উত্তাল ভারত, শিক্ষার্থীদের রাতভর বিক্ষোভ

উত্তাল ভারত, শিক্ষার্থীদের রাতভর বিক্ষোভ

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে উত্তাল হয়ে উঠেছে ভারত। নতুন এই আইনের বিরুদ্ধে হওয়া মিছিল নিয়ন্ত্রণে পুলিশের ভূমিকার প্রতিবাদে রোববার (১৬ ডিসেম্বর) দেশটির শিক্ষার্থী ও অ্যাক্টিভিস্টরা সারারাত বিক্ষোভ করেছে।

দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে পুলিশ প্রবেশ করে শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের মারধর করার প্রতিবাদে প্রায় গোটা দেশেই ছড়িয়ে পড়েছে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ।

দেশটির সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে পুলিশি পদক্ষেপের প্রতিবাদে রবিবার মধ্যরাতে হায়দরাবাদের মওলানা আজাদ উর্দু বিশ্ববিদ্যালয় এবং বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও বিক্ষোভ মিছিল করে। এই আঁচ এসে পড়ে কলকাতাতেও। মধ্যরাতে মিছিল করে ঘটনার প্রতিবাদ করেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। মওলানা আজাদ উর্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও তাঁদের পরীক্ষা স্থগিতের দাবি জানায়।

এছাড়া জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর থেকে আটক শিক্ষার্থীদের মুক্তির দাবিতে, অসংখ্য মানুষ শীতকে উপেক্ষা করে মধ্যরাতেই দিল্লি পুলিশের সদর দফতরের বাইরে জড়ো হন। পুলিশি সদর দফতরের বাইরের মূল রাস্তাটি অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান প্রতিবাদকারীরা।

দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, ভোর সাড়ে তিনটে নাগাদ আটক করা সমস্ত শিক্ষার্থীদের ছেড়ে দেওয়া হয়। এরপরেই দিল্লি পুলিশের সদর দফতরের বাইরের বিক্ষোভকারী জনতাও ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।

এই বিক্ষোভের আঁচ প্রথম পড়ে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে, সেখানে ছাত্ররা মিছিল করলে তাদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বাঁধে। ঘটনায় দশ জন পুলিশ কর্মী এবং প্রায় ৩০ জন পড়ুয়া আহত হয়েছেন বলে খবর। সেই সময়েই পুলিশ ছাত্রদের হোস্টেল খালি করে দেওয়ার কথা বললে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ওই এলাকায় সাময়িকভাবে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়টি ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত বন্ধ রাখার ঘোষণা করা হয়েছে।

এছাড়া নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের (সিএবি) প্রতিবাদে দেশটির বিভিন্ন রাজ্যে বিক্ষোভ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। ট্রেনে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ অর্ধশতাধিক বিক্ষোভকারীকে আটক করেছে। আসাম, ত্রিপুরা, মেঘালয়, মণিপুরের একাধিক জায়গায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। বন্ধ রয়েছে মোবাইল ও ইন্টারনেট পরিষেবা। বিক্ষোভের জেরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন অন্তত ৫ জন।

এমন পরিস্থিতি ভারতের উত্তরপূর্ব রাজ্যগুলিতে ভ্রমণ সতর্কতা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা ও ফ্রান্স।

সূত্র : বিবিসি, এনডিটিভি

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *