আবহাওয়া অফিস সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায়; ঢাকা, বরিশাল ও ময়মনসিংহ বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং খুলনা, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের দু’এক জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
দেশের কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। আর সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা ১-৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস হ্রাস পেতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা ১-২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেতে পারে।
আবহাওয়া অফিস বলছে, আগামী দুইদিনে রাতের তাপমাত্রা আরও হ্রাস পেতে পারে। বর্ধিত পাঁচদিনের আবহাওয়ার অবস্থায় বলা হয়েছে, এই সময়ে সামান্য পরিবর্তন হতে পারে।
ঢাকায় ৬ মিলিলিটার, ময়মনসিংহে ১৭, চট্টগ্রামে সামান্য, সিলেটে ১৯, বরিশালে ৪, খুলনায় ২, রংপুরে ৭ ও রাজশাহীতে ১৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ২৪ ঘণ্টায়। এদিকে বৃষ্টির কারণে তাপমাত্রাও কমতে শুরু করেছে। সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কিশোরগঞ্জের নিকলীতে ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।
এছাড়া ঢাকায় ছিল ১৭ দশমিক ১, ময়মনসিংহে ১৮, চট্টগ্রামে ২০ দশমিক ৫, সিলেটে ১৬ দশমিক ৪, রাজশাহীতে ১৫ দশমিক ৪, রংপুরে ১৫ দশমিক ৬, খুলনায় ১৮ ও বরিশালে ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় ‘পিথাই’ ভারতের অন্ধ্র উপকূল (কাকিনাদার নিকট দিয়ে) অতিক্রম করে উত্তর/উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর ও দুর্বল হয়ে ক্রমান্বয়ে গভীর নিম্নচাপ, নিম্নচাপ, সুস্পষ্ট লঘুচাপ এবং সর্বশেষে লঘুচাপে পরিণত হয়।
বর্তমানে এটি উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উড়িষ্যা উপকূলে অবস্থান করছে। উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ বিহার এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে।
আগামীকাল বৃহস্পতিবারের মধ্যে মেঘ-বৃষ্টিমুক্ত হবে পৌষ মাসের আকাশ। মেঘমুক্ত আকাশে দেখা মিলবে নরম রোদের ঝিলিক। বেলা গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে তাপমাত্রা কমতে থাকবে। এতে শীতের তীব্রতা বাড়তে শুরু করবে। ক্রমান্বয়ে শীতের অনুভূতি তীব্র হবে। চলতি মাসের শেষ দিকে একাধিক শৈত্যপ্রবাহের আশঙ্কা রয়েছে।
আবহাওয়াবিদ আব্দুল মান্নান বলেন, বৃহস্পতিবারের মধ্যে বৃষ্টি পরিস্থিতির উন্নতি হবে। এর পর বাড়বে শীতের প্রকোপ। ডিসেম্বরের শেষ দিকে শৈত্যপ্রবাহের আশঙ্কা রয়েছে।