ইসরায়েল একটি দখলদার দেশ, বিশ্ব মোড়লদের মদদে যারা যথেচ্ছা দখলদারিত্ব চালিয়ে যাচ্ছে: মাওলানা আরশাদ মাদানী    

ইসরায়েল একটি দখলদার দেশ, বিশ্ব মোড়লদের মদদে যারা যথেচ্ছা দখলদারিত্ব চালিয়ে যাচ্ছে: মাওলানা আরশাদ মাদানী    

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম: জমিয়তে উলামা হিন্দের বিভাজিত দুটি অংশের একাংশের সভাপতি মাওলানা আরশাদ মাদানী বলেন, জমিয়ত উলামা হিন্দ প্রথম থেকেই বায়তুল মাকদিস ও গাজা ভূখণ্ড রক্ষার প্রতিটি সংগ্রামের সমর্থন ও তাদের সাথে সংহতি প্রকাশ করছে। ইসরায়েলী  বাহিনীর আগ্রাসন, বর্বরোচিত হামলা ও নৃশংসতার তীব্র নিন্দা জানিয়ে আসছে। তিনি  বলেন, এই যুদ্ধ ইসরায়েলের স্থায়ী সন্ত্রাসী পরিকল্পনার অংশ। যে সকল পশ্চিমা দেশ  বিশ্বশান্তি ও ঐক্যের প্রবক্তা হওয়ার দাবিদার তারা এই নিষ্ঠুরতার বিরুদ্ধে আজ নীরব। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোও মুখে কুলুপ এঁটে আছে।

একই সঙ্গে গাজায় চলমান ভয়াবহ যুদ্ধ এবং প্রতিবেশী মুসলিম জনগোষ্ঠীর ওপর  ভয়ঙ্কর বোমা হামলা বন্ধে অবিলম্বে এগিয়ে আসার জন্য সমস্ত বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানান মাওলানা মাদানী।  তিনি বলেন, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ, বিশ্ব মুসলিম লীগ এবং অন্যান্য প্রভাবশালী আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে অনতিবিলম্বে হস্তক্ষেপ করে সেখানে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য ইতিবাচক ও কার্যকর প্রচেষ্টা চালাতে হবে। তা না হলে এই যুদ্ধের পরিধি বাড়তে পারে এবং তার কুফল ভোগ করবে গোটা বিশ্ব।

মাওলানা মাদানী গভীর দুঃখ প্রকাশ করেন বলেন, একদিকে নিরীহ বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা করা হচ্ছে অন্যদিকে কয়েকটি ক্ষমতাধর রাষ্টের উদাসীনতার কারণে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সাম্প্রতিক বৈঠকটি ব্যর্থ হয়েছে। গত ৭৫ বছর ধরে প্যালেস্টাইন ইস্যুতে এমন ঘটনাই ঘটেছে।

জাতিসংঘ কখনো কোনো রেজুলেশন পাস করলেও ইসরায়েল তা স্বীকৃতি দেয়নি এবং  সারা বিশ্ব তখন নীরব দর্শক সেজেছে। তিনি আরও বলেন, বিশ্বের কয়েকটি বড়  শক্তি মধ্যপ্রাচ্যে দ্বিমুখী খেলা খেলছে। নিজেদের স্বার্থের পরিপ্রেক্ষিতে ফিলিস্তিনের জনগণ প্রতিনিয়ত ইসরায়েলের অবৈধ শাসন ও নিপীড়নের শিকার হচ্ছে। এবং ৭৫ বছর ধরে ইসরায়েল শুধু জনসংখ্যা বৃদ্ধিই করেনি বরং দখল করে চলেছে একের পর এক ফিলিস্তিনি এলাকা। এমনকি জর্ডানেরও নানা অঞ্চল। বিশ্ব দেখেছে তাদের দখলদারিত্ব। এর অর্থ দাঁড়ায় ইসরায়েলের পার্শ্ববর্তী দেশবাসীর জন্য তাদের নিজ দেশের ভূমি সংকীর্ণ হয়ে যাচ্ছে দিনদিন। তারা শিশু, বৃদ্ধ ও সাধারণ মানুষকে পর্যন্ত টার্গেট করছে। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী জনগণ তাদের ভূমিকে মুক্ত করার জন্য বছরের পর বছর ধরে তাদের জীবন বিসর্জন দিয়ে চলেছে। অবশেষে স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া হিসাবে ফিলিস্তিনিরা চরম সাহস দেখিয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে পাল্টা আক্রমণ করেছে। অত্যাচারী ইসরায়েল যা কল্পনাও করতে পারেনি।

জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ একে স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া বলে মনে করে এবং ইসরায়েলকে এই ক্রমাগত আগ্রাসনের জন্য দায়ী করে।

মাওলানা মাদানী বলেন, ভারত সবসময় শান্তি চেয়েছে এবং ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকার আদায়ে কথা বলেছে। মহাত্মা গান্ধী, পণ্ডিত নেহেরু, মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, রফি আহমেদ কিদোয়াই থেকে শুরু করে অটল বিহারী বাজপাই, সকলেই  ফিলিস্তিনিদের সর্বদা সমর্থন করেছেন। তিনি বলেন, আজও আমাদের প্রবীণদের প্রাচীন অবস্থানে অটল থাকা উচিত এবং ন্যায়বিচারের দাবিও সঠিক।

এই দ্বন্দের সমাধান হল ১৯৬৭ সালের অসল চুক্তির অধীনে জাতিসংঘ এবং ইসরায়েলের সীমানায় ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ফিলিস্তিনের জন্য একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। জমিয়ত উলামায়ে হিন্দ নিপীড়িত ফিলিস্তিনিদের সাহস এবং ধৈর্য ও অধ্যবসায়কে শ্রদ্ধা জানায় এবং প্রার্থনা করে যে আল্লাহ তাদের মনোবল ও সাহসকে অত্যাচারের বিরুদ্ধে উচ্চ রাখুন এবং তাদের সাহায্য করুন। আমীন।

 

সূত্র- মাওলানা আরশাদ মাদানীর ভারিফাইড ফেসবুক পেইজ

উর্দূ থেকে ভাষান্তর- তামীম আব্দুল্লাহ

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *