আল-শিফা হাসপাতালে চলছে ইসরায়েলি তাণ্ডব

আল-শিফা হাসপাতালে চলছে ইসরায়েলি তাণ্ডব

গাজা উপত্যকার বৃহত্তম হাসপাতাল আল-শিফার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর সেখানে ইসরায়েলি বাহিনীর তাণ্ডব অব্যাহত রয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অভিযোগ করেছে, হাসপাতালের একটি প্রবেশপথের কিছু অংশ এবং রেডিওলজি, বার্ন ও কিডনি বিভাগ বোমা ও বুলডোজারে ভেঙে ফেলা হয়েছে। এর বাইরে মধ্য গাজায় বুধবার রাতে ইসরায়েলি বোমায় প্রাণ হারিয়েছে ৫০ বেসামরিক মানুষ। হামলা হয়েছে খোদ হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়েহের গাজার বাড়িতেও।

গাজার আল-শিফা হাসপাতালে ইসরায়েলি তাণ্ডব চলছেআল-শিফার ভেতরের পরিস্থিতি বিপর্যকর বলে জানিয়েছেন হাসপাতালটির পরিচালক। ইসরায়েলের দাবি, গত বুধবার তারা সেখান থেকে ১৫টি আগ্নেয়াস্ত্র ও কিছু গ্রেনেড উদ্ধার করেছে। তবে এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে হামাস। তাদের দাবি ইসরায়েলি সেনারাই ওই অস্ত্র সেখানে রেখে দিয়েছে।

হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, ইসরায়েলি বাহিনী হামাসের গোপন ঘাঁটি খোঁজার নামে আল-শিফা হাসপাতালের রেডিওলজি বিভাগ ধ্বংস করে দিয়েছে। বার্ন ও কিডনি বিভাগে বোম মেরেছে। তারা চিকিৎসক, আহত রোগী ও আশ্রিতদের জেরা করে যাচ্ছে।

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) বলছে, বিশেষ শাখার সেনাদের অভিযান চলমান রয়েছে।

আইডিএফের এক কর্মকর্তা বলেন, একটি নির্দিষ্ট সময়ে শুধু একটি ভবনে অভিযান চালানো হচ্ছে। ভবনের প্রতিটি তলায় তল্লাশি চালানো হচ্ছে। হাসপাতাল প্রাঙ্গণে কয়েক শ রোগী ও কর্মী অবস্থান করছে। হাসপাতালের ভেতরে হামাসের অবকাঠামো থাকার দাবির পুনরাবৃত্তি করে এই আইডিএফ কর্মকর্তা বলেন, হাসপাতাল থেকে অস্ত্র, গোয়েন্দা সরঞ্জাম, জ্যাকেট ও বিভিন্ন ধরনের যোগাযোগের সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে।
আল-শিফা হাসপাতালের পরিচালক মোহাম্মদ আবু সালমিয়া জানিয়েছেন, আল-শিফার ভেতর থেকে সেনাদের দিকে গুলি চালানোর যে দাবি ইসরায়েল করেছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

বরং ইসরায়েলি বাহিনী পানি সরবরাহ লাইনে বোমা মেরেছে। সার্জারি ভবনের পেছনে কিছু ইসরায়েলি সাঁজোয়া যান অবস্থান নিয়েছে। হাসপাতাল ঘেরাও করতে তারা সেখানে মাটি খুঁড়ছে।

এদিকে ফিলিস্তিনের আরেক সশস্ত্র গোষ্ঠী ইসলামিক জিহাদ দাবি করেছে, আল-শিফা হাসপাতাল প্রাঙ্গণের আশপাশে গতকাল ইসরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে তাদের তুমুল লড়াই হয়েছে। তবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি ইসরায়েল।

ফিলিস্তিনি বার্তা সংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, গত বুধবার রাতে মধ্য গাজার সাবরা এলাকায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় প্রায় ৫০ জন বেসামরিক লোক নিহত হয়েছে। সেখানকার একটি মসজিদসহ বিভিন্ন স্থাপনা ধ্বংস হয়েছে।

হামাসের শীর্ষ নেতা ইসমাইল হানিয়েহর গাজার বাড়িতে গত বুধবার রাতে বিমান হামলার দাবি করেছে ইসরায়েল। তাদের দাবি, হামাসের শীর্ষস্থানীয় নেতারা বৈঠক করতে এবং সন্ত্রাসী কার্যকলাপ পরিচালনার অবকাঠামো হিসেবে বাড়িটি ব্যবহার করতেন। গাজার বাসিন্দা হলেও নিরাপত্তার কারণে হামাসের পলিটব্যুরোর প্রধান হানিয়েহ কাতারে বাস করছেন।

আল-শিফা হাসপাতালের নিচে ঘাঁটি বানিয়ে হামাস যুদ্ধাপরাধ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ক্যালিফোর্নিয়ায় এক সংবাদ সম্মেলনে বাইডেন আরো বলেন, গাজায় হামাসের কাছে জিম্মি দুই শতাধিক মানুষকে মুক্ত করার চুক্তির বিষয়ে তিনি একটু আশা দেখছেন। মধ্যস্থতাকারী কাতার এ ব্যাপারে প্রশংসনীয় ভূমিকা রাখছে বলে জানান বাইডেন।

 

সূত্র : বিবিসি, আলজাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *