পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : আজ ১২ রবিউল আউয়াল। প্রায় ১৪ শত বছর আগে আজকের এই দিনে অর্থাৎ ১২ রবিউল আউয়ালে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব ও শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) জন্মগ্রহণ করেন। আবার একই দিনে ৬৩ বছর বয়সে তিনি ইন্তেকাল করেন।
সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব ও শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) ৫৭০ খ্রিস্টাব্দের ১২ রবিউল আউয়াল সৌদি আরবের মক্কায় জন্মগ্রহণ করেন। আবার মাত্র ৬৩ বছর বয়সে একই দিনে তিনি ইন্তেকাল করেন।
সমগ্র বিশ্বে মুসলমানদের কাছে ১২ রবিউল আউয়াল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যপূর্ণময় দিন। মুসলমান সম্প্রদায় দিনটি পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) হিসেবে পালন করেন। কিন্তু এই দিনকে ঈদে মিলাদুন্নবী হিসেবে পালন করা একজন নবী প্রেমীক মুসলিমের জন্য উচিত হতে পারে না। কারণ যে দিন নবীজী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পৃথিবীতে এসেছেন আবার ওই দিনই নবীজী দুনিয়া থেকে চলে গেছেন। একই দিনে জন্মমত্যু হলে কীভাবে এটা উৎসবের দিন হতে পারে? অথচ জন্মটা ওই দিনই ছিলো এমন তারিখ নিয়ে মতবিরোধ আছে।
বাংলাদেশে দিনটি সরকারি ছুটির দিন এবং দেশের মুসলমানরা এ দিন বিশেষ ইবাদত করেন। দিনটি উপলক্ষে মিলাদ মাহফিল, আলোচনা, কোরআন খতমসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজন করে ইসলামিক ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন ধর্মীয়, শিক্ষা ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক দল, মসজিদ ও মাদ্রাসা।
রাসূল সা. জন্মগ্রহণ না করলে প্রেম-ভালোবাসা কী জিনিষ মানুষ জানতো না, সহমর্মিতা ও সহানুভূতি সম্পর্কে মানুষ অজ্ঞ থাকতো, আল্লাহর সাথে মানুষের গভীর সম্পর্ক হতো না। তাই একথা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়, রাসূল সা. এর জন্ম এই উম্মতের জন্য বিরাট রহমত।
রাসূল সা. ছিলেন সকল নবীদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ এবং কোনো সন্দেহ ছাড়া তিনি সমগ্র মানবকূলের মাঝেও শ্রেষ্ঠ ছিলেন। আজ পর্যন্ত কেউ তার সমতুল্য হতে পারে নি, এবং কেয়ামত পর্যন্তও কেউ তার সমকক্ষ-সমতুল্য হতে পারবে না। তিনি ছিলেন গুণের আধার। পৃথিবীর সব উন্নত আখলাককে আল্লাহ তাআলা তার মাঝে সন্নিবেশিত করেছিলেন। এমন কোনো ক্ষেত্র নেই যেখানে কেউ তাঁকে পেছনে ফেলতে পারে। এমন কোনো গুণ নেই, যেখানে কেউ তাঁকে ছুঁতে পারে। এমন বৈশিষ্ট নেই, যেখানে কেউ তাঁর সমকক্ষ হতে পারে। তিনি ছিলেন শ্রেষ্ঠদেরও শ্রেষ্ঠ।
নবীজী ছিলেন সর্বশেষ, সর্বশ্রেষ্ঠ এবং সর্বোত্তম নবী ও রাসূল। তাঁর উপর ঈমান রাখা ও তাঁকে নিজের চেয়েও ভালোবাসা মুমিনের একান্ত কর্তব্য। আমাদের ঈমান শুধু তখনই সম্পূর্ণ ও পূর্ণাঙ্গ হবে, যখন নবীজীর প্রতি আমাদের ভালোবাসা পৃথিবীর সবকিছু, এমনকি আমাদের নিজ জীবন অপেক্ষা অধিক হবে।
শুধু ১২ রবিউল আউয়াল নবীজীকে স্মরণ করলে চলবে না। সবসময় নবীজীকে স্মরণে রাখতে হবে, সঙ্গে রাখতে হবে। জীবনের প্রতিমুহূর্ত তুমি নবীজীর জীবনের আলোকে সাজাতে হবে। নবীজী যে সময় যা করেছেন তাই করতে হবে।
আসুন, এই রবিউল আউয়াল মাসে আমরা বিশ্বের শ্রেষ্ঠ মানব ও শ্রেষ্ঠ নবী হযরত মহাম্মাদ সা. এর উন্নত আদর্শে নিজেদের গঠন করি। তাঁর উন্নত চরিত্রগুলো নিজেদের মাঝে ধারণ করি। তবেই রবিউল আউয়ার উদযাপন আমাদের স্বার্থক হবে।