ইউরোপ মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে
পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : তাহলে কি ঘোরে দাঁড়াচ্ছে ইউরোপ। যুক্তরাষ্ট্রের কোনো কাজের সঙ্গে আর যুক্ত থাকছে না ইউরোপ। এমন প্রশ্ন তুলছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকগণ। প্রায় ৭০ বছরেরও বেশি সময় ধরে আটলান্টিকের এক পাশের যুক্তরাষ্ট্র আর অপর পাশের ইউরোপের মধ্যে স্থিতির অটল ভিত্তি ও যুক্তরাষ্ট্রচালিত পশ্চিমা শৃঙ্খলার মূল্যবোধের অনড় অবস্থান জারি রেখেছে। কিন্তু ২০২০ সালে এসে দেখা যাচ্ছে, এই সম্পর্ক নিয়ে আটলান্টিকের দুই পারেরই নতুন করে ভাববার সময় এসেছে।
এ সপ্তাহে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ‘নিরাপদ দেশের’ তালিকা প্রকাশ করে ইইউতে প্রবেশের অনুমতি দেয়। কিন্তু তালিকায় নেই যুক্তরাষ্ট্রের নাম। এতে স্পষ্ট যে যুক্তরাষ্ট্রের করোনা বিপর্যয় দেখে অশ্রুবিসর্জন করলেও, অদূর ভবিষ্যতে ইউরোপের মাটিতে মার্কিন পর্যটকদের স্বাগত জানানো হবে না বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
তবে সবচেয়ে নজরকাড়া বিষয় হলো ইইউ ঘোষিত ওই তালিকায় করোনা ভাইরাসের উৎপত্তিস্থল চীনের নাম থাকলেও যুক্তরাষ্ট্রকে তালিকায় রাখেনি ইইউ। তবে চীনের জন্য ইইউ দরজা খুলতে তখনই সম্মত হবে, যদি চীনও অনুরূপভাবে ইইউভুক্ত দেশগুলোর জন্য দরজা খুলে দেয়।
ইউরোপীয়ানদের নিয়ে একাধিকবার তীব্র সমালোচনাকারী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সম্ভবত সান্ত্বনা দিতেই ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন কর্তৃপক্ষ জোরের সঙ্গে জানিয়েছে, রাজনৈতিক বিবেচনায় নয় বরং বৈশ্বিক মহামারির বর্তমান পরিস্থিতিকে বিবেচনায় নিয়েই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
মার্কিনিদের জন্য আরও গ্রহণযোগ্য উপায় নিয়ে ভাবার ইচ্ছেও ব্রাসেলসের ছিল বলে কেউ কেউ ব্যক্তিগতভাবে স্বীকারও করেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইইউ এক কূটনীতিক বলেন, অতীতের ঘটানাগুলো বিবেচনা করে যুক্তরাষ্ট্রকে খুশি করার জন্য হলেও তালিকায় চীনকে অন্তর্ভুক্ত না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত ছিল।
বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে আটলান্টিকের দুই পারের আচমকা সম্পর্কের ফাটলের প্রমাণ হিসাবে এ ঘটনাটিকে গ্রহণ করা যেতে পারে। ইউরোপিয়ান সম্পর্কের ব্যাপারে এখন ওয়াশিংটনেরও যে খুব একটা আগ্রহ নেই, সেটা এখন আর কোনো গোপন বিষয় নয়। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের বলয় থেকে বের হয়ে বৃহৎ পরিসরে কূটনৈতিক স্বায়ত্তশাসন ফিরে পাওয়ার পথ যে ইউরোপিয়ান দেশগুলো সক্রিয়ভাবে খুঁজছে এটাও খুবই পরিচিত ঘটনা। ইইউভুক্ত ২৭ সদস্য রাষ্ট্রের ক্ষেত্রে এ কথা বিশেষভাবে সত্য।