আপনার শিশু কি প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম খাচ্ছে?

আপনার শিশু কি প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম খাচ্ছে?

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : শিশু প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম খাচ্ছে—এ অভিযোগ প্রায় সব মায়ের। কিন্তু আসলে তা কি ঠিক? কীভাবে বুঝবেন আপনার শিশুটি যথেষ্ট খাবার খাচ্ছে না? মা-বাবা কখনো শিশুকে পর্যাপ্ত খাবার থেকে বঞ্চিত করেন না। তবে অজ্ঞানতা বা শিশুকে খাওয়ানোর সঠিক পদ্ধতি না মানলে অনেক সময় শিশু কম খেতে পারে। যেমন—

১. শিশুকে কতবার খাওয়ানো দরকার, তা না বোঝা। এক বছরের কম বয়সী শিশুকে দৈনিক কমপক্ষে পাঁচবার খাবার দেওয়া উচিত।
২. তড়িঘড়ি করে কম সময় নিয়ে খাওয়ানোর প্রচেষ্টায় অনেক সময় শিশুর কম খাওয়া হতে পারে।
৩. খাবারের গুণগত মান সঠিক না থাকলে পুষ্টির অভাব হয়। শিশুর খাবারে যথেষ্ট আমিষ, শর্করা, তেল ও খনিজ উপাদান থাকতে হবে।
৪. ছয় মাস হওয়ার আগে শিশুকে অন্য কোনো খাবার খেতে দেওয়া উচিত নয়। এ বয়স পর্যন্ত বুকের দুধই যথেষ্ট।
৫. বোতলে বা ফিডারে খাওয়ানোর কারণে বোতলের নিপল বা চুষনির সঙ্গে মায়ের স্তন বোঁটার মধ্যে শিশুর বিভ্রান্তি হতে পারে। এ কারণে সে আর বুকের দুধ খেতে চায় না। এতে তার পুষ্টির অভাব ঘটে।
৬. স্তন ও স্তনের বোঁটার নানা সমস্যায় শিশু বুকের দুধ থেকে বঞ্চিত হতে পারে।
৭. খাওয়ানোর সময় ও আগে–পরে শিশুর পিঠে আলতো করে চাপড় দিয়ে ঢেঁকুর তোলা বা বারপিং না করানো হলে সে আধপেটা খেতে পারে। কেননা স্তন্যপান করানোর সময় শিশু বাতাসও গিলে ফেলে। বারপিং পদ্ধতিতে বাতাস বের করে দেওয়া হলে শিশু স্বস্তি পায় এবং আরেকটু বেশি খায়।
৮. মা ও শিশুর মধ্যে সুগভীর বন্ধনের অভাবে শিশুর অপুষ্টি হতে পারে।
৯. দীর্ঘমেয়াদি রোগব্যাধিতে শিশুর পর্যাপ্ত পুষ্টি ব্যাহত হতে পারে।

  • কীভাবে বুঝবেন

১. প্রথম দিকে কোষ্ঠকাঠিন্য, ঘুমের সমস্যা, অস্থিরতা ও অতিরিক্ত কান্নাকাটি করতে দেখা যায়।
২. যদি দীর্ঘ সময়ের জন্য কম খাওয়ানো হয়, শিশু ওজনে বাড়ে না। তার সার্বিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়।

  • ব্যবস্থাপনা

এ অবস্থায় শিশুর চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা শিশুর শারীরিক অবস্থার ওপর নির্ভর করে।

১. যদি সে মারাত্মক অপুষ্টির শিকার হয়, তবে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হবে। সেখানে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা শেষে বাড়িতে যথাযথভাবে ক্যালরি, খনিজ পদার্থ ও খাদ্যপ্রাণ জোগান দিয়ে তার বৃদ্ধি ও বিকাশ পর্যবেক্ষণ করতে হবে।
২. শিশুর মধ্যে যদি কোনো সংক্রমণ থাকে বা অন্য কোনো রোগে সে আক্রান্ত হয়, তবে সে অনুযায়ী চিকিৎসা করতে হবে।
৩. নিয়মিত ওজন মেপে দেখতে হবে।
৪. শিশুর কোনো মানসিক সমস্যা—নিগ্রহ, নিপীড়ন বা নির্যাতনজনিত সমস্যা থাকলে তার প্রতিকার করতে হবে।
৫. শিশুকে যথাযথভাবে খাওয়ানোর বিষয়ে মা-বাবাকে পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ দেওয়া জরুরি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *