পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : ইমারাতে শারইয়্যাহ হিন্দের পঞ্চম আমিরুল হিন্দ নির্বাচিত হয়েছেন দারুল উলুম দেওবন্দের সদরুল মুদাররিসিন ও জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের সভাপতি মাওলানা সাইয়্যিদ আরশাদ মাদানী। নায়েবে আমির নির্বাচিত হয়েছেন জামিআ কাসিমুল উলুম শাহী মুরাদাবাদের মুফতী ও উচ্চতর হাদীস বিভাগের সিনিয়র শিক্ষক, আওলাদে রাসূল মাওলানা সাইয়্যিদ আসআদ মাদানীর খলিফা, মুফতী সাইয়্যিদ মুহাম্মদ সালমান মানসুরপুরী।
শনিবার (৩ জুলাই) নয়াদিল্লির জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের কেন্দ্রীয় অফিসে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে ভারতের শীর্ষ আলেমদের উপস্থিতিতে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এতে জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের নবনির্বাচিত সভাপতি মাওলানা সাইয়্যিদ মাহমুদ মাদানী নতুন আমিরুল হিন্দ হিসেবে সাইয়্যিদ আরশাদ মাদানীর নাম প্রস্তাব করেন। তার প্রস্তাবে উপস্থিত সদস্যরা একমত হওয়ায় দারুল উলূম দেওবন্দের মুহতামিম মুফতি আবুল কাসেম নোমানী এ ঘোষণা দেন।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, মাওলানা আবদুল আলিম ফারুকী, মাওলানা নেমাতুল্লাহ, মাওলানা রহমাতুল্লাহ কাশ্মীরি, মুফতি আহমদ দেওলা, মাওলানা সৈয়দ আসজাদ মাদানী, আসাম রাজ্যের প্রধান বিরোধী দলীয় নেতা মাওলানা বদরুদ্দীন আজমল, মাওলানা সৈয়দ আশহাদ রশিদী প্রমূখ।
উল্লেখ্য, ১৯১৯ সালে প্রতিষ্ঠিত জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই ভারতীয় মুসলমানদের ধর্মীয় বিষয়াদির সমাধান ও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার লক্ষ্যে একজন আমিরুল হিন্দ নির্বাচন করার প্রয়োজন অনুভব করে। সে লক্ষ্য বাস্তবায়নে রেশমী রুমাল আন্দোলনের মহানায়ক শায়খুল হিন্দ মাওলানা মাহমুদ হাসান দেওবন্দী (১৮৫১-১৯২০) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। কিন্তু তখন পরিবেশ পরিস্থিতি স্বাভাবিক না থাকায় এই সিদ্ধান্ত গৃহীত না হলেও প্রাদেশিক পর্যায়ে বিহার রাজ্যে এর বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়। পাশাপাশি গোটা ভারতবর্ষের জন্য একজন আমিরুল হিন্দ নির্বাচন করার চেষ্টা অব্যাহত থাকে ।
এই ধারাবাহিকতায় ১৯৮৬ সালের নভেম্বরে পুরো ভারতবর্ষে ইমারাতে শারইয়্যাহ হিন্দের কার্যক্রম বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দিল্লিতে একটি বৃহত্তর প্রতিনিধি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে সর্বপ্রথম আমিরুল হিন্দ হিসেবে মাওলানা হাবিবুর রহমান আজমী (১৯০১-১৯৯২) নির্বাচিত হন।
১৯৯২ সালে মাওলানা হাবিবুর রহমান আজমীর ইন্তেকালের পর দ্বিতীয় আমিরুল হিন্দ হিসেবে নির্বাচিত হন জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের তৎকালীন সভাপতি মাওলানা সাইয়্যিদ আসআদ মাদানী (১৯২৮-২০০৬)। তার ইন্তেকালের পর ২০০৬ সালে তৃতীয় আমিরুল হিন্দ হিসেবে নির্বাচিত হন দারুল উলুম দেওবন্দের দীর্ঘ ২৮ বছরের সফল মুহতামিম মাওলানা মারগুবুর রহমান বিজনুরী।
২০১১ সালে তার ইন্তেকালের পর চতুর্থ আমিরুল হিন্দ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন মাওলানা ক্বারী উসমান মানসুরপুরী। গত মে মাসে তার মৃত্যুর পর আজকের অনুষ্ঠিত প্রতিনিধি সম্মেলনে পঞ্চম আমিরুল হিন্দ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন মাওলানা সাইয়্যেদ আরশাদ মাদানী। আর তার সহযোগী হিসেবে কাজ করবেন মুফতি সালমান মানসূরপুরী।