আদর্শ তালিবুল ইলমের পুঁজি ও সম্বল- আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ

আদর্শ তালিবুল ইলমের পুঁজি ও সম্বল- আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ

শাইখুল ইসলাম আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদের উপস্থিতিতে রাজধানীর স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জামিআ ইকরা বাংলাদেশ- এর নতুন শিক্ষাবর্ষের উদ্বোধনী ক্লাস (ইফতিতাহী দারস) অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শনিবার (২৭ এপ্রিল) ইকরা ঝিল মসজিদ কমপ্লেক্সে এই উদ্বোধনী দারস অনুষ্ঠিত হয়।

এতে ছাত্রদের উদ্দেশ্যে গুরুত্বপূর্ণ নাসিহা পেশ করেন শাইখুল বুখারী আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ। প্রিয় তালিবুল ইলম ভাইদের জন্য বয়ানের চুম্বকাংশ পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম এর পাঠকের জন্য তুলা ধরা হলো।

ইলম অর্জনের জন্য একজন আদর্শ তালিবুল ইলমকে দুটি বিষয় আকড়ে ধরে থাকতে হবে–

এক. উস্তায।
দুই. কিতাব।

উস্তায আর কিতাবের সাথে গভীর সম্পর্ক ছাড়া প্রকৃত তালিবুল ইলম হওয়া যায় না। দীন শেখার জন্য আল্লাহ তাআলা শুধু কুরআনই পাঠাননি, শিক্ষক হিসেবে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকেও পাঠিয়েছেন। শুধু কিতাব মুতালাআর মাধ্যমেই সহীহ ইলম অর্জন করা সম্ভব নয়, উস্তায ছাড়া কিতাব থেকে ইলম শিখতে গেলে পথভ্রষ্টতার আশংকা থাকে।

রাসূলের সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদীসগুলো একদম সরাসরি শোনার তাওফিক আমাদের হয় নাই। কিতাব ও উস্তাদের সুরতে এই ইলম আমাদের কাছে এসেছে৷ তাই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হলেন আমাদের প্রধান শিক্ষক। আর বর্তমান শিক্ষকগণ হলের রাসূলের নায়েব। রাসূলের নায়েবকে রাসূলের মতোই সম্মান ও মর্যাদা প্রদর্শন করতে হবে। শিক্ষকের নেক নজর ও দোআ ছাড়া তালিবুল ইলম পরিপূর্ণ ফায়দা লাভ করতে পারে না।

ইলম তলব করার মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা অন্তরে ইলমের নূর পয়দা করেন এবং উপকারী ইলম দান করেন৷ এখন সবাই ছাত্র হতে চায়, কেউ ‘তালিবুল ইলম’ হতে চায় না। আমাদের ছাত্র না হয়ে ‘তালিবুল ইলম’ হতে হবে। প্রকৃত উপকারী ইলম হাসিলের জন্য তালিবুল ইলম-ই হতে হবে।

দেওবন্দ থাকাকালীন সময়ে আমার মাওলানা মানযূর নোমানী রহ. এর দারসে নিয়মিত শরীক হওয়ার তাওফিক হয়েছিলো। হুজুর তখন আমাদের একটা কথা বলতেন যে, তোমরা সব সময় দারসের মূল কিতাব পরিপূর্ণভাবে আয়ত্ত্ব করবে। তাহলে দুনিয়াবী কোনো বিষয়ে ঠেকবে না। আমি আমার দরসের সমস্ত মূল কিতাব আয়ত্ত্ব করার চেষ্টা করেছি। আর আজকে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলার অনুগ্রহে আমি তাফসীর মাহফিল, হাদীসের দারস বা যেকোনো জায়গাতেই যাই না কেন, মূল কিতাবের আত্মস্থতা আমাকে এখনো ফায়দা দেয়।

মাদরাসার সমস্ত আসবাবের প্রতি পূর্ণ আজমত রাখতে হবে। খাবারের প্রতিও পূর্ণ আজমত রাখতে হবে। আল্লাহ তাআলার অনেক বড় নেয়ামত, তিনি আমাদের রিজিকের ফয়সালা করেছেন। আজকে পৃথিবীর নানা প্রান্তে মানুষ খাবারের জন্য কষ্ট করছে। বিশেষ করে, ফিলিস্তিনে গাজার মানুষেরা না খেয়ে দিন কাটাচ্ছে। তাই রিজিকের শুকরিয়া আদায় করা প্রয়োজন। প্রয়োজন মাফিক খাবার খাবে। কখনো খাবার অপচয় করবে না। যতটুকু প্রয়োজন ততোটুকুই নিবে। আর জেনে রাখবে, বান্দা যখন আল্লাহর নেয়ামতের না-শোকর করে, অপচয় করে, তখন আল্লাহ তার নেয়ামতকে উঠিয়ে নেন।

সবচেয়ে ভালো গুণ হলো সবর বা ধৈর্য্য। সবচেয়ে খারাপ গুণ হলো কিবির বা অহংকার। সর্বাবস্থায় সবরের সাথে থাকবে এবং অহংকার থেকে বেঁচে থাকবে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা আমাদের সবাইকে কবুল করুন। আমীন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *