ইসরায়েলের সিদ্ধান্তে পশ্চিমা দেশগুলো গভীরভাবে উদ্বিগ্ন

ইসরায়েলের সিদ্ধান্তে পশ্চিমা দেশগুলো গভীরভাবে উদ্বিগ্ন

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : দখলকৃত পশ্চিম তীরে অবৈধভাবে গড়ে তোলা ৯টি বসতিকে বৈধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসরায়েল। সাম্প্রতিক সময়ে জেরুজালেমে ফিলিস্তিনিদের কয়েকটি হামলা চালানোর পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে কয়েকটি পশ্চিমা দেশ বলছে, তারা ইসরায়েলের এই সিদ্ধান্তে ‘গভীরভাবে উদ্বিগ্ন’।

জার্মানি, যুক্তরাষ্ট্র, যু্ক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা মঙ্গলবার এক যৌথ বিবৃতিতে ইসরায়েলের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে বলেন, (ইসরায়েলি আইনে বৈধ বসতিতে) নতুন করে ১০ হাজার বাড়ি নির্মাণ এবং অতীতে ইসরায়েলের আইনে অবৈধ বলে বিবেচিত ৯টি বসতিকে বৈধ করার ইসরায়েল সরকারের ঘোষণায় আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। আমরা এই একতরফা সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করছি, যেটা শুধুই ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে উত্তেজনা বাড়াবে এবং আলোচনার মাধ্যমে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের লক্ষ্য অর্জনের চেষ্টাকে ব্যাহত করবে।

পশ্চিমা দেশগুলো ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে সরাসরি আলোচনার মাধ্যমে ‘মধ্যপ্রাচ্যে ব্যাপক, ন্যায়সংগত ও স্থায়ী শান্তির’ জন্য তাদের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছে।

  • প্রতিক্রিয়া

ওই বিবৃতি প্রকাশের পর মঙ্গলবার ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গেভির এক ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘৯টি বসতি ভালো, কিন্তু যথেষ্ট নয়। আমরা আরো চাই।’ চরম ডানপন্থী এই রাজনীতিবিদ আরো বলেন, ‘ইসরায়েলের জমি ইসরায়েলের মানুষের।’

এদিকে প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন পিএলওর নির্বাহী কমিটির মহাসচিব হুসেইন আল-শেখ পশ্চিমা পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের যৌথ বিবৃতিকে স্বাগত জানিয়ে টুইট করেছেন। তবে তিনি বলেন, ‘আমাদের দাবি, তাদের (পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের) কথাগুলো কাজে পরিণত হয়ে একটি আন্তর্জাতিক চুক্তি হোক, যেটা ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ইসরায়েলকে তার আগ্রাসন ও পদক্ষেপ বন্ধ করতে বাধ্য করবে।’

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বর্তমানে একটি চরম ডানপন্থী জোট সরকারের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। সাম্প্রতিক সময়ে জেরুজালেমে কয়েকজন ফিলিস্তিনির হামলা চালানোর পর রবিবার ১০ হাজার নতুন বাড়ি নির্মাণ ও ৯টি বসতি বৈধ করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে ইসরায়েল সরকার।

শুক্রবার পূর্ব জেরুসালেমের এক বাসস্টপে এক ফিলিস্তিনি তার গাড়ি তুলে দিলে তিনজন মারা যান। গত মাসে এক সিনাগগের বাইরে গুলিতে সাতজন প্রাণ হারান। ওই হামলার পর নেতানিয়াহু ‘শক্ত উত্তর’ দেওয়ার অঙ্গীকার করেছিলেন।

জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের বসতিকে আন্তর্জাতিক আইনের চোখে অবৈধ হিসেবে বিবেচনা করে। জার্মান সরকার ও কয়েকটি পশ্চিমা দেশ আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের জন্য ইসরায়েলের বসতি স্থাপন নীতির সমালোচনা করে।

ইসরায়েলের বসতি স্থাপনের পদক্ষেপের ‘কোনো আইনগত বৈধতা নেই’ এবং এটা ‘আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে একটি স্পষ্ট লঙ্ঘন’—২০১৬ সালে এমন এক প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছিল জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচটি স্থায়ী সদস্যের মধ্যে চারটি—যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, রাশিয়া ও চীন। যুক্তরাষ্ট্র ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিল।

গত মাসে পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে বৈঠকের সময় মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেন, ‘বসতি সম্প্রসারণ’ ও ‘ফাঁড়ির বৈধকরণ’—এমন দুই পদক্ষেপ দ্বি-রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য অর্জনকে কঠিন করে তোলে।

  • সূত্র : ডয়চে ভেলে

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *