আট মাসে সর্বনিম্ন প্রবাসী আয় অক্টোবরে

আট মাসে সর্বনিম্ন প্রবাসী আয় অক্টোবরে

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স ধারাবাহিকভাবে কম‌ছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরের চতুর্থ মাস অক্টোবরে ১৫২ কোটি ডলারের সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। এই অংক গত ৮ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন।

মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, সদ্য সমাপ্ত অক্টোবর মাসে ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসী বাংলাদেশিরা দেশে ১৫২ কোটি ৫৪ লাখ (প্রায় ১.৫২ বিলিয়ন) মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। প্রবাসী আয়ের এ অংক গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ১২ কোটি ১৪ লাখ ডলার বা ৭ দশমিক ৩৭ শতাংশ কম।

গত বছরের অক্টোবরে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৬৪ কোটি ৬৯ লাখ ডলার। শুধু তাই নয়, অক্টোবরের প্রবাসী আয়ের এ অংক গত আট মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। এর আগে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে দেশে ১৪৯ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল।

চলতি অর্থবছরের টানা দুই মাস ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স বৈধ পথে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। গত আগস্ট মাসের ২০৩ কোটি ৭৮ লাখ (২ দশমিক ০৩ বিলিয়ন) ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। তার আগের মাস জুলাইয়ে এসেছিল ২০৯ কোটি ৬৩ লাখ ডলার। জুলাই মাসে পবিত্র ঈদুল আজহার কারণে দেশে বিপুল পরিমাণ প্রবাসী আয় এসেছিল। তবে আগস্টে বড় উৎসব ছিল না, তারপরও প্রবাসী আয় ২০০ কোটি ডলার ছাড়ায়।

চলতি বছরের প্রথম আট মাসের মধ্যে তিন মাস প্রবাসী আয় ২০০ কোটি ডলারের বেশি ছিল। তবে সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে এসে এই উল্লম্ফন হোঁচট খেয়েছে। সেপ্টেম্বর এসেছিল ১৫৩ কোটি ৯৫ লাখ ডলার। গেল মাস অক্টোবরে আরও কমে নেমে এসেছে ১৫২ কোটি ৫৪ লাখ ডলা‌রে।

অক্টোবরে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পাঁচ বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ৩০ কোটি ৭২ লাখ মার্কিন ডলার। বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ১১৮ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলার। বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৭১ লাখ মার্কিন ডলার আর বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ২ কোটি ৫০ মার্কিন ডলার।

আলোচিত সময়ে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে বরাবরের মতো বেসরকারি ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে। ব্যাংকটির মাধ্যমে প্রবাসীরা ৩৫ কোটি ৮৪ লাখ ডলার পাঠিয়েছেন। এরপর অগ্রণী ব্যাংকে ১০ কোটি ৬৪ লাখ, সোনালী ব্যাংকে ৮ কোটি ৯৪ লাখ, ডাচ্–বাংলা ব্যাংকে এসেছে ৮ কোটি ৬৬ লাখ, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকে ৮ কোটি ৪৮ লাখ এবং রূপালী ব্যাংকের মাধ্যমে প্রবাসী আয় এসেছে ৬ কোটি ৭২ লাখ ডলার।

আলোচিত সময়ে আট ব্যাংকে কোনো রেমিট্যান্স সংগ্রহ করতে পারেনি। এগুলো হলো— বিডিবিএল, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক, কমিউনিটি ব্যাংক, বিদেশি খা‌তের ব্যাংক আল-ফালাহ, হাবিব ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান এবং স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার মাধ্যমে কোনো রেমিট্যান্স আসেনি।

রেমিট্যান্স বাড়া‌তে উদ্যোগ

বিদেশি এক্সচেঞ্জের হাউজের মতো সরাসরি ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠালেও প্রতি ডলারে ১০৭ টাকা পাবেন প্রবাসীরা। আগে যা ছিল ৯৯ টাকা ৫০ পয়সা। এছাড়া এখন থেকে ব্যাংকগুলো রেমিট্যান্স আহরণ বাবদ কোনো চার্জ বা মাশুলও নেবে না। সব‌শেষ সোমবার (৩১ অক্টোবর) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন এবিবি ও বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনকারী ব্যাংকগুলোর সংগঠন বাফেদার বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেয়।

এছাড়াও এখন বিদেশ থেকে যেকোনো পরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠাতে কোনো ধরনের কাগজপত্র লাগে না। আবার প্রবাসী আয়ের ওপর আড়াই শতাংশ হারে প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার।

প্রণোদনা বাড়ার পরও সর্বশেষ অর্থবছরে প্রবাসী আয়ে বড় পতন হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থবছরে ২ হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ (২১ দশমিক ৩ বিলিয়ন) মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। যা আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৫ দশমিক ১১ শতাংশ কম।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *