আবুধাবিতে কারখানায় আগুনে চার বাংলাদেশির মৃত্যু

আবুধাবিতে কারখানায় আগুনে চার বাংলাদেশির মৃত্যু

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবিতে একটি আসবাবপত্রের কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে চার বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে তিনজন নোয়াখালীর এবং একজন কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার বাসিন্দা।

বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার (৩০ মে) ভোরে আবুধাবির শারজাহের সানাইয়াতে ইউসুফ ফার্নিচারের দোকানে এ অগ্নিকাণ্ডের এ ঘটনা ঘটে। নিহতদের স্বজনরা সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

নিহতরা হলেন—কারখানার মালিক নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার ডমুরুয়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের তারাবাড়িয়া গ্রামের আবদুল কাদেরের ছেলে মো. ইউসুফ মিয়া (৪৫), একই গ্রামের মীর হোসেনের ছেলে তারেক হোসেন বাদল (৪২) ও আবদুল ওহাবের ছেলে মো. রাসেল (২৬)। নিহত অপরজনের বাড়ি নাঙ্গলকোট উপজেলায়। তার নাম মো. সুমন।

এ বিষয়ে নিহত ইউসুফের ছোট ভাই পল্লিচিকিৎসক গোলাম রসুল অনলাইন সংবাদমাধ্যম বলেন, “আমার বড় ভাই ২৫ বছর ধরে আমিরাতে আছেন। শারজাহ শহরে ছিল তার কারখানা। কীভাবে আগুন লেগেছে সে ব্যাপারে এখনও নিশ্চিত করে কিছু জানতে পারিনি। অগ্নিকাণ্ডের পর ওই দেশে থাকা আত্মীয়স্বজন দুপুরে মোবাইলে কল করে বিষয়টি গ্রামের বাড়িতে জানান। ভাইসহ চারজনের মৃত্যু হয়েছে।”

নিহত রাসেলের মা শরীফা বেগম বলেন, “দুই ভাই ও দুই বোনের মধ্যে রাসেল ছিল দ্বিতীয়। তার দেড় বছরের একটি কন্যাসন্তান থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। জীবিকার তাগিদে ছয়-সাত লাখ ধারদেনা করে ২০২২ সালে আবুধাবিতে যায় রাসেল। একই এলাকার আরও কয়েকজন থাকায় ওই সোফা কারখানায় চাকরি নিয়েছিল। প্রতিদিনের মতো সোমবার রাত ১টার দিকে স্ত্রী ও পরিবারের লোকজনের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলেছিল। পরদিন ডিউটি আছে তাই দ্রুত ঘুমিয়ে পড়ার কথা বলে মোবাইলের সংযোগ কেটে বিদায় নেয়। মঙ্গলবার দুপুরে আবুধাবিতে থাকা লোকজনের মাধ্যমে জানতে পারি, ঘুমন্ত অবস্থায় আগুনে পুড়ে রাসেল মারা গেছে।”

এদিকে পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ছেলে তারেককে হারিয়ে বাকরুদ্ধ বাবা মীর হোসেন। চার ছেলের মধ্যে দুই জন শারীরিক প্রতিবন্ধী। এরই মধ্যে চলে গেলেন বাদল।

মীর হোসেন বলেন, “কয়েক বছর ওমান থাকার পর ভিসা নিয়ে সমস্যা হওয়ায় গত বছর দেশে ফিরে আসে বাদল। তার তিন ছেলে। আট মাস আগে এক আত্মীয়ের সহযোগিতায় আবুধাবিতে গিয়ে ইউছুফের সোফা কারখানায় চাকরি নেয়। দুই ছেলে প্রতিবন্ধী হওয়ায় আমার সংসার চালানোর দায়িত্ব তার কাঁধে ছিল। বাদল চলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমার পরিবারের সব শেষ হয়ে গেছে।”

ডুমুরুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শওকত হোসেন বলেন, “বিষয়টি শুনেছি। ঢাকায় থাকায় নিহতদের বাড়িতে যাওয়া সম্ভব হয়নি। বুধবার সকালে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নিহতদের বাড়িতে পাঠিয়ে খোঁজখবর নেবো। কীভাবে নিহতদের লাশ দেশে আনা যায়, সে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।”

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *