আল কুরআনের স্পেশাল চরিত্রগুলো।। পর্ব ০১  

আল কুরআনের স্পেশাল চরিত্রগুলো।। পর্ব ০১  

  • মুহাম্মাদ আইয়ুব

সচেতন মানুষ মাত্রই তার নামের উৎপত্তি, উৎস, অর্থ ইত্যাদি নিয়ে ঘাটাঘাটি করে।  নামের অর্থ খুঁজে পেয়ে কেউ হয় খুশি কেউ বা দুঃখী। আমিও কোনভাবেই এর  ব্যতিক্রম নই। নেমে পড়লাম স্ব-নামের অনুসন্ধানে। বেশী দূরে কেন যাবো? হাতের  কাছে থাকা কুরআনটাই খুলে বসলাম। মাশাআল্লাহ, আল্লাহ পাক তাঁর পবিত্র কুরআনে  আলোচনা করেছেন তাঁর প্রিয় নবী হযরত আইয়ুব আলাইহিস সালামকে নিয়ে।

কী চমৎকার বর্ণনা! যতবার বিপদে পড়ি, ধোঁকায় পড়ি, মনটা ছন্নছাড়া এলোমেলো দুঃখী থাকে অমনি চলে যাই কুরআনে। হযরত আইয়ুব আলাইহিস সালাম- এর কথা আল্লাহ পাক মনে করিয়ে দিচ্ছেন এভাবে- স্মরণ কর আমার বান্দা আইয়ুবকে!

যতবার বিপদে পড়ি, ধোঁকায় পড়ি, মনটা ছন্নছাড়া এলোমেলো দুঃখী থাকে অমনি চলে যাই কুরআনে

কী মায়াময় ডাক! আমার বান্দা। হযরত আইয়ুবের আর কী চাই দুই জীবনে! এখানে আমি নাই কিন্তু আমার নামটা আছে। ঈর্ষান্বিত হওয়ার নাই কিছু। আল্লাহ পাকের শব্দশৈলী মানেই তো দুঃখের সাগরে সুখের হাতছানি। কী চমৎকার! কী অভিনবত্ব! কী বিষ্ময়কর। দেখুন দেখুন, একটু পরই আল্লাহ বলছেন, নি’মাল আবদ! কত উত্তম বান্দা সে!। ‘ইন্নাহু আউয়াব’ সে তো আমার অভিমুখী, আমার দিকেই ধাবিত। উত্তম বান্দার শ্রেষ্ঠ গুণের কথাটা বলে দিলেন ‘সে হচ্ছে আমার অভিমুখী’। বিপদে আপদে সুখে দুঃখে যে আল্লাহর কাছে ফিরে যায় তাকে আল্লাহ পাক স্মরণ করেন ‘উত্তম বান্দা’ বলে। হাল জমানার মুসলমান আমরা দো-জাহানে উত্তম তো হতে চাই। তবে আশ্চর্য হলেও সত্য যে, আমরা চলি উলটো পথ ধরে। বিপদে পড়ে একবার ধরণা দিই সুদে, আরেকবার ঘুষে।  কখনো মিথ্যায় মাথা নোয়াই আবার কখনো গর্হিত অন্যায়ে দুবে যাই।

সহায় সম্পদ বাড়ি ঘর ছেলে  মেয়ে সব গেল বানের জলে ভেসে কিন্তু ভাসেনি তাঁর আল্লাহ প্রেম।

অথচ দেখুন হযরত আইয়ুব আলাইহিস সালামকে। সহায় সম্পদ বাড়ি ঘর ছেলে  মেয়ে সব গেল বানের জলে ভেসে কিন্তু ভাসেনি তাঁর আল্লাহ প্রেম।

পাহাড়সম অটলতা নিয়ে অবিচল থেকে নিজেকে সমর্পণ করেছেন আল্লাহর ইচ্ছার সামনে। শয়তানের শত প্ররোচনা ঘাত প্রতিঘাতে চুল পরিমাণ টলাতে পারেনি তার আল্লাহপ্রেম থেকে। তাই দেখুন মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে  কি অভাবনীয় এক মহা খেতাবে ভূষিত হলেন তিনি। আল্লাহ পাক বলছেন- ‘আমি তাকে পেলাম ধৈর্যশীল’ ‘ইন্না অয়াজাদনাহু ছাবিরান’। খোদা মহীয়ানের সার্টিফিকেট। তাঁর চেয়ে শ্রেষ্ঠ আর কে হতে পারে যার ঝুলিতে মহামহিম মাওলায়ে কারিমের পক্ষ থেকে এমন উত্তম শ্রেষ্ঠ  মানপত্র আছে। মাত্র দুইটি গুণ অর্জন করতে হবে। এক. ধৈর্য্য। দুই. আল্লাহভিমুখীতা । এই গুণ দুটো অর্জন হলেই আমরা পেয়ে যাচ্ছি মহান আল্লাহর ভালো ‘বান্দা’ হওয়ার অপূর্ব সুযোগ। তাহলে কি আর দেরী করব?

লেখক: শিক্ষক, অনুবাদক ও মাদরাসা পরিচালক

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *