আশা জাগাচ্ছে ডেঙ্গুর টিকা আবিষ্কারের গবেষণা

আশা জাগাচ্ছে ডেঙ্গুর টিকা আবিষ্কারের গবেষণা

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুতে প্রতিবছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আক্রান্ত হন লাখ লাখ মানুষ, মৃত্যু হয় হাজার হাজার জনের। প্রাণঘাতী এই রোগটি ঠেকাতে একটি কার্যকর টিকা আবিষ্কারের চেষ্টা করছে ওষুধ ও প্রসাধন সামগ্রী প্রস্তুতকারী কোম্পানি জনসন অ্যান্ড জনসনের ইউরোপীয় শাখা জ্যানসেন।

সম্প্রতি ইঁদুর ও বানরের ওপর সেই টিকার ট্রায়াল করা হয়েছে এবং তাতে সাফল্যও মিলেছে বলে দাবি করেছেন জ্যানেসেনের ইমার্জিং প্যাথোজেন বিভাগের প্রধান নির্বাহী মার্নিক্স ভ্যান লুক।

ভাইরাসজনিত এই রোগটির প্রধান উপসর্গগুলো হলো তীব্র জ্বর, মাথাব্যাথা, পেশি ও হাড়ের গ্রন্থীতে ব্যথা ও গাত্রচর্মে ফুসকুড়ি। এই রোগে আক্রান্ত রোগীদের রক্তে অনুচক্রিকা বা প্ল্যাটিলেট কমে যায় এবং অনেক সময় শরীর থেকে রক্তক্ষরণও ঘটে। ভয়াবহ যন্ত্রণাকর সব উপসর্গের জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রোগটি ‘হাড়ভাঙা জ্বর’ নামেও পরিচিত।

বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে প্রতিবছরই প্রাদুর্ভাব দেখা দিলেও বিশ্ব এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুর কোনো স্বীকৃত টিকা নেই। দু’টি টিকা অবশ্য আছে, কিন্তু সেগুলো বৈশ্বিকভাবে স্বীকৃত নয়।

বার্তাসংস্থা এএফপিকে মার্নিক্স ভ্যান লুক জানান, দু’বছর গবেষণার পর জেএনজি-১৮০২ নামের একটি টিকা প্রস্তুত করেছে জ্যানসেন। নতুন এই টিকাটির মূল কাজ হলো, মানুষ বা প্রাণীদেহে প্রবেশ করা ডেঙ্গুভাইরাসের বংশবিস্তার থামিয়ে দেওয়া।

ইঁদুর ও রেসাস জাতের বানরের ওপর সেই টিকার প্রয়োগ করা হয়েছে এবং তাতে সাফল্য পাওয়া গেছে বলেও দাবি করেছেন মার্নিক্স ভ্যান লুক।

‘বিশ্বে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু ভাইরাসের চারটি ধরন শনাক্ত হয়েছে। আমরা বেশ কয়েকটি বানর এবং ইদুঁরের দেহে প্রথমে ভাইরাসটি এবং পরে আমাদের টিকা প্রয়োগ করেছি। আমাদের সেই পরীক্ষা সফল হয়েছে।’

ডেঙ্গুর সবচেয়ে বিপজ্জনক ব্যাপারটি হলো— এই রোগের চারটি ভাইরাসের কোনো একটিতে যদি কেউ আক্রান্ত হন, তাহলে সেই অবস্থাতেই অন্য কোনো একটি ধরনে তিনি ফের আক্রান্ত হতে পারেন। সাধারণত উষ্ণ ও আদ্র আবহাওয়ায় এ রোগটির প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা যায়।

এ পর্যন্ত দুটি টিকা আবিষ্কার হয়েছে ডেঙ্গুর চিকিৎসার জন্য। তার একটি হলো ডেংভাক্সিয়া। অল্প কয়েকটি দেশে এই টিকা পাওয়া যায় এবং ডেঙ্গুর মাত্র একটি ধরনের ওপর কার্যকর এই টিকাটি।

দ্বিতীয়টির নাম কোডেঙ্গা। গত বছর ডিসেম্বরে ইউরোপীয় দেশগুলোর জোট ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) অনুমোদন পেয়েছে এই টিকাটি। শিগগিরই ব্রিটেন ও ইন্দোনেশিয়াও এই টিকার অনুমোদন দেবে বলে আভাস পাওয়া গেছে।

মার্নিক্স ভ্যান লুক জানান, বানর এবং ইঁদুরের দেহে প্রয়োগের পর এবার মানবদেহে এই টিকাটির ট্রায়াল পরিচালনা করতে চান তারা। তবে সেজন্য আগে এই টিকার প্রয়োগের পর মানবদেহে কোনো গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা আছে কিনা— খতিয়ে দেখছে জ্যানসেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *